ভারতের আকাশেও দেখা মিলবে উল্কাবৃষ্টির, সময় জানালেন জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা

নিজস্ব প্রতিবেদন : জন্মাষ্টমীর মধ্যেই আবার একটি সুখবর। দীর্ঘ সময় পর ভারতের আকাশে উল্কাবৃষ্টি দেখা যেতে পারে বলে মত প্রকাশ করেছেন জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা। তারা জানিয়েছেন আজ ও আগামীকাল অর্থাৎ বৃহস্পতিবার রাত ২ টোর পর থেকেই এই উল্কাবৃষ্টি দেখা যেতে পারে। তবে আমরা খালি চোখে এই উল্কাবৃষ্টি দেখতে পাবো কিনা তা অবশ্য নির্ভর করছে আবহাওয়ার উপর। আকাশ যদি মেঘলা না থাকে তাহলে খালি চোখে উল্কাবৃষ্টি দেখা যাবে। আর যদি খালি চোখে উল্কাবৃষ্টি দেখা নাও যায় তবুও অসুবিধা নেই, কারণ নাসার ভার্চুয়াল টেলিস্কোপ প্রোজেক্টে উল্কাবৃষ্টির লাইভ দেখানো হবে। এই দুদিনই লাইভ দেখানো হবে বলে জানা গিয়েছে নাসার তরফ থেকে।

মহাকাশের মধ্যে ভেসে বেড়ানো নানারকম ছোট-বড় পাথর খন্ডই হলো উল্কা। এগুলি পৃথিবীর অভিকর্ষ বলের টানে ছুটে আসার সময় বায়ুর কণার সঙ্গে ঐসব মহাজাগতিক পাথরের ঘষা লেগে আগুন নির্গত হয়, তখন মনে হয় আকাশ থেকে যেন আলো ঝরে পড়ছে। একেই আমরা বলি উল্কাবৃষ্টি। পৃথিবীর অভিকর্ষ বলের টানে এবার ছুটে আসছে পারসেড উল্কা। পার্সেডের উল্কাখন্ডের গতিবেগ ঘণ্টায় প্রায় ১ লক্ষ ৩০ হাজার মাইল।প্রতি ঘন্টায় ৫০ থেকে ৭৫ টি উল্কা খন্ড পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের সাথে ঘর্ষণ লেগে জ্বলে উঠবে। এই ঘর্ষণের ফলেই পুরো আকাশ থেকে উল্কাবৃষ্টি ঝরে পড়বে তখন মনে হবে আকাশ থেকে যেন আলোর মালা ঝরে পড়ছে।

এই পারসেড উল্কার উৎস হল ধুমকেতু সুইফ্ট টাটল। এই ধুমকেতুটি ১৩৩ বছর অন্তর অন্তর একবার করে পৃথিবীর সৌরমণ্ডলে ঢুকে সূর্যের দিকে পাক খেয়ে পৃথিবীর দিকে ছুটে আসে। আর এই ধুমকেতুরই একটি অংশ হলো পারসেড উল্কা। আজ ও আগামীকাল যা আমরা ভারতের আকাশ থেকে দেখতে পাবো।

এই ধূমকেতুটি পৃথিবী থেকে প্রায় সাড়ে চারশো কোটি কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। পৃথিবী থেকে সাড়ে চারশো কোটি কিলোমিটার দূরে একটি বলয়ের মতো অংশ আছে। বলয়ের মত এই জায়গাটি সাড়ে তিনশো কোটি কিলোমিটার জুড়ে বিস্তৃত। পুরো ঐ অংশটায় পাথর আর বরফের টুকরো ভর্তি আর সেখানে ধুলো আর গ্যাসের ঘনত্ব খুবই কম। এই অংশটিকে বলা হয় কুইপার বেল্ট। আর এই কুইপার বেল্টের বাসিন্দাই হলো ঐ ধুমকেতু। আর এই ধূমকেতুরই একটা অংশ হলো পারসেড। জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা আরও বলেন যে কুইপার বেল্টের ভেতরেই প্লুটো রয়েছে। তাই এতটা দূরত্ব অতিক্রম করে ঐ পারসেড পৃথিবীর বুকে আছড়ে পড়তে চলেছে।

নাসা বলেছে উল্কাবৃষ্টির এই সংখ্যা ঘন্টাতে ১৫০ থেকে ২০০ হতে পারে। লো ওয়েল অবজারভেটরির জ্যোতির্বিজ্ঞানী নিক মস্কোভিজ এবিষয়ে জানিয়েছেন, “আজ পৃথিবীর বেশ কয়েকটি জায়গায় স্পষ্ট দেখা যাবে পারসেড মেটিওর সাওয়ার।” কোথায় কোথায় এই উল্কাবৃষ্টি আজ পরিষ্কার দেখা যাবে, এই প্রসঙ্গে জ্যোতির্বিজ্ঞানী নিক জানিয়েছেন, “ক্যানারি আইল্যান্ড ও সংযুক্ত আরব আমিরশাহির শারজা একাডেমী থেকে এই উল্কাবৃষ্টি পরিষ্কার দেখা যাবে।”