হায়রে! বরখাস্ত হওয়া মন্ত্রিকন্যার পদে নিযুক্ত হওয়া ববিতারও মার্কশিটে নম্বরে গরমিল

শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী পরেশ অধিকারীর মেয়ে অঙ্কিতা অধিকারীর চাকরি নিয়ে যে কেলেঙ্কারি হয়েছিল, তা সকলেরই জানা। অঙ্কিতার চাকরি থেকে বরখাস্তের পর মেখলিগঞ্জ ইন্দিরা গার্লস স্কুলে চাকরি পান শিলিগুড়ির ববিতা সরকার। আদালতের রায়েই ববিতাকে নিয়োগ করা হয় অঙ্কিতার জায়গায়। একইসঙ্গে অঙ্কিতা যতদিন চাকরি করেছেন সেই ৪৩ মাসের বেতনও দেওয়া হয় ববিতাকে। তবে এর মধ্যেও নাকি রয়েছে ভীষণ সমস্যা। অভিযোগ উঠেছে ববিতার মার্কশিটেই নাকি রয়েছে গন্ডগোল।

চাকরি পেতে গেলে, মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক সহ উচ্চতর ডিগ্রি কোর্সের প্রাপ্ত নম্বর অনুযায়ী কিছু নম্বর নির্দিষ্ট করা থাকে চাকরি প্রার্থীর জন্য। সেই নিয়ম অনুযায়ী ববিতার প্রাপ্ত নম্বর ছিল ৩১। কিন্তু, কমিশনের তরফ থেকে ববিতাকে ৩৩ নম্বর দেওয়া হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। অর্থাৎ বিষয়টি যদি সত্যি হয় তাহলে ববিতার প্রাপ্ত নম্বর থেকে কমে যাবে দুই নম্বর। যার ফলে সমস্ত প্যানেলেরই র‍্যাঙ্ক বদল হতে পারে বলে জানা যাচ্ছে। সেক্ষেত্রে মেখলিগঞ্জ ইন্দিরা গার্লস স্কুলে ববিতা শিক্ষকতা করবেন কিনা সেটা নিয়ে সন্দেহ দানা বেঁধেছে। পাশাপাশি মেখলিগঞ্জের ওই স্কুলের ভবিষ্যৎ নিয়েও সংশয় তৈরি হয়েছে স্থানীয় বাসিন্দাদের মনে।

মেখলিগঞ্জ ইন্দিরা গার্লস স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা রঞ্জনা রায় বসুনিয়া এই বিষয় প্রসঙ্গে বলেন, “বিষয়টি শুনেছি। এর বেশি কিছু জানি না। পর্ষদের তরফে আমার কাছে কোনও নির্দেশ এখনও আসেনি।” ববিতার প্রাপ্ত নম্বর প্রসঙ্গে কোচবিহার জেলা শিক্ষা দপ্তরের ডিআই সমর চন্দ্র মন্ডল বলেন, “বিষয়টি আমার জানা নেই। খোঁজ নিয়ে দেখব। পর্ষদ বা কমিশন যেভাবে নির্দেশ দেবে সেভাবে কাজ হবে।”

এই ঘটনা প্রসঙ্গে এসএসসি-এর তরফে দাবি, আবেদনের সময় ববিতা উল্লেখ করেছিলেন যে, তিনি ‘৬০ শতাংশ বা তার বেশি’ নম্বর পেয়েছেন স্নাতকে। কিন্তু ববিতা সরকারের নামে জমা হওয়া মার্কশিটে দেখা যাচ্ছে ৮০০-এর মধ্যে তিনি ৪৪০ পেয়েছেন অর্থাৎ শতকরা ৫৫%। আর এই কারণেই তাঁর অ্যাকাডেমিক স্কোর গণনায় ভুল হয়ে যায়। তবে একথা বলে কমিশন দায় এড়িয়ে যেতে পারবেন বলে মনে করছেন না অন্যান্য প্রার্থীরা। কারণ, কোনো চাকরির পদপ্রার্থীকে স্কোর দেওয়ার আগে কমিশনের তরফে সমস্ত নথি ভালো ভাবে যাচাই করে দেখতে হয়। এবং তার পরই নম্বর দেওয়া সম্ভব হয়। তাই এই বিষয়ে কমিশনের যথেষ্ট গাফিলতি আছে বলে মনে করছেন সকলে।

বর্তমানে ববিতা সরকার নামটা বঞ্চিত চাকরিপ্রার্থীদের জন্য অনুপ্রেরণা হয়ে দাঁড়িয়েছিল। কিন্তু এই কেলেঙ্কারির খবর সামনে আসার পরই আশাহত হয়েছেন অনেকে। কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশে মন্ত্রীকন্যার চাকরি চলে যায়। এবং সেই পদেই শিক্ষিকা হিসেবে যোগ দেন ববিতা সরকার। এবার তার চাকরিও রয়েছে সংকটে। দেখা যাক এবার কোন নতুন তথ্য উঠে আসে সকলের সামনে।