Offbeat Hill Stations: ব্যস্ততম জীবন থেকে একটু ফাঁকা সময় পেলেই ভ্রমণ পিপাসুরা বেরিয়ে পড়েন সমুদ্রে বা দূর পাহাড়ে। আর ইতি মধ্যেই মাধ্যমিক পরীক্ষা শেষ হয়ে গিয়েছে ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষাও প্রায় শেষের গোড়ায়। এই পরীক্ষার পর ছুটির সময়ই আদর্শ ঘুরতে যাওয়ার জন্য। মার্চ এর শেষের দিকে বা এপ্রিলের শুরুতে গরমও বাড়বে ভালো। তাই গরমের সময় পাহাড় মনের মত জায়গা হতে পারে। সে ক্ষেত্রে চেনা জায়গার পাশাপাশি তালিকায় রাখতে পারেন ৫ অজানা পাহাড়।
পনমুডি: পাহাড় বললেই ছোট থেকে বড় সকলের চোখে ভেসে ওঠে দার্জিলিং এর মনোরম পরিবেশের ছবি। তবে ভারতের পশ্চিম বা পূর্বঘাট পর্বতের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য কিছু কম নয়। কেরলের পনমুডির নাম শুনেছেন? পাহাড়ি জনপদ হিসাবে এ রাজ্যের মুন্নারই পরিচিত। তিরুঅনন্তপুরম শহর থেকে ৫৩ কিমি দূরে অবস্থিত এই পাহাড়ি জনপদটি অপরূপ সৌন্দর্য ভরা। পশ্চিমঘাট পর্বতমালার স্বল্প উচ্চ এর পাহাড়শ্রেণি ঘিরে রেখেছে এটিকে। ঝর্না, উপত্যকা, অরণ্য, কুয়াশা কোনো কিছুর কমতি নেই। পনমুডিতে এলে ঘুরে আসতে পারেন জনপ্রিয় মীনমুত্তি জলপ্রপাত থেকে। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১১০০ মিটার উচ্চতার অবস্থিত এই শহরটি আবহাওয়া বছরভরই মনোরম। তাই গরম থেকে বাঁচতে বেছে নিতেই পারেন এই দুর্দান্ত স্থানটি।
আরও পড়ুন: Kendriya Vidyalaya Admission 2025: কেন্দ্রীয় বিদ্যালয়ে ভর্তি, কীভাবে আবেদন করবেন, কী কী লাগবে?
কিভাবে যাবেন জেনে নিন: তিরুঅনন্তপুরমে বিমানবন্দর ও রেল স্টেশন, দুইয়ের সুবিধাই রয়েছে। তিরুঅনন্তপুরম শহর থেকে বাস বা গাড়িতে করে যাওয়া যায় পনমুডি।
পাব্বর ভ্যালি: শিমলা, কুলু, মানালি বরফে ঢাকা এই পাহাড়গুলিতে প্রচুর পর্যটকদের ভিড় হয় কিন্তু পাব্বর ভ্যালি অনেকের কাছেই অজানা। হিমাচল প্রদেশের শিমলা থেকে প্রায় ১০০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত পাব্বর ভ্যালির। পর্যটক টানতে এই জায়গাকে আরও সাজিয়ে তোলা হচ্ছে। দেবদারু, পাইন, ওক গাছে ঘন সবুজ হয়ে থাকা সুউচ্চ পাহাড়ের সারি যেন ঘিরে রেখেছে পাব্বরকে। তারই উপর দিয়ে বহমান পাব্বর নদী। গ্রামে রয়েছে সুস্বাদু আপেলের বাগিচা। পাব্বর উপত্যকা ঘুরে দেখতে গেলে হাঁটতে হয় প্রচুর। তবেই সৌন্দর্য উপভোগ করা যায়। ২২ নম্বর জাতীয় সড়ক এসেছে পাব্বর ভ্যালিতে। বাস বা গাড়িতে সরাসরি এখানে আসা যায়।
