“ভিডিও ভাইরালের পর কেন গিয়েছিলেন মায়ের কাছে” জানালেন রাণুর মেয়ে সাথী

নিজস্ব প্রতিবেদন : রানু মন্ডল, বর্তমান নেট দুনিয়ার সেনসেশন। তাঁর গাওয়া গান সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরালের পর রাতারাতি সেলিব্রেটি তিনি। পৌঁছে গিয়েছেন রানাঘাটের ট্রেন স্টেশন থেকে সরাসরি বলিউডে। আর তাঁর এই সাফল্যের জন্য নেটিজেনরা রানাঘাটের ইঞ্জিনিয়ার অতীন্দ্র চক্রবর্তীকে মূল কান্ডারী হিসেবে তুলে ধরেছেন। তার মাঝেই আবার রানু মন্ডলের সাথে সাক্ষাতে আসেন সিউড়ি থেকে তার মেয়ে সাথী রায়। শুরু হয় সাথীকে নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় নানান অভিযোগ। অতীন্দ্রর বিরুদ্ধেও অনেক নেটিজেনরা করেছেন অভিযোগ। তবে বারবার অতীন্দ্রের মারাত্মক অভিযোগ তুলেছেন রানু মন্ডলের মেয়ে সাথী।

সোশ্যাল মিডিয়ার নেটিজেনরা বারবার রানু মন্ডলের মেয়ের হঠাৎ করে মায়ের সাথে দেখা করতে যাওয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। কিন্তু সেই প্রশ্নের সঠিক উত্তর পাওয়া যায়নি সোশ্যাল মিডিয়ায়। শুধু পাওয়া গিয়েছে নানান কটুক্তি ও ব্যঙ্গ। আর সোশ্যাল মিডিয়ায় উঠে আসা বেশ কয়েকটি প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে আমরা পৌঁছে গিয়েছিলাম সাথী রায়ের সিউড়ির বাড়িতে। সেখানে গিয়ে আমরা কি জানতে পারলাম।

সাথী রায় প্রথম থেকেই জানাই, তিনি মায়ের সাথে সবসময় যোগাযোগ রাখতেন, মাকে মাসে মাসে ৫০০ টাকা করে পাঠাতেন। কারণ তাঁর সামর্থ্য খুব একটা বেশি নয়, একটি মুদির দোকান করে দুই ছেলেকে নিয়ে সংসার চালান।

তিনি পাশাপাশি আরও বলেছেন, তিনি নিজে মাকে মাসে মাসে ৫০০ টাকা করে দীর্ঘদিন ধরে পাঠিয়েছেন অথচ আমার মায়ের আরো তিন সন্তান রয়েছে যারা কোনোদিন কোনো রকম সাহায্য করে না। তারাও যদি মায়ের পাশে এসে দাঁড়াতো তাহলে মাকে এইভাবে থাকতে হতো না।

এরপরেই তিনি রানাঘাটের অতীন্দ্র এবং তপন নামে দুজনের বিরুদ্ধে মারাত্মক অভিযোগ করেন। সেই অভিযোগ হলো টাকা আত্মসাৎ করা থেকে মায়ের সাথে দেখা করতে না দেওয়ার মতো ঘটনা। কিন্তু প্রশ্ন হল এতদিন সাথী রাণুদির সাথে দেখা করতে না গিয়ে হঠাৎ করেই ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পরেই কেন তিনি দেখা করতে গেলেন? যে প্রশ্ন নিয়ে উত্তাল সোশ্যাল মিডিয়া।

সেই প্রশ্নের উত্তর নিয়ে আজ সাথী রায় জানান, “ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর আমি মায়ের বাড়িতে গিয়েছি এ কথা সত্য, কিন্তু কেন গিয়েছি? ভিডিও ভাইরাল হওয়ার ১০ দিন আগে আমার সাথে মায়ের দেখা হয়েছিল ধর্মতলায়। সেদিন মা আমার সাথে বাড়ি আসতে চেয়েছিল কিন্তু আমি ব্যবসার জিনিস সম্পর্কে গিয়েছিলাম ধর্মতলায় জিজ্ঞাসাবাদ করতে। তখন আমি মাকে বলি তুমি এখানে থাকো, আমি ফিরে যাওয়ার সময় তোমাকে নিয়ে যাবো। হাতে ২০০ টাকা দি আর বলি না থাকতে পারলে বাড়ি ফিরেও যেতে পারো। অর্থাৎ ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পরেই মায়ের সাথে আমার যোগাযোগ তৈরি করার অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।”

এরপর তিনি জানান, “যখন ভিডিওটি ভাইরাল হয়, তারপর আমাকে ফোন করে বলা হয় কেরালা থেকে ফোন আসছে, ইত্যাদি নানান জায়গা থেকে ফোন আসছে। তখন তপন আমাকে জানায় তারা ব্লাড রিলেটেড লোক খুঁজছেন। তপন আরো জানিয়েছিল, ‘আমরা কোন রিক্স নিতে চাই না। ব্লাড রিলেশন থাকলে এবং আইডেন্টিটি প্রুফ লাগবে।’ তখন আমি ভাবি আমার দ্বারা মায়ের যদি কোন উপকার হয়। তারপর কিছু বুঝতেই পারলাম না কখন ওরা চলে গেল, কোথায় কি হলো আমায় কিছু জানানো হলো না। ওরা ভেবেছিল, যদি কিছু হয়ে যায়, তাহলে কেস খেয়ে যাবে। এমনকি তপন আমাকে এটাও বলে যে, ‘কাউকেই কিছু বলবে না, আমি তোমাকে ব্লাড রিলেশনের জন্যই দেখেছি’।”

সাথীর দাবি, “আমি সাধারণ মানুষদের কোনরকম দোষারোপ করছি না। কারণ তারা পুরো ঘটনাটি জানেন না। আমার দাবি, যারা রানু মন্ডলকে রানু দিতে পরিণত করেছেন অর্থাৎ সাধারণ জনতার তারাই সমস্ত ঘটনার তদন্ত করুন। মায়ের দায়িত্ব আমাকে না দিলেও হবে দেওয়া হোক কোন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার বা নিরপেক্ষ ব্যক্তিকে।”