ইতালির পর স্পেনকে ছাপিয়ে করোনা সংক্রমণে বিশ্ব তালিকায় ৫ নম্বরে ভারত

নিজস্ব প্রতিবেদন : Unlock 1 শুরু হতেই বাড়ছে করোনা সংক্রমণের সংখ্যা। মোট সংক্রমণের সংখ্যা এই মুহূর্তে ২,৪৬ ৬২৮ জন। গত ২৪ ঘন্টায় সংক্রামিত হয়েছে ৯,৯৭১ জন। একদিনে নতুন সংক্রমণের সংখ্যায় এটাই সর্বোচ্চ। বিশ্বে করোনা সংক্রমণের নিরিখে স্পেনকে টপকে ভারতের স্থান এখন পঞ্চম।

ইউরোপের দেশগুলিতে করোনা সংক্রমণের সংখ্যা কিছুটা কমলেও বিশাল জনসংখ্যার দেশ ভারতে দ্রুত হারে কোভিড সংক্রমণের সংখ্যা বাড়ছে। আমেরিকা, ব্রাজিল, রাশিয়া ও ব্রিটেনের পরেই ভারতের স্থান। সম্ভবনা তৈরি হয়েছে, আগষ্টের শেষ করে সংক্রমণের সংখ্যায় এই দেশগুলিকেও টপকে যেতে পারে ভারত।

দুঃশ্চিন্তা বাড়াচ্ছে দেশে মৃতের সংখ্যা নিয়েও। সংখ্যায় কম হলেও বাড়ছে মৃত্যুর হার। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের পরিসংখ্যান অনুযায়ী গত ২৪ ঘন্টায় দেশে মৃত্যু হয়েছে ২৮৭ জনের। দেশে সর্বমোট মৃত্যুর সংখ্যা এখন ৬,৯২৯। মৃত্যু সংখ্যার বিচারে ভারতের মধ্যে মহারাষ্ট্রের স্থান এখন প্রথম। মৃত্যু হয়েছে এখানে ২,৬৬৯ জনের। গুজরাতে ১,২১৯ জনের, দিল্লিতে ৭৬১ জনের, মধ্যপ্রদেশে ৩৩৯ জনের, পশ্চিমবঙ্গে ৩৮৩ জনের, উত্তর প্রদেশে ২৫৭ জনের, তামিলনাড়ুতে ২৫১ জনের, রাজস্থানে ২৩১ জনের এবং তেলেঙ্গানায় ১২৩ জনের। সংখ্যার বিচারে অল্প হলেও মৃত্যুর হার ক্রমান্বয়ে উর্ধ্বমুখী। যা উদ্বেগ বাড়াচ্ছে কেন্দ্র থেকে রাজ্যের প্রশাসনিক মহলে।

মৃত্যুর মতো করোনা সংক্রমণের সংখ্যাতেও মহারাষ্ট্রের স্থান প্রথম। প্রধান হটস্পট মুম্বই সহ মহারাষ্ট্রে সংক্রমণ হয়েছে ৮২,৯৬৮। দ্বিতীয় স্থানে তামিলনাড়ু। সংক্রমণ ৩০ হাজার ১৫২ জন। এরপর ক্রমান্বয়ে রয়েছে দিল্লি ২৭, ৬৫৪ জন, গুজরাত ১৯,৫৯২ জন, রাজস্থান ১০,৩৩১জন, উত্তরপ্রদেশ ৯,৭৩৩ জন, মধ্যপ্রদেশ ৯,২২৮ জন, পশ্চিমবঙ্গ ৭,৭৩৮ জন, কর্ণাটক ৫,২৩১ জন, অন্ধ্রপ্রদেশ ৪,৫১০ জন, বিহার ৪,৯১৫ জন, হরিয়ানা ৩, ৯৫২ জন, তেলেঙ্গানা ৩,৪৯৬ জন, জন্মু-কাশ্মীর ৩,৪৬৭ জন, ওড়িশা ২,৭৮১ জন, পাঞ্জাব ২,৫১৫ জন এবং অসমে ২,৩৯৭ জনের মতো আক্রান্ত হয়েছেন।

রাজ্যগুলির মধ্যে পশ্চিমবঙ্গে একদিকে বিপুল পরিযায়ী শ্রমিকের প্রবেশ অন্যদিকে আমফান ঘূর্ণিঝড়ের কারণে সামাজিক দূরত্ব বিধির নিয়মকানুন মানা না হওয়ায় দ্রুতহারে বেড়েছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। এই মুহূর্তে রাজ্যে মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮ হাজার ১৮৭ জন। রাজ্যের তথ্য অনুযায়ী মৃত্যু হয়েছে ৩২৪ জনের। করোনা আক্রান্ত কিন্তু অন্য অসুস্থতার কারণে মৃত্যু হয়েছে ৭২ জনের।

আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা বাড়লেও ইউরোপ ও আমেরিকার তুলনায় ভারতে কোভিড আক্রান্ত রোগীর সুস্থ হয়ে ওঠার হার আশাজনক। আক্রান্তদের মধ্যে প্রায় অর্ধেকের বেশি মানুষ সুস্থ হয়ে উঠেছেন। সুস্থ হয়ে ওঠার সংখ্যা ১ লক্ষ ১৯ হাজার ২৯৩ জন।

আশা করা হচ্ছে, দেশজুড়ে পরিযায়ী শ্রমিকদের বিভিন্ন রাজ্যে ফেরার সংখ্যা কমলে ও সামাজিক দূরত্ব রক্ষার সচেতনতা বাড়লে করোনা আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা ধীরে ধীরে কমে আসবে।