তেলেভাজা আর চা, পছন্দের তালিকায় আর কী কী ছিল নেতাজির

নিজস্ব প্রতিবেদন : দেশনায়ক নেতাজিকে চেনেন না এমন কেউ নেই। কিন্তু এর পরেও তিনি একজন খুবই সাধারণ আড্ডাবাজ বাঙালিও ছিলেন। যিনি মাঝে মধ্যেই পছন্দ করতেন সকলের সঙ্গে আড্ডা দিতেন। আর আড্ডার সঙ্গেই তিনি ভালোবাসতেন মুড়ি-তেলেভাজা আর গরম গরম চা।

ভারতবর্ষের স্বাধীনতা সংগ্রামের ৭৫ বছর পূর্তি উদযাপন করে ফেলেছে সকলে। সবাই অনেক আনন্দ ও গর্বের সাথে করেছে পতাকা উত্তোলন। ঘর ঘর তেরঙ্গা নামের এক কর্মসূচির ডাক দিয়েছিলেন মোদি সরকার। দেশের সব বাড়িতে ১৪ এবং ১৫ তারিখ পতাকা উত্তোলনের কথা বলা বলেছিলেন তিনি। তার কথা মত জাতীয় পতাকাকে ভালোবেসে সকলে মেনেও নিয়েছিল সে কথা। কারণ পতাকা মানেই স্বাধীনতার প্রতীক। আর এই স্বাধীনতা এসেছিল বাঙালি বীর সুভাষ চন্দ্র বসুর হাত ধরে। তাই এখানে বাঙালির গর্বও ছিল দ্বিগুণ।

সুভাষচন্দ্রকে চেনে না আর তার বলিদান সম্পর্কে জানে না এমন মানুষ বিরল। তিনি আদ্যোপান্ত বাঙালি হলেও তাঁর চেহারায় সাহেবি ছাপ পাওয়া যায়। আর সেই তিনিই আজাদ হিন্দ ফৌজ তৈরি করে ব্রিটিশ শাসকদের নাকে দড়ি দিয়ে ঘুরিয়েছিলেন। তবুও মন থেকে বাঙালিয়ানা কমেনি একটুও। তিনি পাড়ার তেলেভাজার দোকানে চপ মুড়ি, বেগুনী, পেঁয়াজি খেতে পছন্দ করতেন ভীষণ। আর তার সাথেই জমে উঠত তাঁর তর্কের আড্ডা।

এমন গল্পও শোনা যায় যে, কলকাতা শহরের যে তেলেভাজার দোকানে বসে চপ মুড়ি খেতে খেতে পাড়ার সহযোদ্ধাদের সঙ্গে তর্কে মশগুল হতেন, বর্তমানে সেই দোকানটি প্রতিবছর নাকি সুভাষ চন্দ্র বসুর জন্মদিন বেশ বড় করে উদযাপন করে থাকে। ১৯১৮ সালে তৈরি হয়েছিল সেই লক্ষ্মী নারায়ণ অ্যান্ড সন্স। আর এই দোকানের তেলেভাজা খেতে ভালোবাসতেন সুভাষ। আর এই দোকানটি এখনও নাকি নেতাজির জন্মদিনের দিন সকলকে বিনা পয়সায় তেলেভাজা বিলি করে থাকেন।

১৯৯৬ সালে ঘরেবন্দি করে রাখা হয়েছিল সুভাষকে। দার্জিলিঙের একটি বাংলোয় রাখা হয়েছিল তাঁকে।সুভাষ বাঙালি ছেলে জেনেও ব্রিটিশরা যখন তাঁকে বন্দি করে রেখেছিল, তখন তাকে তারা সকালে ব্রিটিশ খাবার খেতে দিত। সেখানে তিনি সেই ব্রিটিশ ব্রেকফাস্টই খেতেন তিনি। ব্রেড, পুডিং এই জাতীয় খাবার খেতে হতো তখন তাকে। তবে তার এই খাবার খাওয়ার মধ্যে ছিল অন্য এক পরিকল্পনা। কারণ পাউরুটি মধ্যে করে তথ্য এবং খবরাখবর পাচার করতেন তিনি। বাইরে থাকা স্বাধীনতা সংগ্রামীদের সঙ্গে যোগাযোগ করতেন পাউরুটির ভেতরে চিঠি পাঠিয়ে। ৬ মাস দার্জিলিঙের সেই বাংলোয় নজরবন্দি থাকলেও তাকে আটকে রাখতে পারেননি ব্রিটিশরা।