নিজস্ব প্রতিবেদন : ভারতে টাকা (Rupee) বা মুদ্রার ইতিহাস বহু বছরের। এই ইতিহাস অন্ততপক্ষে ২৫০০ বছরের পুরাতন। স্বাভাবিকভাবেই এত বছরের পুরাতন টাকার গুরুত্ব এবং চাহিদা দীর্ঘদিনের। কিন্তু সময়ের পরিপ্রেক্ষিতে ধীরে ধীরে টাকার মূল্য কমতে দেখা যায়। জানলে অবাক হবেন এক সময় এক টাকার মূল্য ডলারের (USD) থেকে অনেক বেশি ছিল। কিন্তু এখন সব উল্টে গিয়েছে।
সেই সকল হিসাব বা পরিসংখ্যান যদি সামনে আনা যায় তাহলে রীতিমত অবাক হতে হবে বর্তমান সমাজকে। জানলে অবাক হতে হয়, ১৯১৭ সালে ভারতীয় মুদ্রায় এক টাকা সমান ছিল ১৩ ডলার। এমনকি স্বাধীনতার সময় ভারতের উপর কোন ঋণ ছিল না। কিন্তু এখন ভারতীয় মুদ্রা ডলারের তুলনায় অনেক পিছিয়ে পড়েছে। মার্কিন ডলারকে বেঞ্চমার্ক মুদ্রা হিসাবে ধরা হয়ে থাকে, কারণ এটি বিশ্বের অন্যান্য মুদ্রার মূল্য নির্ধারণ করে থাকে।
১৯৪৭ সালে ভারত স্বাধীন হওয়ার আগে ভারতীয় মুদ্রাকে পাউন্ডের সঙ্গে তুলনা করে পরিমাপ করা হতো। স্বাধীনতার পর থেকে শুরু হয় ডলারের সঙ্গে তুলনা করে পরিমাপ করা। উল্লেখযোগ্য বিষয় হল এখন যেখানে এক ডলার সমান ভারতীয় মুদ্রায় ৮২ টাকা বা ৮৩ টাকা, সেই জায়গায় ১৯৪৭ সালে এক ডলার সমান ছিল ৪.১৬ টাকা। ১৯৫০ থেকে ১৯৬৬ সাল পর্যন্ত এক ডলার সমান ছিল ৪.৭৬ টাকা।
তবে এরপর থেকেই ভারতীয় মুদ্রার অবনতি হতে শুরু করে। বিশেষ করে বিদেশ থেকে ঋণ নিতে শুরু হওয়ায় ভারতীয় মুদ্রার মান দিন দিন কমে যায়। ১৯৬২ সালে ভারত চীন যুদ্ধ, ১৯৬৫ সালে ভারত পাকিস্তান যুদ্ধ, ১৯৬৬ সালে খরা ইত্যাদির কারণে ভারতীয় মুদ্রার মূল্য কমে ১ ডলার সমান ৭.৫০ টাকায় পৌঁছায়।
এরপর ১৯৭৪ সালে অপরিশোধিত তেলের সরবরাহ কমে যাওয়ার কারণে এক ডলার সমান ভারতীয় মুদ্রা দাঁড়ায় ৮.১০ টাকায়। এরপর রাজনৈতিক সহ আরও বিভিন্ন কারণে ভারতীয় মুদ্রার দাম আরও কমতে থাকে এবং ১৯৯০ সালে এক ডলার সমান ১৭.৫০ টাকা দাঁড়ায়। ১৯৯২ সালে এক ডলার সমান হয় ২৫.৯২ টাকা। ২০০৪ সালে এক ডলার সমান হয় ৪৫.৩২ টাকা, ২০১৪ সালে এক ডলার সমান ছিল ৬৩ টাকা। তবে এখনো ভারতীয় মুদ্রার অবনতি কমেনি এবং তা দেখতে দেখতে বেড়ে দাঁড়িয়েছে এক ডলার সমান ৮৩ টাকা।