বাংলাদেশে ভারতের ‘চিকেন নেক’ করিডরের কাছাকাছি একটি নতুন বিমানঘাঁটি তৈরি হতে পারে এই সম্ভাবনা নিয়ে বহুদিন ধরেই নানা মহলে আলোচনা চলছিল। সেই জল্পনায় নতুন মাত্রা যোগ করেছে সম্প্রতি চিনা প্রতিনিধিদের একটি সফর।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, চিনের একটি প্রতিনিধি দল সম্প্রতি বাংলাদেশের রংপুর বিভাগের লালমনিরহাট জেলায় পরিদর্শনে যায়। সেখানে বিমানঘাঁটি তৈরির সম্ভাব্য পরিকল্পনা নিয়েই এই সফর বলে অনুমান। জানা গিয়েছে, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় লালমনিরহাটে একটি সক্রিয় বিমানঘাঁটি ছিল, যা পরবর্তীতে পাকিস্তানি এবং তারপর বাংলাদেশের বায়ুসেনা ব্যবহার করত।
আরও পড়ুন: বুটিক ব্যবসায় লাভ দেখতে গিয়ে এত বড় ভুল! খোয়াতে হল বসতবাড়ি
২০১৯ সালে সেখানে বাংলাদেশ অ্যারোস্পেস ও অ্যাভিয়েশন ইউনিভার্সিটির একটি ক্যাম্পাস নির্মাণের জন্য জমি বরাদ্দ করা হয়। কিন্তু এখন সেই পুরনো জমিতে নতুন করে বিমানঘাঁটি স্থাপনের পরিকল্পনা করছে ইউনুস সরকারের নেতৃত্বাধীন প্রশাসন। মার্চ ২০২৫-এ বাংলাদেশ সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে এই প্রকল্পের ঘোষণা করে।
এই সম্ভাব্য বিমানঘাঁটির অবস্থান ভারতের সীমান্ত থেকে মাত্র ২০ কিলোমিটার দূরে। ফলে ভারতের নিরাপত্তা সংক্রান্ত সংস্থাগুলিও বিষয়টি গভীর পর্যবেক্ষণে রেখেছে। বিশেষ করে যদি এই ঘাঁটি কোনওভাবে চিন বা পাকিস্তানের মতো দেশের সহায়তায় ব্যবহৃত হয়।
এদিকে উত্তরবঙ্গের তিস্তা এলাকায় ভারতীয় সামরিক বাহিনী সম্প্রতি ‘তিস্তা প্রহার’ নামে একটি বড়সড় সামরিক মহড়া চালায়। শিলিগুড়ির কাছে চিকেন নেক করিডরের আশপাশেই চলে এই মহড়া, যাতে অংশ নেয় ভারতীয় সেনার বিভিন্ন শাখা ইনফ্যানট্রি, আর্টিলারি, আর্মড কোর, অ্যাভিয়েশন, ইঞ্জিনিয়ার এবং সিগনাল ইউনিট।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই মহড়ার সময়কাল ও অবস্থান এই ইঙ্গিত দেয় যে ভারত পূর্ব সীমান্তের সম্ভাব্য নিরাপত্তা ঝুঁকির প্রতি সজাগ রয়েছে। বিশেষ করে, যখন বাংলাদেশের কট্টরপন্থী কিছু নেতার তরফে উত্তর-পূর্ব ভারতকে বিচ্ছিন্ন করার মতো উস্কানিমূলক মন্তব্য শোনা গিয়েছে, তখন এই সেনা মহড়া ঢাকাকে কিছুটা সতর্ক বার্তা হিসেবেই দেখা হচ্ছে।
সাম্প্রতিক ভূরাজনৈতিক পরিস্থিতি ও চিনের গতিবিধি ঘিরে দক্ষিণ এশিয়ায় যে উত্তেজনার বাতাবরণ তৈরি হয়েছে, তাতে এই বিমানঘাঁটি ও সেনা মহড়া ঘিরে ভবিষ্যতে আরও অনেক কূটনৈতিক জটিলতা দেখা দিতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশ্লেষকেরা।