রোজের স্কুল,কলেজ,অফিস যাত্রীদের যাতায়াতের অন্যতম ভরসাযোগ্য পরিবহণ ব্যবস্থা হল রেল। প্রতিদিন হাজার হাজার যাত্রীদের পা পড়ে এই রেল স্টেশনে। আর রেল স্টেশনে গেলেই বারবার কানে ভেসে আসে কিছু ঘোষণা। ঘোষণার শুরুতেই যাত্রীদের মনোযোগ কারতে বলতে শোনা যায় যাত্রীগণ কৃপেয়া ধ্যায়ান দে। আর তারপর কখনো বলতে শোনা যায় কোন প্লাটফর্মে নির্দিষ্ট গন্তব্যের ট্রেনটি আসবে এবং ট্রেনটি কত নম্বরের সেকথা, আবার কখনো যাত্রার অন্তিম স্টেশনে পৌছালে সেকথা কানে আসে। যাত্রীদের বোঝার সুবিধার্থে বাংলা, হিন্দি, ইংরেজি, মূলত এই তিনটি ভাষায় ঘোষণা করা হয়ে থাকে রেলের তরফে।
স্টেশনে গেলে বহুবার তো এই কথাগুলো শুনেছেন, কিন্তু কোনোদিন জানতে ইচ্ছা করেছে এই গলাটি কার?
একটি প্রতিবেদন সূত্রে জানা গিয়েছে, রেলওয়ের এক মহিলা কর্মী এই ঘোষণা করে থাকেন। এই গলাটি তারই। তার নাম সরলা চৌধুরী। বহুবছর ধরে ভারতীয় রেলে ঘোষণার কাজের সঙ্গে যুক্ত এই মহিলা। পরের দিকে যান্ত্রিক প্রযুক্তির সাহায্যে তার গলাকে দেশের প্রতিটি স্টেশনে ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে ভারতীয় রেলের তরফে।
সালটা তখন ১৯৮২। সেসময় রেলে কর্মী নিয়োগ চলছিল। তাই সরকারি চাকরি পাওয়ার আশায় সেই প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় বসেছিলেন সরলা চৌধুরী। জানা যায়, ভারতীয় রেলের তরফে স্টেশনে ট্রেনের ঘোষণা করার কাজের জন্যই কর্মী নিয়োগ চলছিল সেসময়। তিনি সেন্ট্রাল রেলওয়েতে ঘোষক পদে আবেদন করেছিলেন। হাজার হাজার চাকরি প্রার্থীদের ভিড়ে পরীক্ষা চলাকালীন সরলার সরল শান্ত গলাই মন কেরেছিল পরীক্ষকের। আর তারপরই রেলে তার চাকরি পাকা হয়ে যায়।
তারপরই ভারতীয় রেলের কর্মী হিসেবে নিযুক্ত হন তিনি। রেল স্টেশনে ট্রেনের যাওয়া-আসা থেকে শুরু করে যাবতীয় সব রকমের ঘোষণার দায়িত্ব পালন করতেন সরলা। সুত্র মারফত জানা গিয়েছে, কর্মজীবনের প্রথম দিকে তিনি মহারাষ্ট্রের পারলি ভাজিনাথ রেল স্টেশনে কর্মরত ছিলেন। রেল কর্তৃপক্ষের তার শান্ত স্বাভাবিক কণ্ঠ এতটাই মন কেরেছিল যে ১৯৮৬ সালে সরলার কণ্ঠকে কম্পিউটার প্রযুক্তির মাধ্যমে রেকর্ড করে দেশের সমস্ত স্টেশন ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। তারপর থেকেই বছরের পর বছর ধরে উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহারেই তার কন্ঠে মুখরিত হয় গোটা দেশের রেল স্টেশন চত্বর।