চলাফেরা করলেই হবে মোবাইল চার্জ, অভিনব আবিষ্কার দুই কিশোরের

Sangita Chowdhury

Updated on:

নিজস্ব প্রতিবেদন : আবিষ্কার সবসময়ই নতুন কিছু দেখায়। যা ছিল না আগে, তাকে উদ্ভব করাকেই আবিস্কার বলে। তাই আবিষ্কার সবসময়ই চমকপ্রদ হয়। কিন্তু ফোনে চার্জ দিলেই শারীরিকভাবে ফিট থাকা সম্ভব! এমন কথা হয়তো কেউ কল্পনাও করতে পারেন না। কিন্তু যা কল্পনার বাইরে তাই আবিষ্কার করলেন
দিল্লির দুই কিশোর।

মোহাক ভাল্লা ও আনন্দ গঙ্গাধারণ যখন দশম শ্রেণীর পড়তেন, তখনই তারা নতুন আবিষ্কারের বিষয়ে মনস্থির করেন। আর তারপর পদার্থবিদ্যার একটি থিওরি কাজে লাগিয়ে তারা বানিয়ে ফেলেন অভিনব এক চার্জার।

তাদের আবিষ্কৃত এই চার্জারের নাম মোবি চার্জার। এটি এমন একটি যন্ত্র যা আপনাকে একই সাথে শারীরিকভাবে ফিট করবে এবং মোবাইলও চার্জ হবে। এই যন্ত্র হাঁটার সময় গতিশক্তিকে বিদ্যুৎ শক্তিতে রূপান্তর করে দেবে। আর এই বিদ্যুৎ শক্তির ফলে এই মোবাইলে চার্জ হবে।

যখন কোন মানুষ হাঁটবেন তখন এই যন্ত্রটি জুতোর মধ্যে লাগানো থাকবে। আর তার সাথে বিদ্যুতের তার দিয়ে চার্জার জোড়া থাকবে মোবাইলে। তারপর মানুষ যখন হাঁটবে তখন গতিশক্তি বিদ্যুৎ শক্তিতে রূপান্তরিত হবে‌। সাধারণ বৈদ্যুতিক চার্জারের তুলনায় এই চার্জারে কুড়ি শতাংশ বেশি দ্রুততার সাথে চার্জ হবে।

মোহক এখন দিল্লির ভারতী বিদ্যাপীঠ কলেজ অফ ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ছাত্র আর আনন্দ পড়ছেন চেন্নাইয়ের ভেলোর ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজিতে। কিন্তু পড়াশোনার ফাঁকেও চলছে তাদের আবিষ্কারের উপর কাজ।যন্ত্রটিকে আরও নতুনভাবে আপগ্রেড করার জন্য তারা চেষ্টা ও পরিশ্রম করছেন। তাদের আশা আগামী দু এক বছরের মধ্যেই এই যন্ত্রটি বাজারে চলে আসবে।

কিন্তু অভিনব এই পরিকল্পনা কী ভাবে মাথায় এলো তাদের?

বিদেশে এরকম একটা প্রজেক্টের কথা শুনেই নাকি দুজনে উৎসাহিত হয়েছেন এই ব্যাপারে কাজ করতে। বিদেশে নাকি রেলের সব প্ল্যাটফর্ম আলোকিত হয় যাত্রীদের চলাফেরা থেকে উৎপন্ন শক্তি দিয়েই। তারাও চেয়েছিলেন এমন কিছু করতে যার ফলে গতি শক্তিতে রূপান্তরিত করা যায় বিদ্যুৎ শক্তিতে। এত কিছু জিনিসের মধ্যে থেকে তারা মোবাইলকে বেছে নিয়েছিলেন, মোবাইলের সর্বজনীন চাহিদার কথা মাথায় রেখে। এখনকার যুগে ছোট থেকে বড় সকলের হাতেই ঘুরে বেড়াচ্ছে মোবাইল। তাই এরকম একটা যন্ত্র তৈরি করতে পারলে তার বাজার চাহিদাও থাকবে।

এই কাজটি করতে মোহক ও আনন্দ তাদের পরিবার ও স্কুলের শিক্ষকদের সহযোগিতা লাভ করেছেন। এই যন্ত্রটি তৈরি করতে যাবতীয় জিনিসপত্র কেনার টাকাও দিয়েছিল পরিবার‌। এই যন্ত্রটা তৈরি করতে মোট তিন মাস সময় লেগেছিল তাদের।

কী ভাবে কাজ করে এই যন্ত্রটি?

দুই পায়ে জুতোর সাথে এই যন্ত্রটি লাগানো থাকবে হাঁটা-চলার সময় যে শক্তি তৈরি হবে তা ব্যাটারীতে জমে থাকবে। আর এই ব্যাটারির মাধ্যমেই চার্জ হবে ফোন।

মডেলটি তৈরি করতে তাদের কত খরচ হয়েছিল?

প্রথম যখন এই মডেলটি তারা বানায় তখন তাদের খরচ হয়েছিল মোটে ২ হাজার টাকা। কিন্তু অনেকগুলি পরিমাণ একসঙ্গে তৈরি করা হয়ে গেলে এর খরচ হবে ৫০০ টাকা। আর ৫০০ টাকায় এই যন্ত্রটি কেনা মানুষের সাধ্যের মধ্যেই হবে। এখন তারা দু’জনই চেষ্টা করছেন এই যন্ত্রটিকে আরও আপগ্রেড করার। আমরাও প্রত্যাশায় থাকবো আগামীতে মোবি চার্জার হাতে পাওয়ার জন্য।