এত ডেকেও সাড়া মিলল না চন্দ্রযান-৩ এর! ঠিক একই পরিণতি হয়েছিল এই ৭ মহাকাশযানের

নিজস্ব প্রতিবেদন : অনেক আশা ছিল তবে সেই আশা শেষ পর্যন্ত পূরণ হলো না। এত ডাকাডাকি সত্বেও সারাদিনও না চন্দ্রযান-৩ (Chandrayaan 3) এর ল্যান্ডার বিক্রম (Lander Vikram) এবং রোভার প্রজ্ঞান (Rover Pragyan)। তবে তারা সাড়া না দিলেও তারা তাদের কাজ আগেই সেরে ফেলেছিল। যদি পুনরায় জেগে উঠত তাহলে ইসরো (ISRO) ডবল প্রফিটের মুখ দেখলেও দেখতে পারতো। তবে চন্দ্রযান ৩ এই প্রথম এইভাবে চাঁদের মাটিতে চিরঘুমের দেশে পাড়ি দিল এমন নয়। এর আগেও সাত সাতটি মহাকাশযান এইভাবে চাঁদের মাটিতে চিরঘুমে পাড়ি দিয়েছে।

১) ১৯৬৬ সালে চাঁদের মাটিতে প্রথম মহাকাশযান হিসাবে সফল অবতরণ করেছিল রাশিয়ার লুনা-৯ (Luna 9)। রাশিয়ার এই মহাকাশযান চাঁদের মাটিতে সফলভাবে অবতরণ করার পর বেশ কিছুদিন ধরে সেখানে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালায় এবং গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন তথ্য তারা পৃথিবীতে প্রেরণ করে। পরে নির্দিষ্ট সময় পর ওই মহাকাশযান চাঁদের মাটিতে চিরঘুমে আচ্ছন্ন হয়।

২) ১৯৬৯ সালে চাঁদের মাটিতে সফ্ট ল্যান্ডিং করেছিল সার্ভিয়ার ১। আমেরিকার তরফ থেকে পাঠানো এই মহাকাশযানটি চাঁদের মাটিতে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে বিভিন্ন তথ্য পৃথিবীতে প্রেরণ করেছিল এবং সেই তথ্য থেকেই পরবর্তীকালে আমেরিকা শুরু করে অ্যাপেলো অভিযান। চাঁদের মাটিতে নিজের কাজ করার পর সার্ভিয়ার ১ চিরঘুমে আচ্ছন্ন হয়ে পড়ে।

৩) ১৯৭০ সালে চাঁদের মাটিতে অবতরণ করেছিল লুনোখোড ১। এটি ছিল সোভিয়েত ইউনিয়নের যুগান্তকারী একটি আবিষ্কার। কেননা এই মহাকাশযান ছিল প্রথম রোবোটিক যন্ত্র যা রিমোট দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হত। এই যন্ত্র চাঁদের মাটিতে অবাধ বিচরণ করেছিল। এই যন্ত্র তৈরি করা হয়েছিল চাঁদের মাটিতে তিন চন্দ্র দিন কাজ করার জন্য। তবে সবাইকে অবাক করে এই যন্ত্রটি ১১ চন্দ্র দিন চাঁদের মাটিতে কাজ করেছিল। তবে পরে ১০.৫৪ কিলোমিটার চাঁদের মাটিতে ঘোরাফেরা করার পর এই যন্ত্র চিরঘুমে চলে যায়।

৪) লুনোখোড ২ ১৯৭৩ সালে সোভিয়েত ইউনিয়ন চাঁদে পাঠিয়েছিল। এরপর চাঁদের মাটিতে বেশ কিছুদিন ধরে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালানোর পর সেখানেই সে চিরঘুমে চলে যায়।

৫) ইউটু রোভার ছিল চীনের মহাকাশযান চ্যাংই ৩ মিশনের অংশ। এই অভিযান হয়েছিল ২০১৩ সালে। নানান বৈজ্ঞানিক তথ্য সংগ্রহ করার পর এটি চাঁদের মাটিতে চিরঘুমে চলে যায়।

৬) ইসরোর মহাকাশযান চন্দ্রযান ২ ২০১৯ সালে চাঁদের মাটিতে অবতরণ করতে ব্যর্থ হয় অবতরণ করা ঠিক আগের মুহূর্তে গতির হেরফের হওয়ায়। দুর্ঘটনার পরই চিরঘুমে সেখানে থেকে যায় এর ল্যান্ডার বিক্রম এবং রোভার প্রজ্ঞান।

৭) লুনা ২৫ (Luna 25) চন্দ্রযান ৩ অবতরণ করা ঠিক আগেই চাঁদের মাটিতে সফ্ট ল্যান্ডিং করতে ব্যর্থ হয়। রাশিয়ার এই মহাকাশযান ধ্বংস হওয়ার পর চাঁদেই চিরঘুমে চলে গিয়েছে। এছাড়াও আরও অনেক মহাকাশযান রয়েছে যেগুলি চাঁদের মাটিতে কিছুদিন কাজ করার পরেই সেখানে চিরঘুমে চলে যায়।