ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সংঘর্ষ বিরতি কার্যকর হলেও, উত্তরবঙ্গ ও সিকিমের পর্যটন খাতে এখনও কোনো স্বস্তির ছোঁয়া লাগেনি। উত্তরের পরিস্থিতি অশান্ত এবং তার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে ১০ নম্বর জাতীয় সড়কে সংস্কারের জন্য চলা কাজ। এই পরিস্থিতিতে সিকিম ও দার্জিলিংয়ে গ্রীষ্মের পর্যটন মৌসুমে রিজার্ভেশন বাতিলের ঢল নেমেছে। পর্যটন শিল্পে এবার ৫০ শতাংশের বেশি ক্ষতির আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন ট্যুর অপারেটররা।
পর্যটন সংস্থাগুলির পক্ষ থেকে জানা গিয়েছে, রাজ্যের মোট দেশজ উৎপাদনে পর্যটনের অবদান বর্তমানে প্রায় ১৮ শতাংশ। ২০২৩ সালে পর্যটন থেকে আয় ছিল সর্বাধিক, যা পৌঁছেছিল ভারতীয় মুদ্রায় ১৮৬৩.৮৭১ মিলিয়ন বা প্রায় ৩১ হাজার কোটি টাকায়। এ বছর সিকিম, দার্জিলিং, কালিম্পং এবং ডুয়ার্সে পর্যটকের ঢল নামার আশা করা হচ্ছিল, যা নতুন রেকর্ড গড়তে পারত। কিন্তু সাম্প্রতিক উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতি, বিশেষ করে ‘চিকেনস নেক’ বা শিলিগুড়ি করিডরকে কেন্দ্র করে নিরাপত্তা হুমকি দেখা দেওয়ায় পর্যটকরা নিজেদের সফর বাতিল করছেন বা সংক্ষিপ্ত করছেন।
ফলে পাহাড় ও ডুয়ার্স অঞ্চলে এখন কার্যত পর্যটক শূন্য অবস্থা তৈরি হয়েছে। জুন মাসের জন্যও আগাম বুকিং প্রায় নেই বললেই চলে। হিমালয়ান হসপিটালিটি অ্যান্ড ট্যুরিজম ডেভেলপমেন্ট নেটওয়ার্কের সভাপতি সম্রাট স্যান্যাল জানান, “আমার একার প্রায় ২১ লক্ষ টাকার বুকিং বাতিল হয়েছে। সব ট্যুর অপারেটরের ক্ষতির হিসাব করলে সংখ্যাটা ভয়াবহ হবে। আমার অনুমান, এ বছর পর্যটন খাতে ক্ষতির পরিমাণ ৫০ শতাংশ ছাড়িয়ে যাবে।”
তিনি আরও বলেন, “এবারের ক্ষতির জন্য শুধু যুদ্ধ পরিস্থিতিই দায়ী নয়। পর্যটনের ভরা সময়ে ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক বন্ধ রেখে মেরামতের কাজ করাটাও প্রধান কারণ। কেউই এত টাকা খরচ করে এসে ট্র্যাফিক জ্যামে পড়তে চায় না।” রাজ্য ইকো ট্যুরিজম কমিটির চেয়ারম্যান রাজ বসু বলেন, “পরিস্থিতি অত্যন্ত উদ্বেগজনক। আমরা পর্যটকদের নিরাপত্তার আশ্বাস দিচ্ছি, কিন্তু তাতে সেভাবে সাড়া মিলছে না।”