মুছে যাবে ধর্মীয় বিভেদ! বাংলার দুই মুসলিমের তৈরি মূর্তি বসবে অযোধ্যার রাম মন্দিরে!

নিজস্ব প্রতিবেদন : দীর্ঘ আন্দোলনের পর অবশেষে সুপ্রিম কোর্টের রায়ে অযোধ্যার বিতর্কিত জমি গিয়েছে রাম মন্দিরের কোর্টে। সুপ্রিম কোর্টের রায় বের হওয়ার পরই সেখানে তোড়জোড় তৈরি হয় রাম মন্দির (Ayodhya Ram Mandir) নির্মাণের। আদালতের নির্দেশের পর ২০২০ সালে রাম মন্দির নির্মাণের জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। এরপর ধাপে ধাপে শুরু হয় মন্দির নির্মাণের কাজ।

মন্দির নির্মাণের কাজ দেখতে দেখতে প্রায় দু’বছরের বেশি সময় পার হতে চলেছে আর এবার এই মন্দিরের দ্বারোদঘাটনের তা ভক্তদের জন্য খুলে দেওয়ার পালা। নতুন বছরের শুরুতেই রাম মন্দিরের উদ্বোধন হয়ে যাবে এবং তার কিছুদিনের মধ্যেই ভক্তদের জন্য খুলে দেওয়া হবে রাম মন্দিরের গর্ভ গৃহ। রাম মন্দির নির্মাণের জন্য যে অর্থের প্রয়োজন ছিল দেশ-বিদেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে ভক্তদের অনুদানে সেই ভান্ডার এখন পরিপূর্ণ। এর পাশাপাশি এই মন্দির যেভাবে তৈরি করা হচ্ছে তাতে করে ৬.৫ রিখটার স্কেলে ভূমিকম্প থেকে শুরু করে অন্যান্য প্রাকৃতিক দুর্যোগ অনায়াসে সহ্য করে নেবে। এর পাশাপাশি এই মন্দির আগামী ১০০০ বছর সংস্কারের প্রয়োজন হবে না বলে দাবি করা হচ্ছে।

মন্দির নির্মাণের শুরু থেকেই মন্দির কর্তৃপক্ষ জাতি ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে বিবিধের মাঝে মিলনের বার্তা দিয়ে আসছে। সেই মতো বিশ্বের বেশ কিছু মুসলিম অধ্যুষিত রাষ্ট্রনেতাদেরও মন্দির উদ্বোধনের সময় আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। মনে করা হচ্ছে তারা মন্দির উদ্বোধনের দিন উপস্থিত থাকবেন। তবে এসবের মধ্যেই এবার এমন একটি খবর সামনে এলো যার সঙ্গে যোগ পাওয়া গেল বাংলার সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের। কেননা বাংলার দুই মুসলিম শিল্পীর হাতে তৈরি মূর্তি বসবে রাম মন্দিরে।

রাম মন্দিরে রামলালার মূর্তি ছাড়াও মন্দিরের বিভিন্ন জায়গায় থাকবে রাম, সীতা, হনুমান সহ অন্যান্য দেবদেবীদের মূর্তি। সেই সব মূর্তির মধ্যে পশ্চিমবঙ্গের দুই শিল্পীর মূর্তি সেখানে প্রতিষ্ঠা করা হবে। আগামী বছর ২২ জানুয়ারি রাম মন্দির উদ্বোধনের আগেই এই মূর্তি পাঠানোর জন্য এখন তোড়জোড় চলছে। তারা এখন অযোধ্যাতে কাজ করছেন মূর্তি নির্মাণের। এই খবর সামনে আসার পরই যেমন জাতি ধর্মের ভেদাভেদ এক নিমেষে দূর হয়ে গিয়েছে, ঠিক সেই রকমই রাম মন্দিরে বাংলার যোগ বাংলাকে আরও গর্বিত করছে।

বাংলার যে দুজন শিল্পী এখন অযোধ্যার রাম মন্দিরে রামের মূর্তি তৈরিতে ব্যস্ত তারা হলেন উত্তর ২৪ পরগনার জামালউদ্দিন এবং তার ছেলে বিট্টু। অনলাইনে তাদের শিল্পকলা দেখে মুগ্ধ হন রাম মন্দির কর্তৃপক্ষ এবং তার পরই তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। সেই যোগাযোগের ভিত্তিতেই তারা অযোধ্যার রাম মন্দিরে রামমূর্তি সহ বিভিন্ন মূর্তি তৈরীর বরাত পান। জানা গিয়েছে, মহম্মদ জামালউদ্দিন অযোধ্যার রাম মন্দিরের জন্য যে মূর্তি তৈরি করছেন সেগুলি ফাইবারের মূর্তি। এগুলির খরচ ২.৮ লক্ষ টাকা। তবে এইসব মূর্তি মাটির মূর্তির তুলনায় অনেক বেশি টেকসই।