উচ্চমাধ্যমিকে নম্বর কম, প্রধান শিক্ষিকাকে ঘিরে বিক্ষোভ রামপুরহাটে

নিজস্ব প্রতিবেদন : চলতি বছর উচ্চমাধ্যমিকের পরীক্ষা হয়নি। বিকল্প মূল্যায়ন পদ্ধতি অনুসরণ করে অর্থাৎ ২০১৯ সালের মাধ্যমিক এবং ২০২০ সালের একাদশ শ্রেণির পরীক্ষার প্রাপ্ত নম্বরের ভিত্তিতে মূল্যায়ন করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার পরীক্ষা না হওয়া চলতি বছরের এই উচ্চমাধ্যমিকের ফলাফল প্রকাশিত হয়। এর পরেই শুক্রবার কম নম্বর দেওয়া হয়েছে এই অভিযোগের ভিত্তিতে প্রধান শিক্ষিকাকে ঘিরে বিক্ষোভ শুরু হয় রামপুরহাট গার্লস উচ্চ বিদ্যালয়ে।

রামপুরহাটের রামপুরহাট গার্লস উচ্চ বিদ্যালয়ের পড়ুয়া এবং তাদের অভিভাবকদের অভিযোগ, “স্কুলের শিক্ষক শিক্ষিকারা একাদশ শ্রেণির পরীক্ষার খাতায় দেখেননি। রোল নম্বরের ভিত্তিতে প্রতিটি পড়ুয়াদের গড় নম্বর দেওয়া হয়েছে। যে কারনেই উচ্চমাধ্যমিকে এখানকার পড়ুয়াদের ফলাফল খারাপ হয়েছে।”

শুধু ফলাফল খারাপ নয়, এর পাশাপাশি এই স্কুলের একাধিক পরিবার মার্কশিটের ক্ষেত্রেও অসঙ্গতি রয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে এক পড়ুয়া জানিয়েছেন, তার রেজিস্ট্রেশন নম্বর এবং অন্যান্য তথ্য দেওয়া হলেও ফলাফল কোনভাবেই দেখা যাচ্ছে না। পাশাপাশি বেশ কয়েকজন পড়ুয়া পাশ করতে পারেননি। অথচ তাদের দাবী মাধ্যমিক এবং অন্যান্য পরীক্ষায় তারা বেশ ভালো ফলাফল করেছিলেন। আর এসবের পরিপ্রেক্ষিতেই এদিন ক্ষোভে ফেটে পড়েন ওই স্কুলের পড়ুয়া এবং অভিভাবকরা।

ওই স্কুলের এক পড়ুয়া সৌরিকা দাসের অভিভাবক ঝর্ণা দাস জানিয়েছেন, “আমার মেয়ে মাধ্যমিকে ৮০ শতাংশ নম্বর পেয়েছিল। আর এবার উচ্চমাধ্যমিকে প্রতিটি বিষয়ে ৪১ নম্বর করে পেয়েছে। এমনটা কিভাবে সম্ভব? আমার মেয়ে তো আর কোন মেশিন নয় যে প্রতিটি বিষয়ে একই নম্বর তুলে রেকর্ড তৈরি করবে! এর আগেও যখন আমরা স্কুলে বিক্ষোভ দেখিয়ে ছিলাম তখন স্কুলের শিক্ষক শিক্ষিকারা স্বীকার করে নিয়েছিলেন যে তারা একাদশ শ্রেণির খাতা দেখেন নি। সকলকে গড় নম্বর দিয়েছেন। সেটা সংশোধন করার কথা ছিল তবে ফলাফল বের হওয়ার পর দেখা যাচ্ছে কোন সংশোধনই হয়নি।”

স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা মল্লিকা হালদার জানিয়েছেন, “একাদশ শ্রেণির পরীক্ষার খাতা দেখার সময় লকডাউন চলছিল। খাতা এদিক-ওদিক ছিল। হোয়াটসঅ্যাপ এবং বিভিন্ন মাধ্যমে খাতা দেখার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। যে কারণে নম্বরের ক্ষেত্রে হয়তো গন্ডগোল হয়ে থাকতে পারে। তবে আমরা এই বিষয়ে সংশোধনের জন্য প্রথমে বর্ধমান এবং পরে কলকাতা যাই। সেখানে আমরা সংশোধিত নম্বর দিয়ে এসেছিলাম। এখন যে সকল পরীক্ষার্থী এবং অভিভাবকরা নিজেদের নম্বর নিয়ে অসন্তুষ্ট তারা আবেদন করলে খাতা নিয়ে আমরা সেটা বর্তমানে দায়িত্ব সহকারে জমা দিয়ে আসবো।”

প্রসঙ্গত, এই স্কুলে বিক্ষোভের এই ঘটনা এই প্রথম নয়। এর আগেও যখন উচ্চমাধ্যমিকের মূল্যায়ন করার ক্ষেত্রে যে পদ্ধতির ঘোষণা করা হয়েছিল ঠিক তার পরেই একাদশ শ্রেণির নম্বর কম দেওয়া হয়েছে এই দাবীতে বিক্ষোভ দেখানো হয়। তবে সেবার স্কুল শিক্ষক শিক্ষিকাদের প্রতিশ্রুতিতে শান্ত হোন পড়ুয়ারা এবং অভিভাবকরা।