Murshidabad: ভালো কাজে বাধা অসৎ-অসাধু মানুষের। অনেক কাজে এমন ঘটনা হামেশাই পরিলক্ষিত হয়। এবার সেই ঘটনার সাক্ষী হল মুর্শিদাবাদ। সাধারণ গরিব মানুষের সুবিধার্থে তৈরি হওয়া এক নয়া প্রকল্প বাস্তবায়নে বাধা কিছু অসৎ-অসাধু মানুষের। কাজ বন্ধ করার জন্য আগুন জ্বালিয়ে দেওয়া, ব্ল্যাকমেইল করা, বেশি করে টাকা চাওয়া, কোম্পানির স্টাফদের ধরে মারধর করার অভিযোগ উঠেছে সংস্থা তরফে। কোন প্রকল্প চালু হচ্ছে মুর্শিদাবাদে? কারা এই কাজে বাধা দিচ্ছে? কি কারণেই বা তারা কোম্পানি তুলে দিতে চাইছে?
সাধারণ মানুষের সুবিধার কথা ভেবে রাজ্য ও কেন্দ্র উভয় সরকারই নানা প্রকল্প চালু করছে। তেমনি কেন্দ্র সরকার তরফে গরীব নিম্নবিত্তদের পেটে দুটো খাবার যোগাতে নয়া পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। আর সেই পরিকল্পনা হলো গম সংরক্ষণ ও সরবরাহের ব্যবস্থা। ফুড ফর অল প্রকল্পের আওতায় মুর্শিদাবাদের এই প্রকল্পের বাস্তবায়ন করেছে কেন্দ্র তরফে। গম সংরক্ষণ ও সরবরাহের জন্য মুর্শিদাবাদের (Murshidabad) সারগাছিতে তৈরি করা হচ্ছে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি নির্ভর গোডাউন। প্রায় ২২ একর জমি নিয়ে তৈরি হচ্ছে এই গোডাউন। চলছে জোর কদমে কাজ। আর সেই কাজ ভন্ড করতেই অন্তরায় হয়ে দাঁড়াচ্ছে কিছু অসৎ-অসাধু মানুষ।
সূত্র মারফতে জানা গিয়েছে, এই প্রকল্পের বিশেষত্ব হল সাধারণ মানুষের কাছে সহজে গম পৌঁছে দেওয়া। আর তার জন্যই অন্য রাজ্য থেকে আনা গম সংরক্ষণের জন্যই মুর্শিদাবাদে (Murshidabad) এই নয়া উদ্যোগ চালু করল কেন্দ্র অধিনস্ত ফুড কর্পোরেশন অফ ইন্ডিয়া। মুর্শিদাবাদের বেলডাঙার সারগাছিতে তৈরি করা হচ্ছে এই প্রকল্প। গম আমদানি-রপ্তানি সহজ করার জন্য রেল স্টেশনের পাশেই তৈরি করা হচ্ছে এই গোডাউন। যার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে তেলেঙ্গানার একটি ঠিকাদার সংস্থাকে। এমন ভাবেই সংরক্ষণাগার তৈরি করা হচ্ছে যেখানে সরাসরি মাল বোঝাই ট্রাক পৌঁছে যাবে। অর্থাৎ গোডাউনের ভিতর পর্যন্ত তৈরি করা হচ্ছে রেললাইন। যার ফলে সহজেই মাল বোঝাই ট্রাক ভিতর পর্যন্ত পৌঁছে আনলোডিং করতে পারবে। প্রায় ৫০ হাজার মেট্রিক টন গম সংরক্ষণ করা যাবে এই গোডাউনে। তার জন্য মোট ৪টি সাইলো তৈরি করার পরিকল্পনা করা হয়েছে। যেখানে সহজেই উন্নত মানের গম সংরক্ষণ করে তারপর রাজ্যের বাকি জেলায় রেশন সরবরাহের মাধ্যমে গরিব মানুষদের কাছে অতি কম মূল্যে পৌঁছে দেওয়া হবে।
শুধু তাই না, সংস্থার কর্মী তরফে জানা গিয়েছে এই গম সংরক্ষণাগার তৈরি হলে জেলার (Murshidabad) সাধারণ মানুষ খুবই উপকৃত হবে। পাশাপাশি কর্মসংস্থান তৈরি হওয়ার সুযোগ রয়েছে এই প্রকল্পে। গোডাউনের কাজ চালু হওয়ার প্রথম দিকে প্রায় ২০ থেকে ২২ জন কর্মী নেওয়া হতে পারে বলে জানিয়েছে সংস্থা। তবে এর পাশাপাশি সংস্কার তরফে বেশ কিছু মানুষের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলা হয়েছে। কেন্দ্র সরকারের এই প্রকল্পে কিছু অসৎ-অসাধু মানুষ বাধা দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে সংস্থা। এমনকি কাজ বন্ধ করার জন্য তারা সংস্থাকে নানা ধরনের হুমকি দিয়ে চলেছে বলেও জানিয়েছে সংস্থার কর্মকর্তারা। তবে বর্তমানে ট্রেস পাস হয়ে ফুল এফোর্ট দিয়ে চলছে গোডাউন তৈরির কাজ। কবে থেকে চালু হবে এই গোডাউনের সংরক্ষণের কাজ?
প্রসঙ্গত, সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন খাদ্যের মধ্যে দুটি প্রধান খাদ্য হলো ভাত ও রুটি। কিছু মানুষ আছে যারা ভাত খেতে ভালোবাসেন তো আবার কিছু মানুষ আছেন যারা রুটি ও ময়দার জিনিস খেতে পছন্দ করেন। কিন্তু আর্থিক অভাবে অনেকেই তা পান না। আর সেই সব গরিব নিম্নবিত্ত মানুষের কথা ভেবেই কেন্দ্র সরকার তরফে গম সংরক্ষণাগার তৈরি করার ব্যবস্থা করল। যার ফলে সহজেই খুব কম মূল্যে সাধারণ মানুষ নিজেদের পছন্দের খাবার গ্রহণ করতে পারবে। খবর রয়েছে ইতিমধ্যেই প্রায় গোডাউন তৈরির ৮০ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। সংস্থা তরফে আশা রাখছে ২০২৫ সালের শেষের দিকেই আইনি ব্যবস্থাপনার মাধ্যম দিয়ে প্রকল্পের কাজ বাস্তবায়িত হবে। এই সালের মধ্যেই ২টি সাইলো তৈরি হয়ে যাবে। বাকি ২টি সাইলো আগামী দু-তিন বছরের মধ্যে নির্মিত হবে বলে জানিয়েছে সংস্থার কর্মকর্তারা। যার ফলে রাজ্যের অন্যান্য জেলা সহ মুর্শিদাবাদবাসিরা অত্যন্ত উপকৃত হবে বলে আশা রাখছে সংস্থা।