কফিনবন্দি হয়ে ফিরছে শহীদ রাজেশ, কথা দিয়ে কথা রাখলেন বাড়ি ফেরার

হিমাদ্রি মণ্ডল : ২০১৫ সালে ভারতীয় সেনাবাহিনীতে যোগদান করেন বীরভূমের মহঃবাজার থানা এলাকার বেলগড়িয়া গ্রামের ২৬ বছর বয়সী যুবক রাজেশ ওরাং। এরপর শেষ বাড়ি ফিরে আসা ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বর মাসে। পুনরায় ডিউটিতে যোগদান করার পর মাঝে মধ্যে ফোনে কথোপকথন চলত পরিবারের লোকজনদের সাথে। আর ফোনেও শেষ কথা হয় গত দু’সপ্তাহ আগে।

শেষবার ফোনে কথা বলার সময় রাজেশ তার খুড়তুতো ভাই অভিজিৎ ওরাংকে জানিয়েছিলো, “লকডাউনের কারণে বাড়ি ফিরতে পারিনি। এবার লকডাউন ছেড়ে সব আস্তে আস্তে খুলতে শুরু করছে। খুব তাড়াতাড়ি বাড়ি ফিরবো। আর তারপর দিদির বাড়ি, আত্মীয়দের বাড়ি ঘুরতে যাবো।” কিন্তু জীবিত অবস্থায় রাজেশ ওরাংয়ের সেই স্বপ্ন আর পূরণ হলো না। তবে সে তার দেওয়া কথা রেখে গেল। সে বাড়ি ফিরছে ঠিকই কিন্তু তার দেহ আসছে কফিনবন্দি হয়ে। বুধবারই তার দেহ কফিনবন্দী হয়ে আসবে কলকাতায়। তারপর গ্রামের বাড়ি।

এখনো পর্যন্ত যা খবর রয়েছে তাতে জানা গিয়েছে পূর্ব লাদাখে গালওয়ান উপত্যকায় ভারত চীন সেনা সংঘর্ষে ভারতীয় নিরাপত্তাবাহিনীর ২০ জন শহীদ হয়েছেন। ১৯৭৫ সালের পর এই প্রথম চীনা সেনাদের হামলায় ভারতীয় জওয়ানদের প্রাণ গেল। তাও আবার একসঙ্গে এত জনের। আর এই সকল সেনা জওয়ানদের মধ্যে রয়েছেন বীরভূমের রাজেশ ওরাং।

রাজেশ ওরাংয়ের শহীদ হওয়ার খবর মঙ্গলবার সন্ধ্যা নাগাদ পরিবারের কাছে এসে পৌঁছায়। শহীদ হওয়ার খবর এসে পৌঁছাতেই শোকস্তব্ধ হয়ে পড়ে গোটা পরিবার। তবে পরিবারের লোকজন এই শোকস্তব্ধতা কাটিয়ে ভারতীয় সেনা জওয়ানদের শহীদের ঘটনায় পাল্টা জবাব, বদলার দাবি করেছেন। পাশাপাশি পরিবারের লোকজন গর্বিত রাজেশের জন্য। পরিবারের সদস্যদের বক্তব্য, “আমাদের ছেলে রাজেশ প্রাণ বিসর্জন দিয়েছে দেশের জন্য।” আর রাজেশের এমন দেশের জন্য প্রাণ বিসর্জন দেওয়ায় শুধু তাঁর পরিবার নয়, গর্বিত বীরভূম-পশ্চিমবঙ্গ-ভারতবর্ষ। জয় হিন্দ্।