৫০ বছরেও খুঁজে পায়নি পাকিস্তান, হারিয়েছেন ঘরবাড়ি, সেই কর্নেল পদ্ম পুরস্কার

নিজস্ব প্রতিবেদন : সোমবার রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ (Ram Nath Kovind) দেশের ৭ জনকে পদ্মবিভূষণ, ১০ জনকে পদ্মভূষণ এবং ১০২ জনকে পদ্মশ্রী পুরস্কার তুলে দেন। এই সকল পুরস্কার প্রাপ্তরা সমাজে অনন্য নজির সৃষ্টি করার জন্যই এমন রাষ্ট্রীয় সম্মানে সম্মানিত হয়েছেন তা নিয়ে নতুন করে কিছু বলার নেই। তবে এই ১০২ জন পদ্মশ্রী (Padma Shri) প্রাপ্তদের মধ্যে একটু হলেও আলাদা কর্নেল কাজী সাজ্জাদ আলি জাহির (Quazi Sajjad Ali Zahir)।

কর্নেল কাজী সাজ্জাদ আলি জাহির হলেন বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম নায়ক। ১৯৭১ সালে তিনি প্রাণ বাঁচিয়ে পাকিস্তান ছেড়ে ভারতে আসতে সক্ষম হন। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের এই অন্যতম নায়ককে ৫০ বছর ধরে খুঁজে বেড়িয়েছে পাকিস্তান। তবে তাতে তারা সফল হয়নি। এমনকি তার বাড়িঘর সমস্ত কিছু জ্বালিয়ে ছারখার করে দেওয়া হয় পাকিস্তানী সেনাদের তরফে। শেষ পর্যন্ত তাকে না পেয়ে তার মা ও বোনকে নিশানা করেছিল পাকিস্তানি সেনারা। কিন্তু তারাও কোনক্রমে প্রাণ বাঁচিয়ে ভারতে আসতে সক্ষম হন।

শোনা যায় এই কর্নেল কাজী সাজ্জাদ আলী জাহির পাকিস্তানি সেনাদের বহু গোপন তথ্য তুলে দেন ভারতের হাতে। এমনকি তিনি বাংলাদেশের মুক্তিযোদ্ধাদের প্রশিক্ষকও ছিলেন। পাকিস্তানে উনার নামে বেরিয়েছিল ওয়ারেন্ট। জীবিত অথবা মৃত কোনো অবস্থাতেই তাকে ধরে আনলে পুরস্কার ঘোষণা করাও হয়েছিল। কর্নেল কাজী সাজ্জাদ আলী জাহির ছাড়াও এদিন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের হাত ধরে বাংলাদেশি নাগরিক সানজিদা খাতুন ও মুয়াজ্জাম আলি পদ্মশ্রী সম্মানে সম্মানিত হলেন।

১৯৬৯ সালে কর্নেল কাজী পাকিস্তানি সেনাবাহিনীতে নিযুক্ত হন। সেই সময়ে বাংলাদেশে ছিল পূর্ব পাকিস্তানের অন্তর্ভুক্ত। তৎকালীন সময়ে বর্তমানের বাংলাদেশে পাকিস্তানি সেনাদের অত্যাচার চরম শিখরে উন্নীত হয়েছিল। এই অত্যাচারের বিরুদ্ধে বাংলাদেশিরা তখন পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সংগ্রাম ঘোষণা করে। তখনই এই কর্নেল কাজী পাকিস্তানি সেনাদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করে পাকিস্তান ছেড়ে ভারতে চলে আসেন।

ভারতের হাত ধরে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ জয়লাভ করার পর কর্নেল কাজী একটি সংগঠন তৈরি করেন। সেই সংগঠনের কাজ ছিল বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সঙ্গে জড়িতদের সনাক্ত করা।