Child Psychology: প্রত্যেক শিশুর মধ্যেই বাস করেন স্বয়ং ঈশ্বর। শিশুরা হল মাটির তালের মতো, তাদের যেমনভাবে গড়া হয় তারা তেমনই রূপ ধারণ করে। ছোট বয়সে তাদের বিচারের ক্ষমতা থাকেনা কোনটা ঠিক আর কোনটা ভুল। তাই ওই বেড়ে ওঠার বয়সে তাদের মন থাকে অত্যন্ত সংবেদনশীল। ওই সময় শিশুর প্রয়োজন কাছের মানুষদের ভালোবাসা ও যত্ন। শিশুর বেড়ে ওঠার ক্ষেত্রে পারিপার্শ্বিক পরিবেশ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। পরিবেশের ওপরেই নির্ভর করে শিশু পরবর্তীকালে কেমন আচরণ করবে।
তাই এইসময় শিশুর মধ্যে সুঅভ্যাস গঠন করা যেমন জরুরী তেমনই জরুরী তার মস্তিষ্কের বিকাশসাধন। শিশুদের বিকাশের শুরুর বছরগুলিতে তাদের মস্তিষ্ক কিছু শেখার ও জানার জন্য দ্রুত বিকশিত হয়। এই সময় বাবা মা গুরুজনের কোনও ভুল সিদ্ধান্ত তাদের মনের মধ্যে ক্ষত তৈরি করতে পারে। এই প্রতিবেদনের মাধ্যমে এমন কিছু বিষয় তুলে ধরবো যা শিশুদের মনের ওপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে। এই বিষয়গুলোর ওপর মা বাবা আগেভাগেই গুরুত্ব না দিয়ে অবহেলা করলে বড় বিপদের মুখে পড়তে পারে সন্তানের ভবিষ্যত।
প্রথমত, এটা ভীষণ ভাবে দেখা যায় যে বাবা মা তার ছোট সন্তানের সঙ্গে তার সমবয়সী কারোর তুলনা করছে। বিশেষত পড়াশুনার ক্ষেত্রে। অন্য কারোর সাথে এই তুলনা করা মোটেই উচিত নয়। কারণ এতে শিশুর আত্মবিশ্বাস নষ্ট হতে পারে। পাশাপাশি শিশুর মধ্যে ছোট বয়স থেকেই হীনমন্যতার (Child Psychology) অনুভূতি তৈরি হতে পারে।
দ্বিতীয়ত, ছোটবেলায় শিশুরা যা দেখে তাই তারা অনুকরণ করে। তাই তাদের সামনে নেতিবাচক কথার ভিড় জমতে দেবেন না। অকারণে ‘তোর দ্বারা কিছু হবে না’ এমন মন্তব্য করে তাদের মধ্যে হতাশার অনুভূতি তৈরি করবেন না। এর ফলে তারাও ধীরে ধীরে নেতিবাচক মনোভাব পোষণ করতে শুরু করে যা শিশুর বেড়ে ওঠার পথে বাঁধা হয়ে দাঁড়ায়। সর্বদা ইতিবাচক কথা বলে তাদের মধ্যে বাড়তি সাহস ও শক্তির সঞ্চয় করবেন।
তৃতীয়ত, শিশুরা হল ফুলের মতই কোমল ও সুন্দর। তাই তাদের সামনে অপরকে হিংসা করার মতো কোনও কথা বলবেন না। এর ফলে তাদের মধ্যে ভয় কাজ করতে শুরু করে। যা ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে পারে তাদের বিকাশের ক্ষেত্রে। শিশুদের মনকে (Child Psychology) সুন্দর করে তুলতে তাদের সামনে অপরকে ভালোবাসার কথা বলুন।
আরও পড়ুন: আপনিও কী চা-কফির ভক্ত? দীর্ঘক্ষণ বানিয়ে রেখে মুখে তুললে তা কিন্তু বিষের সমান
চতুর্থত, ছোট বয়স থেকেই শিশুদের থেকে বাড়তি প্রত্যাশা করে তাদের মানসিক স্বাস্থ্য নষ্ট করবেন না। প্রত্যেক শিশুর চাহিদা, শেখার ও বোঝার ক্ষমতা আলাদা। তাই ছোট বয়স থেকেই এই বাড়তি চাপ না দিয়ে বরং সে নিজের চেষ্টায় যতোটুকু করছে তাতে উৎসাহ দান করুন।
পঞ্চমত, মা বাবা অনেকসময় ব্যস্ততার মাঝে নিজের শিশুকে অবহেলা ও উপেক্ষা করে। যা তাদের মধ্যে একাকীত্ব বোধ তৈরি করে। যার ফলে ভবিষ্যতে তারাও কারোর সাথে মিশতে পারেনা ভালো করে। তাদেরকে উপেক্ষা না করে বরং সবসময় সময় ও ভালোবাসা দিন।
ষষ্ঠত, মা বাবার একমাত্র সন্তান হলে শিশুকে তারা সবসময় আগলে রেখে অতিরিক্ত সুরক্ষা দিয়ে থাকে। এর ফলে তার নিজের ভুল সংশোধন করার ইচ্ছা ক্রমশ হারিয়ে যায়। চলার পথে স্বাবলম্বী না হয়ে সে নির্ভরশীল হয়ে পড়ে। যা তার ভবিষ্যতে একাধিক সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে। তাই যতোটুকু সুরক্ষা দেওয়া প্রয়োজন ততটুকু দিয়ে, শিশুকে (Child Psychology) একলা চলতে দেওয়াও উচিত।