হঠাৎ অসুস্থ শিশু, খাবার-ওষুধ দরকার, এক ফোনেই সমস্যা সমাধান করবে ‘মাতৃস্নেহ’

হিমাদ্রি মণ্ডল : ভারতে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ বেড়ে চলার পর থেকেই শুরু হয়েছে লকডাউন। লকডাউন বেড়ে দাঁড়িয়ে ৩রা মে পর্যন্ত। আর এই লকডাউন চলাকালীন বীরভূমবাসীদের নানান সমস্যা দূর করতে বারবার এগিয়ে এসেছে বীরভূম পুলিশ। বীরভূম পুলিশের উদ্যোগে বয়স্ক ও বাড়িতে একা থাকা নাগরিকদের জন্য চালু হয়েছে ‘পুলিশ বন্ধু’, আর এবার ছোট্ট ছোট্ট শিশুদের কথা মাথায় রেখে চালু হলো ‘মাতৃস্নেহ’।

লকডাউনের জেরে সমস্যায় অজস্র শিশুর অভিভাবকরা। শিশু হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে তার চিকিৎসার জন্য বিপাকে পড়ছেন অনেক অভিভাবকই। শিশুদের খাবার ও ওষুধ নিয়েও সমস্যায় পড়ছেন অনেকে। আর এই সকল সমস্যার সমাধান এবার হবে এক ফোনেই। সমস্যার মুশকিল আসান করবে ‘মাতৃস্নেহ’। শুধুমাত্র শিশুদের পরিষেবা দেওয়ার পরিকল্পনা নিয়ে বীরভূম পুলিশের এমন উদ্যোগ। মাতৃস্নেহ প্রকল্পের আওতায় ৬ টি গাড়ির বন্দোবস্ত হলো মঙ্গলবার। মঙ্গলবার বিকালে সিউড়ি চাঁদমারি মাঠে গাড়িগুলি উদ্বোধন করা হয়। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুবিমাল পাল, ডিএসপি ডিএনটি অভিষেক মন্ডল সহ অন্যান্য পুলিশ আধিকারিকরা।

প্রাথমিকভাবে এই পরিষেবা শুরু হচ্ছে বীরভূমের ৬ টি পুরসভায়। যে সকল পৌরসভাগুলির সংশ্লিষ্ট থানায় এই গাড়িগুলি থাকবে। এই গাড়িগুলির মাধ্যমে যেহেতু শিশুদের পরিষেবা দেওয়া হবে তাই গাড়িগুলিকে শিশুবান্ধব করে সাজানো হয়েছে। গাড়িগুলির উপর ‘ছোটা ভীম’, ‘টম এন্ড জেরি’ ইত্যাদি জনপ্রিয় কার্টুন চরিত্রের স্টিকার লাগানো হয়েছে। ৬ মাস থেকে ১০ বছর বয়সী শিশুদের পরিষেবা দেওয়ার জন্য বীরভূম পুলিশের এমন অভিনব উদ্যোগ।

এই সকল গাড়িগুলির মাধ্যমে পরিষেবা পাওয়ার জন্য শিশুদের অভিভাবকদের পুলিশের পক্ষ থেকে দেওয়া নম্বরে যোগাযোগ করতে হবে। পরিষেবা পাওয়ার জন্য যে দুটি নম্বর চালু করা হয়েছে সেই দুটি নম্বর হলো ৭৬০২৬৭৫৩১১ এবং ৭৬০২৬৭৫৩২২। এই দুটি নম্বরের মধ্যে যেকোনো একটি নম্বরে যোগাযোগ করলেই পরিষেবা পাওয়া যাবে। পাশাপাশি পুলিশের তরফ থেকে জানানো হয়েছে প্রত্যেক গাড়িতে থাকবেন একজন করে মহিলা পুলিশ কর্মী।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, কোন শিশুকে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া কিম্বা শিশুর ওষুধ বা খাদ্য সামগ্রী প্রয়োজন হলে ওই ফোন নম্বরে ফোন করলেই তৎক্ষণাৎ ‘মাতৃস্নেহ’-র গাড়ি পৌঁছে যাবে ওই শিশুর বাড়ি এবং প্রয়োজনীয় পরিষেবা প্রদান করবে। তবে, লকডাউনকে সামনে রেখে ‘মাতৃস্নেহ’ চালু করা হলেও আগামীদিনেও এই পরিষেবা চালু থাকবে বলে জেলা পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে। আগামীদিনে জেলার প্রতিটি থানায় ‘মাতৃস্নেহ’ যান রাখারও পরিকল্পনা করছে জেলা পুলিশ। এই নিয়ে জেলা পুলিশ সুপার শ্যাম সিং জানান, “শিশুদের প্রয়োজনীয় পরিষেবা দেওয়ার লক্ষ্যেই আমাদের এই প্রচেষ্টা।”