হাটসেরান্ডির ঘটনায় শুরু রাজনৈতিক চাপানউতোর, মহিলা খুনে গ্রেপ্তার ১

অমরনাথ দত্ত : সোমবার দুপুরে অনুব্রত মণ্ডলের গ্রামের বাড়ি নানুরের হাটসেরান্ডি গ্রামে তৃণমূল বিজেপি সংঘর্ষে উত্তপ্ত এলাকা। সংঘর্ষ ঘিরে চলে গুলি, দুষ্কৃতীদের গুলিতে প্রাণ হারান এক মহিলা। মৃত মহিলার আত্মীয়ের দাবি, বিজেপি কর্মী সন্দেহে ওই গ্রামের পাশের পাড়া মালপাড়ার ৮-১০ জন তৃণমূল দুষ্কৃতী এসে পশ্চিম পাড়ায় এসে আক্রমণ চালায়। ঘটনায় পশ্চিমপাড়ার বেশ কয়েকজন আহত হওয়ার পাশাপাশি গুলিতে প্রাণ হারান শংকরী বাগদী নামে এক মহিলা।

এমনকি ঘটনার পর হাসপাতালে ভর্তি আহত বিজেপি কর্মীদের শারীরিক অবস্থার খবর নিতে সত্ত্বর হাসপাতালে উপস্থিত হন বোলপুর লোকসভা কেন্দ্রের প্রাক্তন সাংসদ তথা বিজেপি নেতা অনুপম হাজরা, বিজেপির বীরভূম জেলা সভাপতি শ্যামাপদ মন্ডল সহ অন্যান্যরা। বিজেপির নেতারা দাবি করেন, আহত এবং মৃত সকলেই বিজেপি কর্মী সমর্থক। তবে ঘটনায় আজ অর্থাৎ মঙ্গলবার রাজনৈতিক পরিস্থিতির পালাবদল ঘটে।

ইতিমধ্যেই, হামলার সেই ঘটনায় পুলিশ মঙ্গলা বাগদি নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করে এবং তাকে আজ বোলপুর আদালতে পেশ করা হয়।

তৃণমূলের তরফ থেকে মৃত শংকরী বাগদীকে শেষ শ্রদ্ধাও জানানো হয়। পাশাপাশি তৃণমূল নেতৃত্ব দাবি করে, মৃত শংকরী বাগদি এবং তার পরিবার দীর্ঘদিন ধরেই তৃণমূলের সাথে যুক্ত। তার ছেলেও বীরভূম তৃণমূল জেলার সাধারণ সম্পাদক সুদিপ্ত ঘোষ ও নানুরের দণ্ডপ্রতাপ তৃণমূল নেতা কাজল শেখের পাশে দাঁড়িয়ে জানাই, ‘তারা তৃণমূল করে’। পাশাপাশি সে এও জানায়, যারা তার মাকে মেরেছে ‘তারাও তৃণমূল করে’। আর এখানেই উঠেছে প্রশ্ন, তাহলে কি কোথাও গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব মাথাচাড়া থেকেই এই ঘটনা!

যদিও এই বিষয়ে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বকে সম্পূর্ণ নস্যাৎ করে তৃণমূল নেতা কাজল শেখ জানান, “সবেমাত্র মাকে হারিয়েছেন, এই পরিস্থিতিতে ও সব প্রশ্নের সঠিক উত্তর দিতে পারবেন কিনা তা বুঝতে পারছেন। তবে তারা এফআইআর করেছে।”

অন্যদিকে গতকাল মৃত এবং আহতদের অনুপম হাজরা ও বীরভূম জেলা বিজেপি সভাপতি শ্যামাপদ মন্ডল দাবি করেছিলেন, “ওরা সকলেই বিজেপি কর্মী এবং বিজেপির সাথে যুক্ত।” এমনকি আজ সকালে বিজেপি রাজ্য সহ-সভাপতি বিশ্বপ্রিয় রায়চৌধুরী সিউড়িতে এসে জানিয়েছিলেন, “বীরভূমের নানুর থানার অন্তর্গত হাটসেরান্ডি গ্রামে এমন ঘটনা ঘটেছে তার কারণ হলো গত লোকসভা নির্বাচনে ওই এলাকায় বিজেপি তৃণমূলের তুলনায় বেশি ভোট পেয়েছিল।” স্বভাবতই এই মৃত্যুকে নিয়ে রাজনৈতিক চাপানউতোর শুরু হয়েছে বলে মত রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের।

যদিও বীরভূম জেলা তৃণমূল সাধারণ সম্পাদক সুদিপ্ত ঘোষের অভিযোগ, “২৩ শে মার্চের পর থেকে জেলায় যা ঘটে চলেছে তাতেই বিজেপি রাজনৈতিক রং লাগানোর চেষ্টা করছে, তাতেই সে কোন পারিবারিক ঘটনা হোক, অথবা ত্রিকোণ প্রেমের ঘটনা হোক সবকিছুতেই।”