নজরে সুপার সাইক্লোন আমফানের আগের ৫ টি ঘূর্ণিঝড়

নিজস্ব প্রতিবেদন : এখন এই করোনার আবহের মাঝেই চলে এসেছে ঘূর্ণিঝড় আমফান। ইতিমধ্যে ক্ষয়ক্ষতি হয়ে গেছে দুই ২৪ পরগণা, পূর্ব মেদিনীপুর, হাওড়া, হুগলি, কলকাতাতে। কয়েক ঘন্টায় লন্ডভন্ড হয়ে গেছে কলকাতা, বিপর্যস্ত দক্ষিণবঙ্গ।মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য অনুযায়ী, “দুই ২৪ পরগণাতে বেশি ক্ষতি।” অন্তত দশ থেকে বারো জনের মৃত্যু হয়ে গেছে ইতিমধ্যে।

মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেছেন, “এতটা ক্ষয়ক্ষতি হবে ভাবতে পারিনি।” সত্যি এতটাই দাপুটে এই ঘূর্ণিঝড় যে এর শক্তি আগে থেকে আন্দাজ করাও যায়নি। আসলে বঙ্গোপসাগর বা আরব সাগরে প্রতিবছর যত ঘূর্ণিঝড় তৈরি হয় তার মধ্যে একটি ঝড় হয়ত আমফানের মতো শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়। তাও আবার ১০ বছর অন্তর অন্তর এরকম একটি শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ে তৈরি হয়।

২০০৯ সালে আয়লার পর ২০১৯ সালে আসে বুলবুল অথবা ফনী। এরপর আরও দশ বছরের ব্যবধান থাকা উচিত ছিলো। কিন্তু মাত্র ৬ মাসের পার্থক্যেই চলে এলো আমফান তার প্রবল পরাক্রম দেখাতে। এত ঘনঘন এইরকম সুপার সাইক্লোন আছড়ে পড়ছে বাংলার বুকে যা সত্যি উদ্বেগের বিষয়। পরিবেশবিদরাও এনিয়ে বেশ চিন্তিত। তারা বুঝে পাচ্ছেন না কেন বছর না ঘুরতেই মাত্র ৬ মাসের ব্যবধানেই বুলবুল অথবা ফণীর পর আমফান চলে এলো? প্রকৃতিকে ধ্বংস করেছে মানুষ নিজের প্রয়োজনে হয়ত তাই আজ প্রকৃতি রুষ্ট হয়ে গেছে। তাই মানব সভ্যতা আজ বিপন্ন। একদিকে করোনা আতঙ্ক অন্যদিকে এই ঘূর্ণিঝড় উভয়মুখী এই লড়াইয়ে মানুষ দিশেহারা।

এত সংকটের মুহূর্তেও মানুষের মনে আসে আয়লার কথা, বুলবুলের কথা, অন্যান্য সাইক্লোনের কথা। আসলে মানুষ স্বভাবতই অতীতচারী। এই ঘূর্ণিঝড় তাই মনে করিয়ে দিলো অতীতের শক্তিশালী কয়েকটি ঘূর্ণিঝড়ের কথা।

১৯৭০ এর নভেম্বরে বাংলাদেশের ভোলায় আছড়ে পড়া বিশ্বের ইতিহাসের সবচেয়ে প্রাণঘাতী ঘূর্ণিঝড়টির কথা। এই ঘূর্ণিঝড়ে প্রায় ৫ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়েছিল। এই ঘূর্ণিঝড়ের ক্ষেত্রে ১০ দশমিক ৪ মিটার বা ৩৪ ফুট লম্বা জলোচ্ছ্বাস হয়েছিল।

১৯৯১ এর বাংলাদেশের ঘূর্ণিঝড়ে প্রায় ১ লাখ ৩৮ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছিলো।

১৯৯৯ সালে আর একটি ঘূর্ণিঝড়ে ওড়িশাতে ১০ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছিল।

তারপর ২০০৭ এ আসে সুপার সাইক্লোন তেজ। বিধ্বস্ত হয়ে গিয়েছিল বাংলাদেশ।

২০০৮ এর মে মাসে মায়ানমারের উপকূলে আছড়ে পড়া সাইক্লোন নার্গিসে অন্তত ১ লাখ ৪০ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছিল। এই সাইক্লোনে ২০ লাখ মানুষের ঘরবাড়ি ভেঙে পড়ে।

দয়া করে কেউ বাড়ির বাইরে বেরোবেন না। সরকারি নির্দেশ মেনে চলুন। ইতিমধ্যেই রাজ্যে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।ভেঙে পড়েছে সেতু, বাঁধ, ঘরবাড়ি। তাই সরকারী নির্দেশ না পাওয়া অবধি ঘরে থাকুন। ভালো থাকুন।