নিজস্ব প্রতিবেদন : হোলি বা দোল মানেই আনন্দ। এই দিনে সকলেই মেতে ওঠেন নিজেদের মধ্যে রঙ মাখিয়ে আনন্দ উপভোগ করতে। কিন্তু হোলি বা দোলকে মজায় পরিণত করতে অনেকের মধ্যেই লক্ষ্য করা যায় বেশ কিছু অমানবিক চরিত্র। মজা পেতে প্রতিবছরই লক্ষ্য করা যায় এক শ্রেণীর মানুষ পথে থাকা কুকুরদের গায়ে রং লাগিয়ে দেয়। তবে শুধু কুকুরই নয়, বাদ যায় না অবলা গরু, ছাগল, বিড়াল এবং অন্যান্য প্রাণীরাও। ওই এক শ্রেণীর মানুষের মধ্যে এরকম প্রবণতা কমানোর জন্য সোশ্যাল মিডিয়া এবং সরকারি ভাবে নানান প্রচার চালানো সত্ত্বেও একই চরিত্র প্রতিবছরই ধরা পড়ে। হাজার সচেতনতা প্রচার তাদের মধ্যে ফিরিয়ে আনতে পারে না মানবিকতা। তবে এ বছর এসব প্রচার ছাড়িয়েও প্রশাসনের তরফ থেকে নেওয়া হয়েছে এক কঠোর পদক্ষেপ। কুকুর, বিড়াল, গরু, ছাগল ইত্যাদি অবলা প্রাণীদের উপর ইচ্ছাকৃতভাবে রং লাগালে হতে পারে ৬ মাসের জেল।
কিন্তু কেন এত বড় এবং কঠোর পদক্ষেপ? প্রাণী বিশেষজ্ঞরা জানান, পথ কুকুরদের পক্ষে রং মারাত্মক বিপদজনক। পশু চিকিৎসকদের মতে, মানুষের চামড়ার থেকে ছয় গুণ পাতলা হয় কুকুরের চামড়া। যার ফলে কুকুরের গায়ের রং দিলে সেই রং এর ক্ষতিকারক রাসায়নিক গুলি কুকুরের শরীরে অতি সহজে ঢুকে পড়ে। কুকুরের শরীরের কোষ গুলি ক্ষতে পরিণত হয়, যার ফলে মারাত্মক ক্যান্সারের মতো রোগও দেখা দেয়। এই ক্ষত আবার খুবই সংক্রামক। যার ফলে আক্রান্ত কুকুরের শরীর থেকে সেই রোগ সুস্থ কুকুরের গায়েও ছড়িয়ে পড়ে বা ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা থাকে। শুধু তাই নয় রঙে চাকা বিষাক্ত রাসায়নিক কুকুরের চোখে লাগলে কুকুর অন্ধত্বেও পরিণত হতে পারে। এছাড়াও রং লাগা অবস্থায় কুকুর তাদের গা চেটে পরিষ্কার করার সময় সেই রং তাদের পেটে যায় এবং রঙের বিষাক্ত রাসায়নিক তার কার্যকলাপ শুরু করে দেয় কুকুরের শরীরের মধ্যে। এসকল নানান সচেতনতামূলক প্রচার চালানো সত্ত্বেও পিচকিরির টার্গেট বন্ধ করা যায়নি কুকুরকে। আর তার জন্যই প্রশাসনের এমন কড়া পদক্ষেপ।
কুকুরের গায়ের রং লাগানোর বিষয়ে এমন কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বিধান নগর পুলিশ কমিশনারেটের তরফ থেকে বলে সূত্রের খবর। জানা গিয়েছে এবার হোলিতে কুকুরের গায়ের রঙ লাগালে ‘প্রিভেনশন অফ ক্রুয়েলটি টু অ্যানিম্যালস’ আইন অনুসারে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কুকুরের গায়ের রং লাগলে প্রথমবারের জন্য যদি সেই অপরাধ হয়ে থাকে তাহলে জরিমানা অথবা ৬ মাসের জেল হতে পারে। এসব বিষয় নজরদারি এবং দোলের দিন অশান্তি রুখতে থাকছে কড়া নজরদারি।