Shiv Chaturdashi: জানেন কি কবে পালন করা হয় শিবচতুর্দশী? হিন্দু পঞ্জিকা দেখলে জানতে পারবেন যে, প্রতি মাসের কৃষ্ণপক্ষের চতুর্দশী তিথিতে মাসিক শিবরাত্রির উপবাস ও পুজো করা হয়, কিন্তু ফাল্গুন মাসের চতুর্দশী তিথি মহাশিবরাত্রি হিসেবে পালন করা হয়। শ্রাবণ মাস, প্রদোষ ব্রত, সোমবার, মাসিক শিবরাত্রি এবং মহাশিবরাত্রি উৎসব ভগবান শিবের উপাসনা এবং আশীর্বাদ পাওয়ার জন্য বিশেষ তিথি সবকিছুই শিবের আরাধনার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
সাধারণত শিবরাত্রি (Shiv Chaturdashi) পালন করা হয় প্রতি বছর ফাল্গুন মাসের কৃষ্ণপক্ষের চতুর্দশী তিথিতে। হিন্দু ধর্মের মানুষের কাছে এর মাহাত্ম্য অনেক বেশি। যদিও হিন্দু শাস্ত্র অনুসারে, প্রতি মাসের কৃষ্ণপক্ষের চতুর্দশী তিথিতে মাসিক শিবরাত্রি উপবাস ও পুজো করা হয়, তবে ফাল্গুন মাসের চতুর্দশী তিথি বিবেচিত হয় মহাশিবরাত্রি হিসেবে। গোটা দেশের শিবভক্তরা বিভিন্ন শিব মন্দিরে ভিড় জমায় এই বিশেষ দিনে। বিভিন্ন মন্দিরে শিবলিঙ্গের জলাভিষেক করা হয় আচার মেনে, কেন হিন্দুধর্মে এত ধুমধাম করে পালন করা হয় মহাশিবরাত্রি?
শিবরাত্রির অর্থ হল ভগবান শিবের রাত্রি। পৌরাণিক মত অনুসারে জানা যায় যে, এই বিশেষ দিনে নাকি ভগবান শিবের সঙ্গে পার্বতীর বিবাহ হয়েছিল। ভক্তরা ভগবান শিবের আরাধনায় ফাল্গুন মাসের কৃষ্ণ পক্ষের চতুর্দশীতে পালন করে শিবরাত্রি (Shiv Chaturdashi)। যেখানে অন্যান্য সমস্ত দেবতাদের পুজো করা হয় দিনের বেলায় তাহলে কেন শিবের পুজো হয় রাতে? অনেকের মনেই এই প্রশ্নও দানা বেঁধেছে। ভগবান শিব তমোগুণ সম্পন্ন। সুতরাং তমোময়ী রাত্রি শিবের পছন্দ। তা ছাড়া শিবের অনুচররা নন্দী, ভৃঙ্গী, ভুত, প্রেতগণ রাত্রিবেলা চলাফেরা করতে বেশি পছন্দ করে। কৃষ্ণপক্ষের চতুর্দশীতে চাঁদ সম্পুর্ন রূপে ক্ষীণ থাকে। জীবের ভিতরে তামসী প্রবৃত্তি বৃদ্ধি পায়। সংহারের পর নতুন সৃষ্টি অনিবার্য, ফাগুন মাসে সাধারনত গাছের পাতা ঝরে যায় এবং বৈশাখে গিয়ে নতুন পাতা গজায়। এর থেকেই বোঝা যায় শিবের মাহাত্ম্য এবং নতুনের সৃষ্টি।
আরও পড়ুন: ভুলেও এই কাজ করবেন না মহাশিবরাত্রিতে, রুষ্ট হবেন মহাদেব
আসলে কে শিব?
শিব হলেন হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সর্বোচ্চ দেবতা। শিবকে পুজো করা হয় সনাতন ধর্মের শাস্ত্রসমূহে পরমসত্ত্বা রূপে। তিনি হলেন সৃষ্টি-স্থিতি-প্রলয় এই তিন কারকের কারণ। তিনি সমসাময়িক হিন্দুধর্মের তিনটি সর্বাধিক প্রাচীন সম্প্রদায়ের অন্যতম শৈব সম্প্রদায়ের প্রধান দেবতা। তিনি শুরু এবং তিনিই শেষ। তাকে আদিশক্তি হিসেবে মনে করা হয়।
শিবরাত্রি পালন করলে কি উপকারিতা পাওয়া যায়?
ভক্তরা যদি মন দিয়ে মহাশিবরাত্রির (Shiv Chaturdashi) ব্রত পালন করে তাহলে তারা পাবে আধ্যাত্মিক শান্তি। এই আধ্যাত্মিকতা লাভ করার মধ্য দিয়েই পাবে শিবের আশীর্বাদ। এটি মন ও শরীরকে পবিত্র করে এবং সমস্ত রকম নেতিবাচক প্রবণতাকে দূর করে জীবনে প্রতিষ্ঠা করবে ইতিবাচক দিক।
শিবের আরাধনার সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে সম্পর্কযুক্ত বলে এই মহারাত্রিকে বলা হয় মহাশিবরাত্রি। শিবরাত্রির উৎসবটি হলো শিবের দৈব অবতারের একটি শুভ উৎসব। নিরাকার থেকে আকারে তাঁর অবতারের রাতকে বলা হয় মহাশিবরাত্রি। শিব সনাতন হিন্দু ধর্মের এমন একজন দেবতা যিনি মানুষকে কাম, ক্রোধ, লোভ, আসক্তি, হিংসা ইত্যাদি থেকে মুক্ত করেন এবং পরম সুখ, শান্তি ও ঐশ্বর্য দান করেন।