মমতা ছাড়াও বিধায়ক না হয়ে মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন আরও ৫ জন

নিজস্ব প্রতিবেদন : একুশের বিধানসভা নির্বাচনে রাজ্যের তৃণমূলের ‘খেলা হবে’ স্লোগান তুলে নিজেদের প্রচার শুরু করে। আর এই খেলায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আগেই জানিয়েছিলেন তিনিই গোলরক্ষক। আর এই গোলরক্ষকের ভূমিকায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজের দুর্ধর্ষ পারফরম্যান্স দেখিয়ে রাজ্যে ২১৩টি আসনে জয়লাভ করেন। তবে শেষমেষ নিজের গড় রক্ষা করতে পারেন নি। নন্দীগ্রামে তাকে হারের মুখ দেখতে হয়।

আর এই ঘটনার পর অনেকের মধ্যেই বেশ কয়েকটি প্রশ্ন ঘোরাফেরা করছে তাহলে কি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মুখ্যমন্ত্রী হবেন না বা হতে পারবেন না? তেমনটা নয়। মমতা বন্দোপাধ্যায় আগামী ৫ মে মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ গ্রহণ করবেন। আর তিনিই প্রথম কোন মুখ্যমন্ত্রী নন যিনি ভোটে না জিতেই মুখ্যমন্ত্রী হচ্ছেন। ভারতে এখনো পর্যন্ত এমন ৬ জন মুখ্যমন্ত্রীর উদাহরণ রয়েছে যারা ভোটে না জিতে অথবা অংশগ্রহণ না করে অর্থাৎ বিধায়ক না হয়েই মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন।

ভারতীয় সংবিধানের ১৬৪(৪) নং ধারা অনুযায়ী বিধায়ক না হয়েও মুখ্যমন্ত্রী হওয়া যায়। তবে মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ গ্রহণ করার ছয় মাসের মধ্যে কোন একটি কেন্দ্র থেকে জয়লাভ করে মুখ্যমন্ত্রী পদে বসা ব্যক্তিকে বিধায়ক হতে হবে। এছাড়াও রয়েছে বিধান পরিষদ গঠন করার মত বিকল্প পথ।

বিধায়ক না হয়েই যারা মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন

১) ১৯৫২ সালে ভারতে যখন প্রথম বিধানসভা নির্বাচন হয় তখন গুজরাত এবং মহারাষ্ট্র একসাথে স্টেট অফ বম্বে নামে পরিচিত ছিল। সেই বছর নির্বাচনের প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে হারতে হয়েছিল কংগ্রেসের দাপুটে নেতা মোরারজি দেশাইকে। যার পর বম্বে কংগ্রেসের পরিষদীয় নেতা হিসাবে তিনি পরিচিতি লাভ করেন এবং তিনিই মুখ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন।

২) ১৯৫২ সালেই মাদ্রাজে কোনরকম নির্বাচনে প্রতিদ্বন্ধিতা না করে মুখ্যমন্ত্রী হন সি গোপালাচারী। তার মধ্যে ভয় ছিল ভোটে হারার। এমনকি তিনি মুখ্যমন্ত্রী পদে বসার পর ছয় মাসের মধ্যেও আর ভোটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন নি। রাজ্যের বিধান পরিষদ গঠন করে বিধান পরিষদের সদস্য হিসেবে মুখ্যমন্ত্রীর পথ আগলে রাখেন।

৩) ১৯৭০ সালে উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী ছিলেন ত্রিভুবন নারায়ণ সিং। কিন্তু তিনি নির্বাচনে পরাজিত হন। তবে পরাজিত হলেও তিনি মুখ্যমন্ত্রী পদে বসেন। এরপর মুখ্যমন্ত্রী পদে বসার ছয় মাসের মধ্যে পুনরায় উপনির্বাচনে অংশগ্রহণ করলে সেখানেও তাকে পরাজিত হতে হয়। যার পরে তিনি মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দেন।

৪) ২০০৯ সালে ঝাড়খন্ডের মুখ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন শিবু সোরেন। তিনি সেই বছর ভোটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে পরাজিত হন। আর সেই বছর মুখ্যমন্ত্রী পদে বসার ছমাস পর ফের নিজের মেয়াদ বাড়াতে চেয়েছিলেন। কিন্তু কংগ্রেসে চাপে থাকে শেষমেষ পদত্যাগ করতে হয়। রাজ্যে জারি হয় রাষ্ট্রপতি শাসন।

৫) ২০২১ সালের ১০ মার্চ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে পরাজিত হওয়ার পর মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন উত্তরাখণ্ডের তিরথ সিং রাওয়াত।

[aaroporuntag]
৬) ২০১১ সালে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রথমবার বিধায়ক না হয়ে মুখ্যমন্ত্রী হন। পরে তিনি উপনির্বাচনে ভবানীপুর কেন্দ্র থেকে বিপুল ভোটে জয়লাভ করেন। আর এবার এক দশক পর পুনরায় বিধায়ক না হয়েই মুখ্যমন্ত্রী পদে বসতে চলেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।