দিন যত এগোচ্ছে ততই গ্রাহকদের প্রদান করা পরিষেবায় স্বচ্ছতা আনতে বিভিন্ন উদ্যোগ নিচ্ছে রাজ্য সরকার। প্রতারণা ও জালিয়াতিকে কড়া হাতে দমন করতে মাঠে নেমেছে প্রশাসন। এবার খাদ্যদপ্তর রেশন গ্রাহকের আধারকেও আরও গুরুত্ব সহকারে দেখছে। রেশন কার্ডের সঙ্গে একজন গ্রাহকের আধার যোগের ব্যবস্থাটি থেকে যাবে, ওই কার্ডটি সক্রিয় না থাকলেও।
আসলে যে রেশন কার্ড সক্রিয় নেই বা বাতিল করা হয়েছে সেটির সঙ্গে যে আধার নম্বরটি যোগ করা আছে তা ব্যবহার করে যাতে নতুন রেশন কার্ড তৈরি করা সম্ভব না হয় সেই জন্যই এত তোড়জোড় এত সতর্কতা। বেশ কিছু দিন আগে খাদ্যশ্রী ভবনে এক পর্যালোচনা বৈঠক এর আয়োজন করা হয়েছিল। সেই বৈঠক থেকেই এই সিদ্ধান্ত উঠে আসে এবং তা দপ্তরের বিভিন্ন পর্যায়ের অফিসারদের ইতিমধ্যেই জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: চটজলদি এই উপায়ে পরিষ্কার করে ফেলুন জলের ট্যাঙ্ক! জলে মেশাতে হবে শুধু এই একটা জিনিস
এই বৈঠকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে জেলার অফিসাররাও যোগদান করেছিলেন। ইতিমধ্যেই একই আধার নম্বর ব্যবহার করে বহু রেশন কার্ড তৈরির কেস সামনে এসেছে। আর তারপরেই এমন রেশন কার্ডগুলিকে নিষ্ক্রিয় করে দেওয়া হয়েছে। যদিও খাদ্যদপ্তর এর তরফে এর আগেও আধার কার্ড নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছিল। তবে এবার জাল আধার দিয়ে রেশন কার্ড তৈরিকে চিরতরে বন্ধ করতে এই নয়া উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
পূর্বে আধার নম্বরের সাথে আবেদনে দপ্তরের পোর্টাল থেকে ই-রেশন কার্ড পাওয়া যেত। তারপরেই ছাপানো কার্ড পৌঁছে যেত আবেদনকারীদের বাড়ি বাড়ি। তবে এই ব্যবস্থায় ফাঁক থেকে গিয়েছিল কারণ এতে জাল আধার ব্যবহার করে রেশন কার্ড বের করে নেওয়ার বড় সুযোগ ছিল। তারপর ওই রেশন কার্ড দিয়ে আরও অন্যান্য পরিচয়পত্র বের করা নেওয়া সহজ ছিল। এ সমস্ত জালিয়াতিকে মুছে ফেলতে খাদ্যদপ্তর নয়া নিয়ম কার্যকর হয়েছে।
বর্তমানে আবেদনকারীর আধারের বায়োমেট্রিক যাচা যাচাইকরনের পরেই নতুন রেশন কার্ড (ই-রেশন কার্ডসহ) ইস্যু করা হচ্ছে। পশ্চিমবঙ্গ রেশন গ্রাহকের আধারের বায়োমেট্রিক যাচাইকরনের পর ই-কেওয়াসি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার ক্ষেত্রে অন্য রাজ্যের থেকে এগিয়ে রয়েছে। এ রাজ্যে ৯৪ শতাংশের অধিক গ্রাহকের ই-কেওয়াসির কাজ সম্পন্ন হয়েছে। অন্যদিকে, বিজেপিশাসিত অধিকাংশ রাজ্যে ই-কেওয়াসির কাজে সাফল্যের হার মোটে ৫০ শতাংশের নীচে।
এদিকে কেন্দ্রের তরফে কড়া হুঁশিয়ারি মিলেছে, ই-কেওয়াইসির কাজ ৩০ এপ্রিলের মধ্যে সম্পূর্ণ না হলে সংশ্লিষ্ট রাজ্যের খাদ্য বরাদ্দ বা ভর্তুকি বন্ধ হয়ে যাবে। অল ইন্ডিয়া ফেয়ার প্রাইস শপ ডিলার্স ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক বিশ্বম্ভর বসু কেন্দ্রের বিভাগীয় সচিবকে চিঠির মাধ্যমে জানিয়েছেন, ই-পস যন্ত্র ব্যবহার করে ই-কেওয়াইসি করার ফলে ডিলারদের উপর কাজের চাপ ক্রমশ বাড়ছে। তাও আবার পশ্চিমবঙ্গে এ কাজের জন্য মাত্র ২.৫০ টাকা করে বরাদ্দ। এখন সংগঠন এর তরফে দাবি উঠেছে প্রত্যেক কার্ড পিছু ২০ টাকা করে প্রদান করার।