Meghna Cafeteria: ভুলে যান দিঘা, পুরি! এবার মাত্র ১০ টাকায় ঘুরে দেখুন হাতের কাছেই থাকা এই পার্ক

On weekends you can visit the decorated Meghna Cafeteria: মাত্র ৩ মাস আগে নদিয়া জেলার করিমপুরের যে জায়গাটি শুধুমাত্র কৃষি বিপণন দফতরের পরিত্যক্ত নোংরা পুকুর ও সেই সংলগ্ন কিছুটা জায়গা নিয়ে নির্জন অবস্থায় পড়ে ছিল, সেই জায়গাটি আজ পর্যটকদের ভিড়ে পরিপূর্ন হয়ে থাকছে সপ্তাহের প্রতিদিন। কারণ অসংলগ্ন ভাবে দীর্ঘদিন ধরে পড়ে থাকা এই অঞ্চলটি আসলে পরিণত হয়েছে একটি বিনোদন পার্কে। নদিয়ার প্রান্তিক জনপদ সীমান্ত ঘেঁষা এই করিমপুরের ফার্মের মোড় সেজে উঠেছে অত্যাধুনিক বিনোদন পার্ক হিসাবে। সেখানকার নতুন ভাবে তৈরি হওয়া মেঘনা ক্যাফেটেরিয়া (Meghna Cafeteria) এখন এই স্থানে আগত পর্যটকদের কাছে বিশেষ আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে। প্রতিদিন প্রচুর মানুষ আসছেন এখানে এখন সুন্দর সাজানো গোছানো পরিবেশে কিছুটা সময় কাটিয়ে আনন্দ উপভোগ করছেন।

মেঘনা ক্যাফেটেরিয়া (Meghna Cafeteria) -তে শুধুমাত্র খাওয়া দাওয়ার ব্যাবস্থাই আছে তা নয়, খাওয়া দাওয়ার পাশাপাশি রয়েছে নানা রকম গান এবং সেই সঙ্গে প্রিয় মানুষদের সঙ্গে জমিয়ে আড্ডা দেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় সব রকম উপাদান। এখানে গেলে সমসাময়িক রক, পপ, ব্যান্ড ইত্যাদি গান তো শুনতে পাবেনই, পাশাপাশি এক্সট্রা পাওনা হিসাবে থাকবে নদিয়ার বাউল শিল্পীদের সুরের মূর্ছনা। আর সেই সঙ্গে তো থাকবেই রসনা তৃপ্তির আয়োজন। দেশি ও বিদেশি বিভিন্ন ধরনের লোভনীয় খাবারের পদ পেয়ে যাবেন এখানে। ভারতীয় বিভিন্ন পদ ছাড়াও এখানে রয়েছে মোগলাই, কন্টিনেন্টাল, চাইনিজ, নানা ফ্লেভারের কফি, এছাড়াও রয়েছে লোভনীয় মকটেল বার।

রাজ্য সরকারের পর্যটন দফতর এবং করিমপুর ১ পঞ্চায়েত সমিতির যৌথ উদ্যোগে শুরু করা হয়েছে এই খাওয়া দাওয়া ও বিলাস ব্যসনের আয়োজন। শুধু তাই নয়, পর্যটকদের আকর্ষণ বাড়াতে এখানে দ্রুত শুরু করা হচ্ছে নৌকাবিহারের সুবিধা। জানা যাচ্ছে ১০ টিরও বেশি বোট রাখা হবে এখানে। জন্মদিন পার্টি থেকে বিবাহবার্ষিকী ইত্যাদি যে কোনো আনন্দ অনুষ্ঠানের জন্য এই ক্যাফেটেরিয়ার লাউঞ্জ বুক করার সুবিধা পাওয়া যাবে। এই সম্পূর্ন প্রকল্পটি রূপকার হলেন কৃষ্ণনগরের প্রাক্তন তৃণমূল সাংসদ তথা করিমপুরের বাসিন্দা মহুয়া মৈত্র। তার উদ্যোগেই এই স্থানটি বর্তমানে আগত মানুষদের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে।

আরও পড়ুন 👉 Sikaritar: ভুলে যান দিঘা, পুরি, এবার ১২০০ টাকা খরচে তাঁবুতে রাত কাটান এই জায়গায়

জানা গেছে ২০১৭-১৮ অর্থবর্ষে রাজ্যের তৎকালীন পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেব পরিদর্শনে এলে ফার্মের মোড়ের ওই পুকুরকে কেন্দ্র করে একটি পার্ক তৈরির প্রস্তাব দিয়েছিলেন মহুয়া মৈত্র। এরপর সরকারি অনুমোদন মেলে। প্রায় তিন লক্ষ টাকা ব্যয়ে পর্যটন দফতর ও পঞ্চায়েত সমিতি মিলে গড়ে তুলেছে এই পার্ক। প্রাতঃভ্রমণকারীদের জন্য সকাল ৬টা থেকে ৮টা পর্যন্ত বিনামূল্যে প্রবেশের ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়েছে। আর অন্যান্য পর্যটকদের জন্য মাত্র ১০ টাকার টিকিটের বিনিময়ে সকাল ১০টা থেকে রাত সাড়ে ৯টা পর্যন্ত পার্কে আসা যাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। মেঘনা ক্যাফেটেরিয়ায় (Meghna Cafeteria) একসঙ্গ ৪০ জন মানুষ বসার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

সব মিলিয়ে এই পার্কটি বেশ জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। জানা গেছে ভ্যালেন্টাইন্স ডের দিন এই পার্কে এসেছিলেন প্রায় ১৪ হাজার মানুষ। পার্কে আসার টিকিট বিক্রি হয়েছে ১ লক্ষ টাকার বেশি। দৈনিক টিকিট বিক্রি হচ্ছে ৫০ হাজার টাকার মত। শুধু তাই নয় সরকারি উদ্যোগে গড়ে তোলা এই পার্কে অন্তত ৩০ জন মানুষের চাকরি হয়েছে। সব মিলিয়ে বাংলাদেশ সীমান্ত থেকে ৪ কিলোমিটার ভিতরে প্রত্যন্ত করিমপুরে গড়ে ওঠা এই মেঘনা ক্যাফেটেরিয়া ধীরে ধীরে সাধারণ মানুষের কাছে আরো অনেক বেশি জনপ্রিয় হয়ে উঠছে।