ব্যান TikTok-এ বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে থাকা সাংসদ নুসরতের কিছু ভিডিও

নিজস্ব প্রতিবেদন : জনপ্রতিনিধি ও বিনোদন দুনিয়ার প্রথম সারির নায়িকা নুসরত জাহান তাঁর দ্বৈত ভূমিকায় তাল রাখতে গিয়ে বার বার বিতর্কে জড়াচ্ছেন। টিকটক নিয়ে তাঁর মন্তব্যে নতুন করে শোরগোল তুলেছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। চীনের সঙ্গে সাম্প্রতিক উত্তেজনায় যখন কেন্দ্র সরকার বন্ধ করেছে ৫৯টি চীনা অ্যাপ তখন সেই সিদ্ধান্ত সঠিক কিনা তা নিয়ে মন্তব্য করায় শুরু হয়েছে নতুন করে বিতর্ক।

যদিও নুসরত জানিয়েছেন, “জাতীয় সুরক্ষার কথা মাথায় রেখে এই সিদ্ধান্তকে সমর্থন জানাচ্ছি তবে কয়েক হাজার মানুষ যে কর্মহীন হয়ে পড়লেন সেই বিষয়টি কে দেখবে?”

সেই সঙ্গে নরেন্দ্র মোদী সরকারের দুর্ণীতি ঠেকাতে অর্থনৈতিক সিদ্ধান্তগুলির কার্যকারিতা নি‌য়েও প্রশ্ন তোলেন। এই মন্তব্যের পিছনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কৌশলি ভূমিকা আছে বলেই রাজনৈতিক মহলের অনেক মনে করছেন। যদিও নুসরত জাহান সাংসদ হলেও তিনি একজন জনপ্রিয় অভিনেত্রী ও টিকটকে তরুণ প্রজন্মের অন্যতম জনপ্রিয় মুখ। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নুসরত জাহানকে সংসদীয় রাজনীতে নিয়ে আসার পর থেকেই রাজনৈতিক মহলে ও নেট দুনিয়ায় তিনি আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছেন। কখনো শাখা সিঁদুর পড়ে সংসদে হাজির হয়ে একদিকে যেমন প্রশংসা কুড়িয়েছেন অন্যদিকে মৌলবাদীদের তীর্যক মন্তব্যের স্বীকার হয়েছেন।

আবার রামগোপাল বর্মার মতো পরিচালক লিখেছিলেন, “দারুণ, বাংলার নতুন সাংসদ মিমি চক্রবর্তী ও নুসরত জাহান। দেশ সত্যিই এগোচ্ছে। নতুন এই সাংসদের চোখে দেখেও শান্তি।” এই মন্তব্য নিয়ে বিস্তর জলঘোলা হয় সেইসময় টিকটকে তাঁর ভিডিও পোষ্টগুলি একের পর এক বিতর্কের ঝড় তুলেছে।

 

View this post on Instagram

 

A post shared by Nusrat Jahan (@nusrat_jahanofficial) on

গতবছর ডিসেম্বর মাসে সিএএ আইন নিয়ে সারা দেশের সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গেও বিরোধীতা চরম আকার নিয়েছিল। সংসদীয় এলাকা বসিরহাটে যখন চরম উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছিল সেইসময় টিকটকে ইয়াদ পিয়া গানের একটি ভিডিও পোষ্ট করেন নুসরত জাহান। তাতে দেখা যায় তিনি কালো ক্রম্প টপ ও জিন্স পরে নাচছেন।

লকডাউনের সময় বসিরহাটের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বাদুড়িয়া এলাকায় যখন জনতা-পুলিশ খন্ডযুদ্ধ চলছে, সেইসময়েও ক্রপ টপ, হট প্যান্টে ‘সেভেজ’ গানের টিকটক ভিডিয়ো পোস্ট করেন। যা নেটিজেনদেরও কাছে আপত্তিকর ঠেকেছিল। এমনকি সূর্যকান্ত মিশ্র ট্যুইট করে তীর্যক মন্তব্য করেছিলেন। যদিও সূর্যকান্ত মিশ্র ওই ভিডিও দেখার সময় পেয়েছেন বলে নুসরতের ফ্যানেরা সূর্যকান্তকে ট্রোল করতে শুরু করেন।

তবে নুসরত জাহান যে এই সব সমালোচনার তোয়াক্কা করেন না তা তিনি স্পষ্ট ভাবে জানিয়ে দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, “শিল্পীর কাজ সবসময় বিনোদনের রসদ জুগিয়ে যাওয়া। হ্যাপি ট্রোলিং, ট্রোলারস।”

সমালোচনার মাঝেই জেনিফার লোপেজের তালে তাল মিলিয়ে নাচতে দেখা গেছে আরও একটি টিকটক ভিডিওতে। নতুন প্রজন্ম ও নেটিজেনরা নুসরাতকে সমর্থন জুগিয়ে চলেছেন। অবশ্য সেই সঙ্গে একজন সাংসদের আচরণ কেমন হওয়া উচিত তা নিয়েও উঠছে প্রশ্ন। নুসরত জাহান ২০১৮ সালের এপ্রিল মাসে টিকটকে যোগ দেন। আর দুবছরের মধ্যেই অর্থাৎ ২০২০ সালের মধ্যেই তাঁর ফলোয়ার সংখ্যা ১৪ লক্ষ ছাড়িয়ে গেছে। নুসরতের বক্তব্য, অনান্য সোশ্যাল মিডিয়ার মতো এটিও তাঁর কাছে তাঁর ফ্যানদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখার মাধ্যম। এটি বন্ধ হয়ে গেলেও ইন্সটাগ্রাম, টুইটারে যোগাযোগ থাকবে কিন্তু টিকটকের সঙ্গে যাদের রুটি রোজগার জড়িয়ে আছে তাঁরা সমস্যায় পড়বেন।
তবে সমালোচকরা অভিনেত্রীকে মনে করিয়ে দিয়েছেন, তাঁর সংসদীয় এলাকা বসিরহাট এক জনবহুল সংখ্যালঘু প্রধান অঞ্চল। সেখানে অর্থনৈতিক ভাবে পিছিয়ে থাকা মানুষদের সঙ্গে যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম প্রত্যক্ষ সংযোগ। সেখানে কিন্তু টিকটক নেই।