লক্ষ্মীরতনের মন্ত্রিত্ব ও সভাপতি পদ ছাড়তেই চরম জল্পনা বঙ্গ রাজনীতিতে

নিজস্ব প্রতিবেদন : বেশ কয়েকদিন ধরেই রাজনীতির আঙিনায় সেই ভাবে লক্ষ্য করা যাচ্ছিল না মন্ত্রী, বিধায়ক ও জেলা সভাপতি লক্ষ্মীরতন শুক্লাকে। এরপরেই মঙ্গলবার হঠাৎ তৃণমূল কংগ্রেসকে ধাক্কা দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং রাজ্যপালকে চিঠি দেন। চিঠিতে উল্লেখ করেন মন্ত্রিত্ব ছেড়ে দেওয়ার। কিছুক্ষণের মধ্যেই জানা যায় মন্ত্রিত্ব ছাড়াও তিনি হাওড়া জেলার (সদর) তৃণমূল জেলা সভাপতির পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন। আর এরপরেই নতুন করে জল্পনা শুরু এবং রাজনীতিতে।

হঠাৎ লক্ষ্মীরতন শুক্লার এমন সিদ্ধান্তের কারণ কি?

সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, হাওড়া জেলায় দুই তৃণমূল নেতা অরূপ রায় এবং রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের মধ্যে মতবিরোধের কারণে নাকি তিনি কাজ করতে পারছিলেন না। সম্ভবত এই কারণেই তিনি ইস্তাফা দিয়ে থাকতে পারেন।

মন্ত্রিত্ব এবং জেলা সভাপতির পদ থেকে ইস্তফা দিলেও ভারতের প্রাক্তন ক্রিকেটার লক্ষ্মীরতন শুক্লা এখনো বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দেন নি। এবিষয়ে তিনি জানিয়েছেন, এলাকার মানুষ তাকে নির্বাচিত করেছেন। কিন্তু পুরো বোর্ড না থাকায় কাজ করতে অসুবিধে হচ্ছে। মানুষ অসুবিধায় পড়ছেন এবং তাতে তার খারাপ লাগছে। যে কারণেই তিনি মন্ত্রিত্ব এবং জেলা সভাপতির পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন।

অন্যদিকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় লক্ষ্মীরতন শুক্লা সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে বলেছেন, “লক্ষ্মী খুব ভালো ছেলে। কোন ভুল বোঝাবুঝির নেই। সে বলেছে খেলাধুলায় আরও বেশি মন দিতে চায়। যে কারণে সমস্ত রকম দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি চেয়েছে। আমি চাই সে ভালো করে খেলাধুলো করুক। খেলার জগতে ফিরতে চাই এ তো ভালো সিদ্ধান্ত।”

কিন্তু রাজনৈতিক মহলে প্রশ্ন উঠেছে এই সকল উত্তরই কি লক্ষ্মীরতন শুক্লার এমন সিদ্ধান্তের মূল কারণ? জল্পনা তো অবশ্যই রয়েছে। রাজনৈতিক মহলের বিশেষজ্ঞরা করছেন, একুশের বিধানসভা নির্বাচন রাজ্যের শাসক দল তৃণমূলের কাছে এক প্রকার অগ্নিপরীক্ষা। কারণ এই সময়েই তৃণমূলের ঘাড়ে নিঃশ্বাস ফেলছে গেরুয়া শিবির। আর যখন তৃণমূলের একাধিক নেতা নেত্রী, বিধায়ক এবং মন্ত্রী দল ছেড়ে গেরুয়া শিবিরের নাম লেখাচ্ছেন ঠিক সেই সময়ই কেন লক্ষ্মীরতন শুক্লাকে এমন চরম সিদ্ধান্ত নিতে হলো!

অন্যদিকে লক্ষ্মীরতন শুক্লার এমন সিদ্ধান্তকে সমর্থন করলেও চরম ক্ষুব্ধ বালির বিধায়ক বৈশালী ডালমিয়া। তিনি অভিযোগ করেছেন লক্ষ্মীরতন শুক্লাকে কাজ করতে দেওয়া হতো না। পাশাপাশি তার এটা অভিযোগ, তৃণমূলের লোকেরাই লক্ষীর কাজের বিরোধিতা করেছেন। এখানেই শেষ নয় তিনি এটাও দাবি করেছেন, ‘উইপোকার মত ভিতরে ভিতরে তৃণমূলের ক্ষতি করছে।

অন্যদিকে আবার লক্ষ্মীরতন শুক্লার এমন সিদ্ধান্ত নিয়ে একেবারে ভিন্ন প্রতিক্রিয়া পাওয়া গেছে বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের থেকে। তিনি মঙ্গলবার মুরারইয়ে জনসভা শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বলেন, “গ্রামে দেখবেন বড় বড় চাষির ঘরের মাঝে মাঝে ভেড়ার পাল যায়। আবার দেখবেন পরব এলে আস্তে আস্তে ভেড়া কমে যায়। কি হয়ে যায় মালিকের।”