পেট্রোলের মূল্য বৃদ্ধিতে অতিষ্ঠ যুবক, বুলেট ছেড়ে কিনলেন জোড়া ঘোড়া

নিজস্ব প্রতিবেদন : দিন দিন পেট্রোলের দাম বেড়ে চলেছে। সম্প্রতি কেন্দ্রের তরফ থেকে পেট্রোলের উপর ৫ টাকা ভ্যাট কিছুটা দাম কমে। তবে রাজ্য সরকার কোনো রকম ছাড় ঘোষণা না করায় যে দাম কমেছে তাতে মন ভরেনি এক যুবকের। এমনকি তিনি এই দামে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন এবং সেই অতিষ্ঠ হয়ে পড়ার কারণে বুলেট ছেড়ে কিনলেন জোড়া ঘোড়া।

যুবকের এমন বুলেট ছেড়ে জোড়া ঘোড়া কেনার ঘটনাটি ঘটেছে বাংলার ব্যান্ডেলে। অলোক কুমার রায় নামে ওই যুবক পেট্রোলের মূল্যবৃদ্ধি অতিষ্ঠ হয়ে নিজের শখের বুলেটটি ভরে রেখেছেন গ্যারেজে। পরিবর্তে জোড়া ঘোড়া কিনে সেই ঘোড়াকেই সঙ্গী করেছেন পথ চলার। যুবকের এমন পদক্ষেপে উৎসাহী স্থানীয় বাসিন্দারা তার বাড়িতে ভিড় জমাচ্ছেন এবং ওই যুবক তাদেরকে ঘোরাই চাপার প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন যারা ঘোড়ায় চড়া শিখতে ইচ্ছুক।

হুগলীর চুঁচুড়া থানার ব্যান্ডেলের বলগড় রোডের বাসিন্দা ওই যুবক প্রাক্তন সেনা কর্মী দিলীপ কুমার রায় ও মিনতি রায়ের পুত্র সন্তান। ওই যুবক দীর্ঘ আট বছর ধরে সৌদি আরবের একটি বেসরকারি সংস্থা হেভি ইকুইপমেন্টে অপারেটর হিসেবে নিযুক্ত ছিলেন। সেখানেই তিনি শিখেছিলেন ঘোড়ায় চড়া। তবে পরবর্তীতে করোনা সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার পর ওই যুবক সৌদি আরব থেকে চুঁচুড়ায় ফিরে আসেন।

ওই যুবকের একাধিক মোটরবাইকের শখ রয়েছে। সেই শখ থেকে বুলেট সহ বিভিন্ন ধরনের মোটরবাইকও রয়েছে তার। কিন্তু জ্বালানির দাম বিপুল পরিমাণে বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে চিনি বাইক চালানোর সখ ছেড়ে দিয়েছেন। এর পরেই তাঁর মাথায় অন্য ভাবনা আসে এবং সেই ভাবনা থেকেই পরিবেশ সচেতন অলক কুমার রায় চলতি বছরের জন্মাষ্টমীর দিন কলকাতার হেস্টিংস থেকে কাটিয়াওয়ারা প্রজাতির ঘোড়া কেনেন। খরচ পড়ে ২ লক্ষ ২০ হাজার টাকা। যে ঘোড়াটির আদর করে নাম রাখেন রাজু।

এরপর আবার চলতি মাসের কালীপুজোর দিন হেস্টিংস থেকে সাড়ে ৩ লক্ষ টাকা দিয়ে আরও একটি ঘোড়া কেনেন। যার পোশাকি নাম রাখেন মুসকান। এরপর থেকেই পেট্রোল কিনতে যে খরচ হয় সেই খরচ দিয়ে তিনি ওই ঘোড়াদের খাওয়ানো এবং তাদেরই নিত্য দিনের সফর সঙ্গী করে তুলেছেন।

অন্যদিকে ওই যুবক জানিয়েছেন, “আমরা প্রতিনিয়ত প্রাকৃতিক সম্পদ তুলে তা ব্যবহার করছি। একদিন দেখতে দেখতে এই প্রাকৃতিক সম্পদ শেষ হয়ে যাবে। তখন মানুষ কি করবেন? আবার তখন মানুষকে এই ঘোড়াগাড়ি এইসব বেছে নিতে হবে যাতায়াতের জন্য।”