কিভাবে যাবেন জেনে নিন: বিমান, রেলপথে কিংবা সড়কপথে দিল্লি বা চণ্ডীগড় পৌঁছে, সেখান থেকে গাড়ি ভাড়া করে পাব্বর আসতে পারেন। কালকা থেকে টয়ট্রেনে করে শিমলা গিয়ে সেখান থেকেও গাড়িতে আসা যায়।
হাফলং: অসমের ডিমাহাসাও জেলার হাফলং শহর থেকেও ছুটির সময় ঘুরে আসতে পারেন। এখানকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য কোনো অংশে কম নয়। এক সময় এই এলাকায় ন্যারো গেজ লাইন ছিল। বেশ কয়েক বছর হল ছোটলাইন বড় হয়েছে। নতুন স্টেশনের নাম হয়েছে নিউ হাফলং। হাফলং শহরের মাঝেই অবস্থিত বিশাল এক ঝিল। জলে খেলে বেড়ায় মাছেরা। মূলত এই ঝিল ভাগ করেছে শহরটিকে। এ পার থেকে ওপার যাওয়ার জন্য তৈরি হয়েছে একটি ছোট্ট সেতু। ঝিলের উল্টো দিকে রয়েছে বোটানিক্যাল গার্ডেন। পাকদণ্ডি পথে কিছুটা উঠেই গির্জা। পাখি দেখার ইচ্ছা থাকলে যেতে পারেন ঝটিংগা। এখানে স্থানীয় খাবারও
খুব সুস্বাদু।
কিভাবে যাবেন জেনে নিন: হাওড়া স্টেশন থেকে রেলপথে নিউ হাফলং স্টেশন যাওয়া যায়। হাফলংয়ের সবচেয়ে কাছে অবস্থিত শিলচর বিমানবন্দর। সেখান থেকে হাফলংয়ের দূরত্ব মাত্র ১০৮ কিলোমিটার। এই ছুটিতে ঘুরে আসতেই পারেন।
ধনৌল্টি: গাড়োয়াল হিমালয়ের বুকে অবস্থিত ধনৌল্টি। তুলির টানে আঁকা এই অচেনা পাহাড়ি শহরটি। ফুলের রাজ্য মুসৌরি থেকে ৩০ কিমি দূরে এই জায়গাটি রয়েছে। দেবদারু, পাইনে ঘেরা এলাকাটির নৈসর্গিক রূপের টানে দূর দুরান্ত থেকে ছুটে আসেন বহু পর্যটক। অরণ্যপথে রডোডেনড্রনের আকর্ষণও সেরা। গাড়ি ভাড়া করে এখান থেকে পর্যটনরা ঘুরে দেখতে পারেন ইকো এবং অ্যাডভেঞ্চার পার্ক, দেওগড়, তেহরি জলাধার, কাঁটাতাল, চাম্বা।
কী ভাবে যাবেন জেনে নিন: ট্রেনে হৃষীকেশ অথবা দেরাদুন এসে সেখান থেকে সড়কপথে ধনৌল্টি যেতে পারেন। দিল্লি থেকে গাড়ি করে আসা সম্ভব।
মাউন্ট আবু: এপ্রিল মে মাসের গরম এড়াতে চাইলে ঘুরে আসতে পারেন মরু রাজ্যের শৈলশহর মাউন্ট আবু ও সংলগ্ন অচলগড়ের মতো কয়েকটি এলাকা থেকে। ছোট শহরটি বেশ সৌন্দর্যতে মোড়া। শীতের দিনে পারদ পতন লক্ষ করা গেলেও, বছরের একাধিক সময় আবহাওয়া মনোরমই থাকে। এখানকার অন্যতম দর্শনীয় স্থান ‘দিলওয়াড়া মন্দির’। মার্বেলের সূক্ষ্ম কারুকাজ, স্থাপত্যশৈলী দেখতে ভিড় জমায় বহু পর্যটক। এছাড়া ঘুরে দেখতে পারেন নাক্কি হ্রদ, সানসেট পয়েন্ট, গুরু শিখর।
কী ভাবে যাবেন জেনে নিন: উদয়পুরে অবস্থিত দেবক বিমানবন্দর। সেখান থেকে মাউন্ট আবু যেতে পারেন। আমেদাবাদের বল্লভভাই প্যাটেল বিমানবন্দর থেকেও মাউন্ট আবু আসা যায়। দূরত্ব ২২০ কিলোমিটার। ট্রেনে জয়পুর এসেও সড়কপথে মাউন্ট আবু যাওয়া যায়।