নিজস্ব প্রতিবেদন : ভারতীয় মহাকাশ গবেষণাগার ইসরো (ISRO) বিশ্বের প্রথম কোন মহাকাশ গবেষণাগার হিসাবে চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে অবতরণ করিয়েছে চন্দ্রযান ৩ (Chandrayaan 3)। সফলভাবে ল্যান্ডার বিক্রম (Lander Vikram) চাঁদের মাটিতে অবতরণ করার পরই এই ইতিহাস তৈরি হয়েছে। এরপর রোভার প্রজ্ঞান (Rover Pragyan) চাঁদের মাটি থেকে একের পর এক তথ্য সংগ্রহ করে সেই ইতিহাসকে আরও সুদূরপ্রসারী করেছে।
চন্দ্রপৃষ্ঠে ১৪ দিনের পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালানোর লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে প্রজ্ঞান কাজ শুরু করেছিল ২৩ আগস্ট। এরপর ধীরে ধীরে চাঁদের মাটিতে অন্ধকার নেমে আসতেই বিক্রম এবং প্রজ্ঞানকে স্লিপ মোডে পাঠিয়ে দেয় ইসরো। স্লিপ মোডে দুজনকে পাঠানোর আগে সব পেলোড পরীক্ষা করা হয়। এরপর ৪ সেপ্টেম্বর সকাল আটটা নাগাদ স্লিপ মোডে যায় বিক্রম। এই মুহূর্তে সব পেলোড বন্ধ থাকলেও কেবলমাত্র চালু রয়েছে রিসিভার।
রিসিভার পেলোড এই কারণেই অন রাখা হয়েছে, কারণ বেঙ্গালুরু অর্থাৎ ইসরো দপ্তর থেকে কমান্ড পেলেই যাতে পুনরায় চন্দ্রযান ৩ নিজের কাজ শুরু করে দিতে পারে তার জন্য। এমনিতেই বেশ কয়েকদিন ধরে বিক্রম এবং প্রজ্ঞানের ব্যাটারি চার্জ না হওয়ায় তা প্রায় শেষের দিকে পৌঁছে যাবে। পাশাপাশি প্রচন্ড ঠান্ডায় ব্যাটারি ঠিক থাকবে না এমনই আশঙ্কা করা হচ্ছে। তবে এসবের মধ্যেই নতুন করে ইতিহাস তৈরি করতে পারে চন্দ্রযান ৩ তথা ইসরো।
চন্দ্রপৃষ্ঠে আগামী ২২ সেপ্টেম্বর নতুন করে সূর্যের আলো পড়বে। এক্ষেত্রে পুনরায় বিক্রম এবং প্রজ্ঞানের ঘুম থেকে উঠে কাজ শুরু করার আশা ক্ষীণ হলেও ইসরোর বিজ্ঞানীরা সেই আশা কোনভাবেই ত্যাগ করছেন না। আশা করা হচ্ছে পুনরায় প্রজ্ঞান এবং বিক্রম নিজের কাজ শুরু করে দেবে। আর যদি এমনটা সম্ভব হয়ে যায় তাহলে ফের একবার ইতিহাস তৈরি করবে চন্দ্রযান ৩ এবং ইসরো।
এমনিতেই প্রথমবার চাঁদের মাটিতে সফলভাবে সফট ল্যান্ডিং করার পর বিক্রম ৩ সেপ্টেম্বর পুনরায় লাফ দিয়ে দ্বিতীয়বারের জন্য সফল সফট ল্যান্ডিং করেছিল। এটিকে ইসরোর বিজ্ঞানীদের তরফ থেকে বলা হচ্ছে হপ এক্সপেরিমেন্ট। সেদিন দ্বিতীয়বারের জন্য লাফ দিয়ে বিক্রম ৩০ থেকে ৪০ সেন্টিমিটার দূরত্বে পৌঁছায়। স্বাভাবিকভাবেই বিজ্ঞানীরা চাইছেন ২২ সেপ্টেম্বর পুনরায় জেগে উঠুক প্রজ্ঞান এবং বিক্রম আর তারা দ্বিতীয়বারের জন্য ইতিহাস তৈরি করুক।