যেখানে ল্যান্ডিং করাতে হিমশিম খেতে হয়, সেই চাঁদের মাটিতে গাড়ি চালিয়েছেন এই ব্যক্তি

নিজস্ব প্রতিবেদন : ভারতের চন্দ্রযান ৩ (Chandrayaan 3) উৎক্ষেপণ থেকে শুরু করে চাঁদের মাটিতে সফ্ট ল্যান্ডিং, সব ক্ষেত্রেই নতুন করে চাঁদ নিয়ে ভারত এবং বিশ্ব নতুন স্বপ্ন দেখছে। এই চন্দ্রাভিযানের কারণে চাঁদ নিয়ে আরও নতুন নতুন দিগন্ত খুলে যাবে বলেই আশা বিজ্ঞানীদের। চাঁদের মাটিতে চন্দ্রযান অবতরণ করানো খুব সহজ কাজ নয়। সে কারণেই ভারতীয় মহাকাশ গবেষণাগারকে (ISRO) পর পর দু’বার ব্যর্থতার মুখ দেখতে হয়েছিল। তবে এমন দুর্গম পরিস্থিতি এবং দুর্গম জায়গাতেই এক ব্যক্তি গাড়ি চালিয়ে এসেছেন। ভাবতে অবাক লাগলেও কিন্তু এমনটাই ঘটেছে।

আজ থেকে ৫০ বছরের বেশি আগে চাঁদের মাটিতে এমন কৃতিত্ব করে দেখিয়েছিলেন ডেভিড র‍্যান্ডলফ স্কট (David Randolph Scott)। তিনি ছিলেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একজন অবসরপ্রাপ্ত পাইলট এবং নাসার (NASA) নভোচারী। বিশ্বের সপ্তম ব্যক্তি হিসেবে তিনি পৃথিবী থেকে ৩ লক্ষ ৮৪ হাজার ৪০০ কিলোমিটার দূরে থাকা চাঁদের মাটিতে পা রেখেছিলেন। চাঁদের মাটিতে তিনি ১৮ ঘন্টা ৩৭ মিনিট ছিলেন। সেখানেই তিনি আস্ত গাড়ি চালিয়ে অসাধ্য সাধন করেছিলেন।

১৯৭১ সালে নাসার অ্যাপেলো ১৫ অভিযানের সদস্য ছিলেন ডেবিড স্কট। তবে ডেভিড স্কট চাঁদের মাটিতে যে গাড়িটি চালিয়েছিলেন সেটি কোন সাধারণ গাড়ি ছিল না। এটি ছিল একটি লুনার রোভিং ভেহিকেল। বিশ্বের প্রথম ব্যক্তি হিসাবে তিনিই লনার সার্ফেসে যানবাহন চালিয়েছিলেন। চাঁদের মাটিতে যানবাহন চালানোর পাশাপাশি তিনি চাঁদের থেকে ফেরার পথে পকেটে নিয়ে এসেছিলেন একটি পাথর।

জানা যায়, তিনি যখন চাঁদে গিয়েছিলেন সেই সময় হঠাৎ Rhysiling নামে চাঁদের একটি গর্তের পশ্চিমে তিনি রোভার থেকে নেমে পড়েন। তার এইভাবে হঠাৎ নেমে পড়া ঝুঁকিপূর্ণ ছিল। কিন্তু তিনি সেই ঝুঁকি নিয়ে নেমে পড়েন এবং তারপর সেখান থেকে একটি পাথর কুড়িয়ে নেন। তিনি জানতেন এই পাথর বা শিলা বিজ্ঞানীদের কাছে গবেষণার জন্য অনেক বড় সম্পদ। তাই জীবনের ঝুঁকি নিয়েই তাকে সেই শিলা সংগ্রহ করতে দেখা গিয়েছিল।

https://youtu.be/Oo8TaPVsn9Y?si=RZdcbowqXwZzVzsg

ডেভিড স্কট চাঁদের মাটিতে যে গাড়িটি চালিয়েছিলেন সেটি ছিল টেকসই ব্যাটারি চালিত একটি গাড়ি। ওই গাড়িটি ছিল ফোল্ডিং অর্থাৎ চাঁদে নিয়ে যাওয়ার জন্য যাতে সুবিধা হয়। এই গাড়িতে ছিল বোয়িং এবং জেনারেল মোটর। এই গাড়ির প্রতিটি চাকায় ছিল ২০০ ওয়াট ক্ষমতা সম্পন্ন ইলেকট্রিক মোটর। ওই গাড়িটি প্রতি ঘন্টায় ১০ থেকে ২০ কিলোমিটার গতি বেগে দৌড়াতে সক্ষম ছিল। ১৯৭১ সালের ৩১ জুলাই নাসার এই অভিযান শুরু হওয়ার পর চাঁদের জমি থেকে বহু মূল্যবান সব সম্পদ সংগ্রহ করে ৭ আগস্ট সেটি পৃথিবীতে ফিরে আসে।