Illegal Stone Quarrying: শিল্পের নামে অবৈধ পাথর খাদানের রমরমা বীরভূমে, ধস কাণ্ডে নয়া মোড়

Illegal Stone Quarrying: শিল্পের নামে বীরভূমে অবৈধ পাথর খাদানের রমরমা নিয়ে বিভিন্ন সময় একাধিক অভিযোগ তুলতে দেখা যায়। আর এই সকল অভিযোগের মধ্যেই শুক্রবার যে ঘটনা ঘটে তার সাক্ষী থেকেছে বীরভূমের পাশাপাশি রাজ্য। অবৈধ পাথর খাদানে ধস নেমে প্রাণ হারান ছয় শ্রমিক। হঠাৎ ঘটে যাওয়া এই মর্মান্তিক ঘটনায় গোটা এলাকায় নেমে এসেছে শোকের ছায়া। আর এবার এই ধস কান্ডের নিলো নয়া মোড়।

বীরভূমের যে অবৈধ পাথর খাদানে (Illegal Stone Quarrying) এমন ঘটনাটি ঘটে সেটি নলহাটির বাহাদুরপুর ও ভোলা গ্রামের মাঝে অবস্থিত। ঘটনার দিন যেখানে ধস নামে সেই জায়গায় পাথরে আগে ড্রিল করা হয়েছিল। ঘটনার সময় নিচে ৩০ জন শ্রমিক কাজ করছিলেন। আর এমন পরিস্থিতিতেই আচমকা ড্রিল করা পাথরের অংশ থেকে ধ্বস নামতে শুরু করে। যে ধসে শ্রমিকদের একাংশ চাপা পড়ে যান। তড়িঘড়ি অন্য শ্রমিকদের সহযোগিতায় তাদের উদ্ধার করা হয় এবং রামপুরহাট মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়।

এই দুর্ঘটনায় মারা যান জিয়ারুল শেখ, সামিউল মোল্লা, হজরত আলি, রথো মণ্ডল, আবিদ শেখ ও কাজল লেট। আহত আরো চারজন এবং এদের মধ্যে একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে বর্ধমানে পাঠানো হয়। এক সহকর্মী শ্রমিক জানালেন যে তারা একসঙ্গে কাজ করছিল। হঠাৎ প্রচণ্ড শব্দে ওপরে থেকে পাথর নামতে শুরু করে। চোখের সামনে সবার উপর ভেঙে পড়ে যায়। কয়েকজনকে বের করতে পারলেও বাকিরা চাপা পড়ে যান, ভয়ঙ্কর দৃশ্য। এক প্রশাসনিক আধিকারিক বলেন যে এখন তাদের মূল লক্ষ্য দ্রুত উদ্ধারকাজ সম্পন্ন করা। মৃত ও আহতদের পরিবারকে সবরকম সাহায্য দেওয়া হবে।

বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী ও দমকল এখনও খাদানে উদ্ধারকাজ চালাচ্ছে। জেলা প্রশাসন অবৈধ পাথর খাদান (Illegal Stone Quarrying) মালিক ও কন্ট্রাক্টরের বিরুদ্ধে অবহেলার অভিযোগে তদন্ত শুরু করেছে। মৃতদের পরিবারকে সরকারি ক্ষতিপূরণ দেওয়ার বিষয়ে আলোচনা চলছে। ঘটনার পর থেকে অবৈধ পাথর খাদানের মালিককে খোঁজ চালাতে শুরু করে পুলিশ। তবে এ যাবত ওই অবৈধ খাদানের মালিক সঞ্জীব ঘোষ পলাতক ছিলেন। তবে শনিবার রাতে তাকে গ্রেফতার করা সক্ষম হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে পুলিশ সূত্রে।

আরও পড়ুন: অজয় নদের পাড়ে রহস্যময় ধাতব বস্তু, ব্যাপক চাঞ্চল্য গ্রামবাসীদের মধ্যে

এই দুর্ঘটনা ফের একবার প্রশ্ন তুলছে কয়েকটি বিষয়ে।

  • পাথর খাদানে সুরক্ষা ব্যবস্থা কি যথেষ্ট ছিল?
  • নিয়মিত পরিদর্শন ও লাইসেন্স যাচাই হয় কি না?
  • শ্রমিকদের জন্য অপরিহার্য সেফটি গিয়ার দেওয়া হচ্ছে কি?
  • স্থানীয় প্রশাসনের নজরদারিতে গাফিলতি রয়েছে কি?
  • কিভাবে এতদিন চলছিল ওই অবৈধ খাদানটি?

স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, বহুদিন ধরেই এই অবৈধ পাথর খাদানগুলিতে (Illegal Stone Quarrying) নিরাপত্তা বিধি মানা হচ্ছে না। তাঁদের কথায় অবৈধভাবে খাদান চলছে, অথচ প্রশাসন চুপ। না হলে আজ এই দুর্ঘটনা ঘটত না। এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় চারজন শ্রমিকের প্রাণহানি গোটা অঞ্চলকে নাড়িয়ে দিয়েছে। দুর্গাপুজোর আগে শ্রমিক পরিবারগুলির ঘরে নেমে এসেছে গভীর শোক। পাশাপাশি, খনি নিরাপত্তা নিয়ে প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন উঠেছে।