নিজস্ব প্রতিবেদন : অর্থনৈতিক ডামাডোলের কারণে গত এক সপ্তাহ ধরেই ঊর্ধ্বমুখী শ্রীলঙ্কার খাদ্যশস্য থেকে অন্যান্য জিনিসপত্র। পরিস্থিতি এমনই ভয়ানক হয়ে দাঁড়িয়েছে, ২২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে চাল, ডিম বিক্রি হচ্ছে প্রতি পিস ৩০ টাকা, আটা ১৯০ টাকা কিলো, নারকেল তেল ৮৫০ টাকা লিটার, গুঁড়ো দুধ বিক্রি হচ্ছে ১৯০০ টাকা কেজি দরে। এমনকি এক পাতা প্যারাসিটামল ওষুধের দাম পড়ছে ১৪০ টাকা। দেশে জ্বালানি মজুতের পরিমাণ তলানিতে ঠেকেছে। যেটুকু পেট্রোল বাকি রয়েছে তা নেওয়ার জন্য ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে।
কিন্তু প্রশ্ন হলো হঠাৎ করে কেন এমন অবস্থা হয়ে পড়লেও সমুদ্রে ঘেরা এই দেশটির? শ্রীলঙ্কায় এমন পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে কোন যুদ্ধ অথবা জঙ্গি হামলা তো আর দায়ী নয়। কারণ এই দ্বীপ রাষ্ট্রে সাময়িক সময়ে এমন কোন ঘটনা ঘটেনি। এই দেশের এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে কেবলমাত্র সরকারের ভ্রান্ত নীতির কারণেই।
দেশের রাজাপক্ষের অবস্থা তথৈবচ। সাধারণ মানুষ চরম পরিস্থিতির মধ্যে এক মুঠো খাবারের জন্য হানাহানিতে নেমে পড়েছেন। দিনে ১০ ঘণ্টার বেশি বিদ্যুৎ বন্ধ রাখা হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে সাধারণ মানুষের মধ্যে বিক্ষোভ তৈরি হলে কার্ফু জারি করা হয়েছে এই ছোট্ট দেশটিতে।
শ্রীলঙ্কায় এমন পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার শুরুর দিক কিন্তু বিদেশি মুদ্রার ঘাটতি থেকেই। গত দেড় মাস ধরেই শোনা যাচ্ছিল এই দেশে জ্বালানি আমদানি করা বন্ধ রয়েছে। তবে এমন পরিস্থিতি কিন্তু হঠাৎ করে তৈরি হয়নি। ঋণের ডুবে থাকা এই দেশে সরকারের একের পর এক ভ্রান্ত নীতির পরিপ্রেক্ষিতে এমনটা তৈরি হয়েছে। চীনের মতো দেশের সঙ্গে বিদেশনীতি কড়া সমালোচনার মুখে পড়েছে।
শ্রীলঙ্কা করোনাকালে গত দু’বছর ধরে ১৪ বিলিয়ন ডলার হারিয়েছে। তবে এমন পরিস্থিতির মধ্যে প্রতিবেশী দেশের পাশে দাঁড়ানোর জন্য ভারত সরকার বিষয়টিকে সংবেদনশীলতার সঙ্গে দেখছে। ইতিমধ্যেই ভারত সরকারের তরফ থেকে ইন্ডিয়ান অয়েল কর্পোরেশন ৬০০০ এমটি তেল সিইলন ইলেট্রিসিটি বোর্ডকে দিয়েছে। এছাড়া প্রথম লপ্তে ৪০,০০০ টন চাল পাঠানো হয়েছে ভারতের তরফ থেকে। বহু শরণার্থী এখন ঠাঁই নিয়েছে দক্ষিণ ভারতে।