ঠান্ডা মাথায় অপারেশন! চিনে নিন মালদার স্কুলের বন্দুকবাজের উপর ঝাঁপিয়ে পড়া ‘হিরো’কে

নিজস্ব প্রতিবেদন : মার্কিন মুলুকের স্কুলে বন্দুকবাজদের অতর্কিত হামলার খবর আমরা সংবাদ মাধ্যমে বিভিন্ন সময় পড়ে থাকি। কিন্তু সেই রকম ঘটনা যে বাংলাতেও ঘটবে তা কেউ ভেবে উঠতেই পারেন না! ভেবে উঠতে না পারলেও সেই রকমই একটি ঘটনা ঘটে গেল বুধবার দুপুর বেলা। মালদার একটি স্কুলে (Malda School) বন্দুক এবং পেট্রোল বোমা হাতে হঠাৎ ক্লাসরুমে ঢুকে পড়েন এক ব্যক্তি। তারপর কি কি ঘটল মোটামুটি প্রত্যেকেই জানেন।

স্কুলে পড়ুয়াদের সামনেই ওই ব্যক্তির বন্দুক উঁচিয়ে শাসক দল তৃণমূলের বিরুদ্ধে একের পর এক অভিযোগ তুলে যাচ্ছিলেন। তবে বুধবারের এই ঘটনায় পুলিশের তরফ থেকে যেভাবে ঠান্ডা মাথায় অপারেশন চালানো হয় তা নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয়। কোনরকম ক্ষয়ক্ষতি ছাড়াই ওই বন্দুকবাজকে কাবু করতে সক্ষম হয় পুলিশ।

স্কুলের মধ্যে বন্দুক হাতে ঢুকে পড়া ওই বন্দুকবাজকে কাবু করতে সাংবাদিক সেজে পুলিশ দীর্ঘক্ষণ ধরে তার সঙ্গে কথা বলেন। এরই মধ্যে জীবন হাতে নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়তে দেখা যায় এক যুবককে। যে যুবকের তৎপরতাতেই হয়তো বড় ক্ষতির হাত থেকে বেঁচে যায় মালদার ওই স্কুলটি, ক্লাসের খুদেরা সুরক্ষিতভাবে ফিরে যান নিজের নিজের বাড়ি।

তবে প্রশ্ন হল এইভাবে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বন্দুকবাজকে কাবু করার জন্য যে যুবক ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন তিনি কে? বন্দুকবাজের হাত থেকে শত শত পড়ুয়াকে রক্ষা করে তিনি রাতারাতি হিরো হয়ে উঠেছেন। তিনি আসলে অন্য কেউ নন, তিনি উচ্চপদস্থ একজন পুলিশ অফিসার। তিনি হলেন ডিএসপি আজাহারউদ্দিন খান।

স্কুলে ঢুকে পড়া ওই বন্দুকবাজকে কাবু করার জন্য সাদা পোশাকে অন্যান্য পুলিশদের পাশাপাশি আকাশি রংয়ের টি-শার্ট পরে হাজির হন আজাহারউদ্দিন খান। তিনি ওই বন্দুকবাজের সঙ্গে সাংবাদিকের মতই কথা বলতে শুরু করেন। কথা বলতে বলতে যখন ওই বন্দুকবাজ সামান্য অন্যমনস্ক হন তখনই আজাহারউদ্দিন খান তার ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েন। নিজের প্রাণের ঝুঁকি ছাড়াও এই ধরনের পদক্ষেপ নেওয়ার ক্ষেত্রে ওই ক্লাসে থাকা পড়ুয়াদের জীবনের ঝুঁকিও ছিল যথেষ্ট। সামান্য ভুল অথবা অপারেশন সফল নাহলেই বড় কোন ঘটনা ঘটে যেতে পারতো। তবে ডিএসপি আজাহারউদ্দিন খান বিচক্ষণতার সঙ্গে পুরো বিষয়টি সামাল দেন।

অপারেশন সফল করার পর আজাহারউদ্দিন খান জানিয়েছেন, “এতগুলো পড়ুয়ার প্রাণ বন্দুকের নলের সামনে দাঁড়িয়ে ছিল। বিষয়টি কঠিন হলেও ঈশ্বর ও উপরওয়ালার আশীর্বাদে সফল হয়েছে।”