বর্তমান যুগে প্রায় প্রতিটি মানুষেরই হাতে রয়েছে স্মার্টফোন। আর ইন্টারনেটের সহজলভ্যতার ফরে প্রত্যেকেরই স্মার্টফোনে রয়েছে ইন্টারনেট কানেকশন। আর এই দুইয়ের যুগলবন্দিতে দুনিয়া এখন হাতের মুঠোয়। দেশ-বিদেশের ব্রেকিং নিউজগুলি সাথে আশ্চর্যকর ঘটনাগুলিও আমাদের কাছে সহজেই পৌঁছে যায়। সেই সাথে পৌঁছে যায় আজব আজব ঘটনা সমগ্র। ঠিক এমনই এক আজব খবর সামনে এসেছে এই নেট দুনিয়ার মাধ্যমে। আসলে বর্তমানে কর্মব্যস্ততার দুনিয়ায় মানুষের হাতে সময় খুবই কম। প্রত্যেকেই একটা ব্যস্ত জীবনযাত্রা মধ্য দিয়ে সময়কে অতিবাহিত করছে। ফলে শরীরচর্চার জন্য পর্যাপ্ত সময় নেই কারোর হাতেই।
এর ফলে শরীরে নানা রোগ এসে বাসা বাঁধছে। মুটিয়ে যাওয়া তো আছেই, তাছাড়াও ব্লাড সুগার, হাই কোলেস্টেরল, হাই ব্লাড প্রেসার, থাইরয়েড ইত্যাদির মতো নানা রোগ এসে শরীরে বাসা বাঁধছে ভুলে ভরা জীবন ধারা মেনে চলার কারণে। তবে প্রতিনিয়ত চর্চা ও শারীরিক কসরতের মধ্য দিয়ে জীবন অতিবাহিত করলে এমন সমস্ত রোগ সহজে মানুষের শরীরে বাসা বাঁধে পারেনা। আসলে কর্ম ক্ষেত্রে প্রয়োজনের তাগিদে অধিকাংশ মানুষই দিনের বেশিরভাগ সময় বসে কাটান। তবে এমন যদি হতো বাড়ি থেকে বেরিয়ে অফিসে যাওয়ার জন্য কিংবা অফিস থেকে বাড়ি আসার জন্য শরীর চর্চা করতে হবে তাহলে শত ব্যস্ততার মাঝেও মানুষ সময় বের করে শরীরচর্চায় মন দিতেন।
তবে এখানে হেঁটে বা দৌড়ে গিয়ে বাস ধরার কথা বলা হচ্ছে না। বলা হচ্ছে বাস ধরার টিকিট পাওয়ার জন্য দিতে হবে ২০টি স্কোয়াট। তাহলেই বিনামূল্যে পাবলিক বাসে যাওয়ার টিকিট পাওয়া যাবে। হ্যাঁ, অবাক হওয়ার কিছু নেই। ইউরোপের এক ছোট্ট দেশ রোমানিয়া, এমনই এক আজব নিয়ম চালু করেছে। আর এই খবর মিডিয়াতে আসতেই হইচই পড়ে গিয়েছে নেট দুনিয়ায়। আসলে জ্বালানি খরচ দিনের পর দিন বেড়ে চলায় এবং সেই সাথে অতিরিক্ত কার্বন নিঃসরণের ফলে ক্রমান্বয়ে জলবায়ুর ক্ষতি সাধনে হচ্ছে। তাই রোমানিয়া সে দেশের নাগরিকদের পাবলিক ট্রান্সপোর্ট ব্যবহারের জন্য উৎসাহ প্রদান করছে।
অর্থাৎ একজন মানুষ একটি প্রাইভেট গাড়ি না চড়ে, সকলে মিলে একটি গাড়িতে চড়লে যেমন কার্বন নিঃসরণ অনেক কম যেমন হয়, তেমনি জ্বালানীও কম পোড়ে। তাই স্থানীয় লোকজনকে পাবলিক যানবাহন ব্যবহার করার জন্য উৎসাহ দিয়ে চলেছে সে দেশের সরকার। আর সেই কারণে রোমানিয়ায় চালু হয়েছে এই অদ্ভুত নিয়ম। নিয়মে বলা হয়েছে কোন ব্যক্তি যদি রোমানিয়ার কোন বাসস্ট্যান্ডে দুই মিনিটের ভিতর কুড়িটা স্কোয়াট দিতে পারে তাহলে তাকে বিনামূল্যে বাসের টিকিট দেওয়া হবে। তাতে যেমন জ্বালানি খরচ বাঁচবে, তেমন পরিবেশে কার্বন নিঃসরণ কম হবে এবং ব্যক্তিগতভাবে ওই মানুষটিও তার ব্যস্ত জীবনধারার মাঝে একটু শরীর চর্চার সুযোগও পাবে।
সম্প্রতি রোমানিয়ার এক মহিলা এলিনা বোজালকিনা তার ইনস্টাগ্রাম হ্যান্ডেলে বাসের টিকিট পাওয়ার জন্য স্কোয়াট দেওয়ার একটি ভিডিওটি পোস্ট করেন। ওই মহিলাকে একটি বুথের সামনে কুড়িটা স্কোয়াট দিতে দেখা যায়। আসলে ওই বুথেই একটি ক্যামেরা লাগানো রয়েছে যেখানে স্কোয়াট দিলে ক্যামেরায় সেটি ধরা পড়বে এবং ওই বুথের মেশিন থেকেই বিনামূল্যে বাসের টিকিট পাওয়া যাবে। ওই মহিলা এই ভিডিওটি পোস্ট করেন গত অক্টোবর মাসে। তারপর থেকেই ভিডিওটি দেখে ফেলেছে অসংখ্য মানুষ এবং রোমানিয়ার স্বাস্থ্যকর জীবন যাপনের উদ্দেশ্যে এই উৎসাহ প্রদান এর বিষয়ে মানুষ তাদের নিজস্ব প্রতিক্রিয়াও প্রদান করেছে।