Jagannath Temple Puri: কাছেই রয়েছে সমুদ্র! তবুও জগন্নাথ মন্দিরে শোনা যায় না গর্জন! কিন্তু কেন

Despite being near the sea, the roar of the sea is never heard in the Jagannath Temple of Puri: পুরীর জগন্নাথ মন্দির (Jagannath Temple Puri) সম্পর্কে একটি ধারণা প্রচলিত আছে। মানুষের বিশ্বাস অনুসারে শ্রীকৃষ্ণ দ্বারকায় দেহত্যাগের পর পুরীতে জগন্নাথ রূপে নতুনভাবে আবির্ভূত হয়েছিলেন। হিন্দু ধর্মের মানুষের কাছে পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের গুরুত্ব অপরিসীম। এটি একটি পবিত্র তীর্থস্থানও বটে। দেশের চার প্রান্তে শ্রীবিষ্ণুর যে চারটি ধাম রয়েছে, তার অন্যতম হল পুরীধাম। আর বাকি তিনটি হল দ্বারকা, রামেশ্বরম ও বদ্রীনাথ। শুধু এদেশের পূর্ণ্যার্থীরা নন দেশ বিদেশ থেকে বহু মানুষ পুরীর জগন্নাথ মন্দির দর্শন করার জন্য আসেন।

জগন্নাথ দেবের এই মন্দিরটি (Jagannath Temple Puri) নানারকম রহস্য ও রোমাঞ্চে ঘেরা। মানুষের মনের সবথেকে বড় প্রশ্ন যেটা জেগে ওঠে তা হল, কেন সমুদ্রের এত কাছে থেকেও মন্দিরে সমুদ্রের গর্জন শোনা যায় না? পুরীতে সমুদ্রের কাছেই অবস্থিত জগন্নাথ মন্দির। স্বাভাবিকভাবেই সবুজের গর্জন এখানে শুনতে পাওয়া উচিত। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় হল জগন্নাথ মন্দির থেকে সমুদ্রের গর্জন শুনতে পাওয়া যায় না। আজকের প্রতিবেদন এই অদ্ভুত বিষয়টি নিয়ে আমরা আলোচনা করে নেব।

এই অদ্ভুত ঘটনার পিছনেও লুকিয়ে আছে একটি পৌরাণিক কাহিনী। একবার নারদ মুনি শ্রীজগন্নাথ দেব প্রভুকে দর্শন করতে পুরীর মন্দিরে (Jagannath Temple Puri) আসেন। মন্দিরের দোরগোড়ায় সেই সময় পাহারা দিচ্ছিলেন বজরংবলী। মন্দিরে প্রবেশের সময় নারদ মুনি লক্ষ্য করেন জগন্নাথ দেব অত্যন্ত বিচলিত হয়ে আছেন। যখন মহর্ষি নারদ তার বিচলিত হওয়ার কারণ জানতে চাইলেন তিনি বললেন সমুদ্রের গর্জনের আওয়াজ তার মনকে অশান্ত করে তুলেছে। এই প্রচণ্ড আওয়াজের কারণ তিনি একাগ্রচিত্তে কোনও কিছুতেই মনোনিবেশ করতে পারছেন না।

আরও পড়ুন 👉 পুণ্যার্থীদের জন্য সুখবর! এবার পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের প্রবেশে তৈরি হচ্ছে সুড়ঙ্গ করিডর!

মন্দিরের (Jagannath Temple Puri) বাইরে পাহারারত বজরংবলীকে জানান মহর্ষি নারদ। বজরংবলী রামের পরম ভক্ত, আমরা সবাই জানি রাম এবং কৃষ্ণ উভয়েই বিষ্ণুর অবতার। অন্যদিকে জগন্নাথ দেব হলেন কৃষ্ণের আর এক রূপ। বজরংবলী সেই দিক থেকে জগন্নাথদেবেরও পরম ভক্ত। প্রভুর সমস্যার কথা শুনেই তিনি বেরিয়ে পড়েন তার সমাধান করতে। তখনই সমুদ্রের পাড়ে গিয়ে সমুদ্রদেবকে আহ্বান জানান বজরংবলী। সমুদ্রের গর্জনের আওয়াজ সেই সময় শান্ত করার জন্য অনুরোধ করেন।

ঠিক সেই সময় সমুদ্রদেব বলেন একমাত্র পবনদেবেরই এই ঢেউয়ের গর্জনের উপর নিয়ন্ত্রণ রয়েছে। সমস্যার সমাধান করার জন্য বজরংবলী পবনদেবকে আহ্বান জানান। পবনদেব এই সমস্যার একটি সমাধান বলেন, যেদিক থেকে হাওয়া বইছে, তার থেকে জোরে অন্য দিক থেকে হাওয়া বওয়ানো যায় তাহলেই এই সমস্যা সমাধান ঘটবে। বজরংবলী তখনই যেদিক থেকে হাওয়া বইছে, তার থেকে জোরে উল্টোদিক থেকে উড়তে শুরু করেন। এরফলে হাওয়ার বেগের সৃষ্টি হয়, তাতে মন্দিরের দিকে যাওয়া সমুদ্রের ঢেউয়ের গর্জন চাপা পড়ে যায়। ঠিক এই কারণেই কিন্তু পুরীর মন্দিরের চূড়োয় পতাকা সব সময় হাওয়ার উল্টোদিকে বয়।