দীর্ঘ প্রতীক্ষা শেষে কন্যাকুমারী থেকে কাশ্মীর ট্রেন পরিষেবা, চালু এই মাসে

দেশের সবথেকে বৃহৎ ও জনপ্রিয় পরিবহন হলো ট্রেন (Indian Railways)। এই পরিবহন সব দিক দিয়েই সাধারণ মানুষের জীবনকে সহজ করে দেয়। আর যাত্রীদের কথা মাথায় রেখে দেশজুড়ে বিভিন্ন জায়গায় শুরু হয়েছে রেলপথ সম্প্রসারণের কাজ। এবার রেলপথের মাধ্যমে সমগ্ৰ কাশ্মীরকে কন্যাকুমারী (Kanyakumari to kashmir) পর্যন্ত সংযুক্ত করার কাজ সম্পন্ন হতে চলেছে খুব শীঘ্রই।

ভারতের ইতিহাস ঘাঁটলে জানা যায় যে, ১৯০৫ সালে কাশ্মীরের তৎকালীন মহারাজা মুঘল রোডের মাধ্যমে শ্রীনগর থেকে জম্মুকে সংযুক্ত করার জন্য একটি রেললাইন স্থাপনের কথা ঘোষণা করেছিলেন। কিন্তু কাজ শুরু হবার পর প্রকল্পটি অজানা কোনো কারণে আটকে যায়। এমতাবস্থায়, ২,৫০০ কোটি টাকা ব্যয়ে ১৯৯৫ সালের মার্চ মাসে আবার কাজ শুরু করা হয়, কিন্তু সেটিও বন্ধ হয়। এরপরে, ২০০২ সালে বাজপেয়ী সরকার এটিকে একটি জাতীয় প্রকল্প হিসাবে ঘোষণা করেন এবং তখন এর খরচ গিয়ে দাঁড়ায় ৬,০০০ কোটি টাকায়। আর বর্তমানে এই প্রকল্প বাস্তবায়িত করতে খরচ হতে চলেছে ২৭,৯৪৯ কোটি টাকা।

জানা যায় এই রেললাইন স্থাপনের কাজটি ছিল খুবই কঠিন। যদিও, বর্তমানে সেই সকল প্রতিবন্ধকতা কাটিয়ে এখন এই রেলপথ তৈরির কাজ সমাপ্তির পথে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই রেলপথ চালু হলে কাশ্মীরের অর্থনীতিতে বড় পরিবর্তন আসতে পারে। এর পাশাপাশি পর্যটকরা এবার ট্রেনে করেই পৌঁছে যেতে পারেন কাশ্মীর। আর কাশ্মীরে উৎপাদিত বিভিন্ন পণ্য সহজেই পৌঁছে যাবে দেশের বাকি অংশে। সর্বোপরি, এর রেল চলাচলের ফলে দক্ষিণ ভারত সরাসরি যুক্ত হবে কাশ্মীরের সঙ্গে।

বিভিন্ন মিডিয়া রিপোর্ট অনুসারে জানা গিয়েছে যে, চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যেই নাকি কন্যাকুমারী পর্যন্ত পুরো কাশ্মীরকে রেলপথে সংযুক্ত করার কাজ সম্পন্ন হবে। ইতিমধ্যেই উধমপুর-শ্রীনগর-বারামুল্লা রেল সংযোগের ৯০ শতাংশ কাজও শেষ হয়েছে। পাশাপাশি, এই সংযোগ স্থাপনের জন্য টানেলগুলির তৈরি হওয়া প্রায় শেষের পথে।

জানা গিয়েছে, কাটরা-বানিহালের ১১১ কিলোমিটার দীর্ঘ রেল সেকশন তৈরি হচ্ছে। আর এটাই ছিল এই রুটের সবচেয়ে চ্যালেঞ্জিং অংশ। কারণ এই লাইনের ৯৭.৩৪ কিমি অংশ টানেলের মধ্য দিয়ে গিয়েছে। এর মধ্যে জম্মু থেকে বারামুল্লা পর্যন্ত পাহাড়, ঢাল এবং ভূমিকম্পপ্রবণের মত সংবেদনশীল এলাকাও রয়েছে। এই কারণে, সেখানে ২৭ টি প্রধান সেতু ও ১০ টি ছোট সেতু নির্মাণ করা প্রয়োজন। আর এর মধ্যে ২১টি সেতুর কাজ শেষ হয়ে গিয়েছে। আর বাকি গুলিও আর কয়েক দিনের মধ্যেই সম্পন্ন হতে চলেছে।