বর্তমান সময়ে যে হারে দূষণ বেড়ে চলেছে তা সকলের কাছেই বেশ চিন্তার বিষয় হয়ে উঠেছে। শুধু বায়ু দূষণ নয়, জল দূষণও (Water Pollution) মাথাব্যাথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এমতাবস্থায় কলকাতা ও পশ্চিমবঙ্গের জল সঙ্কটের মধ্যে ধোবিঘাটের বর্জ্য জল পরিশোধন আশার আলো জ্বালিয়েছে NIT। ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি রাউরকেলার অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর কস্তুরি দত্ত এক নতুন প্রক্রিয়া তৈরি করেছেন। যেখানে প্রাকৃতিক উপাদান ব্যবহার করে জামাকাপড় ধোয়ার নোংরা জলকে পুনর্ব্যবহারযোগ্য করে তোলা যায়। এতে দূষণ কমবে, জলের অপচয় রুখবে।
ধোবিঘাটের দূষণ কমাবে বঙ্গকন্যার নয়া আবিষ্কার
কস্তুরি দত্ত, একজন বঙ্গকন্যা, তাঁর দলের সঙ্গে এই ধোবিঘাট জল পরিশোধন ব্যবস্থা উদ্ভাবন করেছেন। দলে রয়েছেন পিএইচডি গবেষক দিব্যানি কুমারি এবং এমটেক ছাত্রী কার্তিকা সনমুগম। এটি প্রকৃতি-অনুপ্রাণিত: নুড়ি, বালি, মাটি, গাছপালা এবং মাইক্রোবস ব্যবহার করে দু’টি সিলিন্ডারিক ওয়েটল্যান্ড ইউনিট তৈরি। এতে মাইক্রোবিয়াল ফুয়েল সেল যুক্ত, যা ফিল্টার করে জল পরিষ্কার করে। কোনো রাসায়নিক লাগে না, বিদ্যুৎও নয়। অসীম পরিমাণ জল পরিশোধন সম্ভব।
নয়া পদ্ধতি একেবারে পরিবেশবান্ধব
এনআইটি ক্যাম্পাসের ধোবিঘাটে প্রথম পরীক্ষা। প্রতিদিন ১৫০০ লিটার বর্জ্য জল প্রক্রিয়াকরণ। কেমিক্যাল অক্সিজেন ডিমান্ড (সিওডি) ভারতীয় স্ট্যান্ডার্ডের সীমায় নেমে আসে। খরচ কম, ট্যাঙ্কের দরকার নেই সবসময়। কস্তুরি বলেন, “প্রকৃতি-ভিত্তিক এই পদ্ধতি পরিবেশবান্ধব এবং কার্যকরী।” পুরসভাগুলির সঙ্গে আলোচনা চলছে বাণিজ্যিক ব্যবহারের জন্য।
পশ্চিমবঙ্গের জল সঙ্কটে আশা
পশ্চিমবঙ্গে জলের অভাব তীব্র। ২০২৫ সালে কলকাতায় ভূগর্ভস্থ জলস্তর ৪৪% কমতে পারে, সুন্দরবনে তীব্র সঙ্কট। ধোবিঘাটগুলি মাইক্রোফাইবার দূষণ ছড়ায়। যার ফলে প্রতি লিটারে ৩২০০ মাইক্রোফাইবার নদী-পুকুরে মেশে ও পরিবেশকে নষ্ট করে। এই জল পরিশোধন প্রক্রিয়া ধোবিদের রুজি বাঁচাবে, দূষণ রোধ করবে। বিশেষজ্ঞরা বলেন, এতে জল পুনর্ব্যবহার বাড়বে, সঙ্কট কমবে। কলকাতার মতো শহরে এটি বিপ্লব ঘটাতে পারে, জল সুরক্ষায় নতুন দিগন্ত খুলে দেবে।
