Kamarpukur-Bishnupur Line: ভারতীয় রেল হল দেশের পরিবহন ব্যবস্থার মেরুদন্ড। অবশেষে যাত্রীদের দীর্ঘ অপেক্ষার অবসান ঘটাতে চলেছে ভারতীয় রেল। কামারপুকুর রেলস্টেশন পুনরুদ্ধারের কাজ শুরু হয়েছে দ্রুতগতিতে। দীর্ঘদিন বন্ধ ছিল এই স্টেশনের কাজ কিন্তু আবারো শুরু হয়েছে। সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, বিষ্ণুপুর থেকে কামারপুকুর পর্যন্ত রেল যোগাযোগ স্থাপন করতেই ভারতীয় রেল এই চরম সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কামারপুকুর বাসিন্দাদের অনেকদিনের স্বপ্ন ছিল এটি, যা বাস্তবের রূপ নিতে চলেছে।
কামারপুকুর নামটি সকলেরই জানা। এটি কোন সাধারণ জায়গা নয়, স্বয়ং শ্রী রামকৃষ্ণ পরমহংসদেবের জন্মস্থান। এই কারণে স্বাভাবিকভাবেই বছরের বেশিরভাগ দিনেই পর্যটকের ভিড় দেখা যায় এখানেই। এতদিন পর্যন্ত রেলপথের অভাবে পর্যটকরা খুব সহজে পৌঁছাতে পারতো না এই জায়গাটিতে। যদি বিষ্ণুপুরের সঙ্গে কামারপুকুরের (অপেক্ষার দিন এখন শেষ, কামারপুকুর-বিষ্ণুপুর (Kamarpukur-Bishnupur Line) জুড়ে দেওয়ার কাজ ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে, বিস্তারিত জানুন এই প্রতিবেদনে।) সরাসরি রেলসংযোগ ঘটে তাহলে পর্যটকদের কাছে সোনায় সোহাগা। ফলে কামারপুকুরের আর্থসামাজিক উন্নতি ঘটেছে খুব সহজেই। রেলপথের সংযোগ ঘটলে শুধু পর্যটক নয়, এলাকার স্থানীয় বাসিন্দাদের যাতায়াত ব্যবস্থা আগের থেকে অনেক বেশি সহজ হবে। বিষ্ণুপুর, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া দীঘা ইত্যাদি জায়গায় ভ্রমণ করতে পারবেন পর্যটকরা।
এলাকার মানুষেরা রেলপথ নির্মাণ আবার শুরু হওয়ার কারণে বেশ খুশি। তাদের মধ্যে রীতিমতো উত্তেজনা দেখা গেছে। কামারপুকুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান রাজদীপ দে বলেছেন, এখানকার মানুষের দীর্ঘদিনের স্বপ্ন ছিল এই রেলপথ। এখানকার বেশিরভাগ মানুষ হলো কৃষিজীবী। কামারপুকুর-বিষ্ণুপুর (Kamarpukur-Bishnupur Line) রেলপথ চালু হলে কৃষকদের উৎপাদিত ফসল খুব সহজেই শহরে পাঠানো যাবে। এছাড়াও পর্যটকরা যত বেশি পরিমাণে এখানে আসবে তত অর্থনৈতিক দিক থেকে লাভবান হবে এখানকার মানুষ।
আরও পড়ুন: সরকার উদ্যোগী হয়েছে ভূগর্ভস্থ কয়লা খননকার্যে, কোথা থেকে শুরু হবে কাজ
এলাকার বাসিন্দা প্রসেনজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, বিষ্ণুপুর থেকে ময়নাপুর পর্যন্ত ইতিমধ্যে ট্রেন পরিষেবা শুরু হয়ে গেছে। পাশাপাশি দ্রুতগতিতে এগোচ্ছে বড় গোপীনাথপুর থেকে জয়রামবাটি পর্যন্ত রেললাইন পাতার কাজ। কাজ এভাবেই এগোতে থাকলে খুব শীঘ্রই বিষ্ণুপুর থেকে কামারপুকুর হয়ে জয়রামবাটি পর্যন্ত রেল চলাচল সম্ভব হবে। এরফলে কম খরচে এবং কম সময়ে শহরের যেকোন প্রান্তে পৌঁছানো যাবে। তারকেশ্বর থেকে আরামবাগ পর্যন্ত রেলপথের শুভ সূচনা করেছিলেন মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি ২০১২ সালে এই রেলপথের সূচনা করেছে। তবে ভারতীয় রেল পরিকল্পনা করেছে যে এই রেলপথকে বিষ্ণুপুর পর্যন্ত প্রসারণ করা হবে। এই রেলপথ নির্মাণের ক্ষেত্রে জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে গোঘাট এবং কামারপুকুরের মাঝে ভাবাদিঘির উপর। এই কারণেই এই রেলপথ নির্মাণের কাজ স্থগিত ছিল অনেকদিন।
রেলমন্ত্রক পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে যে, কামারপুকুর রেল স্টেশনকে বিষ্ণুপুরের (কামারপুকুর-বিষ্ণুপুর (Kamarpukur-Bishnupur Line)) সঙ্গে যুক্ত করার আবারও পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। স্টেশনটির পরিকাঠামোগত সংস্কার চলছে। যেখানে নতুন যাত্রী প্রতীক্ষালয়, টিকিট কাউন্টার এবং স্টেশন বিল্ডিং সংস্কারের কাজও জোর কদমে এগোচ্ছে। যদি সবকিছু পরিকল্পনামাফিক চলে তাহলে খুব শীঘ্রই বিষ্ণুপুর থেকে জয়রামবাটী হয়ে কামারপুকুর পর্যন্ত রেল চলাচল শুরু হবে। এছাড়াও ভাবাদিঘি সমস্যার সমাধান হয়ে যায় তবে কামারপুকুর থেকে সরাসরি হাওড়া পর্যন্ত ট্রেন চালু হওয়ার সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে। কামারপুকুরের মানুষ এবং পর্যটকদের জন্য এটি একটি বড় সুখবর হতে চলেছে। কারণ এতে এলাকারও সার্বিক উন্নয়ন ঘটবে।