Werewolf Syndrome: হঠাৎ করে তার মুখ দেখলে মনেই হবে না সে মানুষ, অনেকে ভয়ও পেয়ে যায়। কিন্তু তিনি বিরল রোগের শিকার। মুখের প্রতি বর্গ সেন্টিমিটারে রয়েছে ২০১.৭২টি লোম। মুখের ৯৫ শতাংশেরও বেশি লোমে ঢাকা। জীবনে ছোট থেকে নানারকম চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়ে আসছে ললিত পাতিদার। বিশেষজ্ঞরা অবশ্যই স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে যে তিনি এক বিরল রোগে আক্রান্ত। লোমশ মুখের পুরুষ অর্থাৎ ললিতের বর্তমান বয়স হলো ১৮ বছর। কিন্তু এই বিরল রোগ তাকে এক বিশেষ সম্মানে অভিভূত করেছে। এই রোগের সৌজন্যেই কিশোর ললিত পাতিদারের নাম উঠল গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে। বিরল এই রোগের নাম হাইপারট্রাইকোসিস, যা সাধারণত ‘ওয়্যারউলফ সিন্ড্রোম’ (Werewolf Syndrome) নামে পরিচিত।
লোমশ মুখের পুরুষ অর্থাৎ ললিতের নাম জ্বলজ্বল করছে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস-এ। এদের দেওয়া তথ্য অনুসারে, মধ্যযুগ থেকে সারাবিশ্বে এই ধরনের রোগের উদাহরণ পাওয়া গেছে মোট ৫০ টি। ললিতের স্কুলজীবন মোটেই ততটা ভালো কাটেনি। তার চেহারার অমন অবস্থা দেখে প্রথমদিকে সহপাঠীরা সত্যি ভয় পেয়ে যেত। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সহপাঠীরা তাঁকে চিনতে শুরু করে। তারাও বুঝতে পারে যে ললিত আর পাঁচটা সাধারণ মানুষের মতোই বাঁচতে পারে। ললিত বলেন, সহপাঠীরা প্রথমে ভয় পেলেও পরে তারা স্বাভাবিক আচরণ করত। শুধু বাইরের চেহারায় পার্থক্য আছে, ভেতরের মানুষরা সবার মতই সাধারণ।
তার সহপাঠীরা বর্তমানে ভালো ব্যবহার করে ললিতের সঙ্গে। মাঝে মাঝে কিছু খারাপ মন্তব্য শুনতে হয় ললিতকে। লোমশ মুখের এই পুরুষ কখনোই নেতিবাচক কোন মন্তব্য কিংবা ইঙ্গিতকে পাত্তা দেয়নি। যারা তার মুখের এই লোম দেখে সমালোচনা করে তাদের উদ্দেশ্যে বলেছেন, নিজের চেহারা নিয়ে তিনি এতোটুকু লজ্জিত নয়। তিনি যেমন আছে তেমনভাবেই জীবন কাটাতে চায়। চেহারাতে কোনরকম পরিবর্তন তিনি চান না।
আরও পড়ুন: ঝরঝরে ইংরেজি বলছেন এই ট্রাক্টর চালক! আবার শিক্ষকতাও করছেন সমানতালে
ললিত সম্প্রতি গিয়েছিলেন ইতালির মিলানে এবং সেখানকার একটি জনপ্রিয় টেলিভিশন শো ‘লো শো দেই রেকর্ড’-এ তিনি অংশগ্রহণ করেছিলেন। সেই শো এর বিশেষজ্ঞরা তাঁর মুখের লোমের ঘনত্ব মাপার জন্য ছোট অংশ শেভ করে পরীক্ষা করেন। শেষ পর্যন্ত লোমশ মুখের পুরুষ (Werewolf Syndrome) অর্থাৎ ললিত জানতে পারেন যে রেকর্ডটি আনুষ্ঠানিকভাবে তাঁর নামে নথিভুক্ত হয়েছে। তিনি রীতিমতো আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েছিলেন।
সমাজ মাধ্যমে তিনি কিন্তু বেশ চর্চিত। ললিত পাতিদার একজন রেকর্ডধারীও বটে। জানলে অবাক হয়ে যাবেন যে, ইনস্টাগ্রামে তাঁর ২,৬৫,০০০-এরও বেশি ফলোয়ার এবং ইউটিউবে ১,০৮,০০০ সাবস্ক্রাইবার রয়েছে। তাকে দেখতে আর পাঁচটা মানুষের থেকে সম্পূর্ণ আলাদা হলেও তিনি সর্বদাই পেয়ে এসেছেন পরিবারের সমর্থন। সবাই তাকে যথেষ্ট ভালবাসা এবং স্নেহ দিয়েছে। ভবিষ্যতে তিনি বিশ্ব ভ্রমণের স্বপ্নে বিভোর।