দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর অবশেষে বিদ্যাসাগর সেতু, অর্থাৎ দ্বিতীয় হুগলি সেতুর পুনর্নির্মাণ ও মেরামতের কাজ শুরু হতে চলেছে। সরকারি সূত্রে জানা গিয়েছে, আগামী জুন মাস থেকেই এই গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার অভিযান শুরু করার প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। যান চলাচল পুরোপুরি বন্ধ না করে, একটিমাত্র লেন সাময়িকভাবে বন্ধ রেখে ধাপে ধাপে কাজ এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছে প্রশাসন।
১৯৯২ সালের অক্টোবর মাসে উদ্বোধন হওয়া এই সেতুটি কলকাতা ও হাওড়ার মধ্যে যোগাযোগের একটি প্রধান মাধ্যম। প্রতিদিন লক্ষাধিক মানুষ এবং অসংখ্য যানবাহন এই সেতু ব্যবহার করে। ফলে দীর্ঘ সময়ের জন্য যান চলাচল বন্ধ রাখা কার্যত অসম্ভব। তাই পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে, বেশিরভাগ সংস্কারের কাজ রাতে সম্পন্ন করার। যদিও কিছু নির্দিষ্ট দিন ১০ থেকে ১২ ঘণ্টার জন্য একটি লেন সম্পূর্ণ বন্ধ রাখা হতে পারে বলেও জানানো হয়েছে, তবে এ নিয়ে এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি।
আরও পড়ুন: পাকিস্তান কি জল পাবে? ভারতের কড়া বার্তা, এবার নজরে PoK
নবান্নে রাজ্য প্রশাসনের দফতর স্থানান্তরের পর সেতুটির গুরুত্ব অনেকটাই বেড়েছে। উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা মনে করছেন, সেতুর কার্যকারিতা ও স্থায়িত্ব বজায় রাখতে সংস্কার এখন অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। প্রায় ২০০ কোটি টাকা ব্যয়ে এই কাজ বাস্তবায়িত হবে, যার দায়িত্ব পেয়েছে একটি অভিজ্ঞ জার্মান সংস্থা, যাঁরা কলকাতার একটি সংস্থার সঙ্গে যৌথভাবে এই প্রকল্পে অংশ নিচ্ছে।
প্রাথমিক পর্যায়ে দুর্বল হয়ে পড়া ২০টি ‘স্টে কেব্ল’ প্রতিস্থাপন করা হবে। এই কেবলগুলো সেতুর ভারসাম্য বজায় রাখতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এগুলি সেতুটিকে ওপরের দিকে টান দিয়ে কাঠামোগত ভারসাম্য রক্ষা করে। এরপর শুরু হবে ‘বিয়ারিং’ বদলের কাজ, যা সেতুর আরেকটি মূল ভারসাম্য রক্ষাকারী উপাদান।
সম্পূর্ণ প্রকল্প শেষ হতে সময় লাগতে পারে প্রায় ১৫ মাস। এই সময়ের মধ্যেই একদিকে মেরামতের কাজ সম্পন্ন করে, অন্যদিকে যান চলাচল সচল রাখা প্রশাসনের কাছে বড় চ্যালেঞ্জ। তবে এই প্রকল্প সফল হলে, ভবিষ্যতের জন্য সেতুর নিরাপত্তা ও স্থায়িত্ব অনেকাংশে নিশ্চিত হবে বলে মত বিশেষজ্ঞ মহলের।