ডিম ছাড়া হয় না পুজো, এই পূজোয় ডিম দিয়েই মানত করেন ভক্তরা

নিজস্ব প্রতিবেদন : সনাতন ধর্মে পুজোর ক্ষেত্রে নানান ধরনের রীতিনীতি রয়েছে। সেই সকল রীতিনীতির মধ্যে অন্যতম হলো শুদ্ধ হওয়া এবং সেই শুদ্ধ হয়ে পুজো দেওয়া। পুজোয় খাওয়া-দাওয়ার ক্ষেত্রেও থাকে নানান রীতিনীতি। যেমন আমিষ কোন খাবার অধিকাংশ পুজোয় ব্যবহার করা হয় না। আমিষের মধ্যে আবার ডিম (egg) ব্যবহার তো দূরের কথা ছোঁয়া লাগলেই পুজোয় বিঘ্ন ঘটে।

তবে এই ধারণা বদলে দিয়েছে বীরভূমের মহঃবাজারের একটি পুজো। যে পুজো হয়ে আসছে আনুমানিক ৩০০ বছর ধরে। এই পুজোয় ভক্তদের ডিম উৎসর্গ করতে হয়। আবার ডিম উৎসর্গ করার ক্ষেত্রেও রয়েছে বেশ কিছু নিয়ম। এমন ব্যতিক্রমী পুজোর কথা জানলে বা শুনলে রীতিমত অবাক হতে হয় ভক্তদের।

মহঃবাজারের এমন পুজো হলো গোরক্ষনাথের পুজো। মহম্মদবাজার ব্লকের পুরাতন গ্রাম পঞ্চায়েতের উস্কো গ্রামের পাশে থাকা দ্বারকা নদীর ধারে এই পুজোকে সবাই চেনেন বারণী পুজো নামেই। এখানে বিগ্রহ বলতে মাটি থেকে মাথা উঁচু করে থাকা দু ফুটের একটি গাছের গুড়ি। এটি গোরক্ষনাথ বলে পরিচিত এবং আপদে-বিপদে গ্রামের মানুষদের ত্রাতা হয়ে দাঁড়ান। প্রাচীন পুজোয় বিভিন্ন আচার এবং মানত আছেই। কিন্তু যেটি নাহলে এই পুজো হয় না সেটি হল ডিম। ডিম ছাড়া বারুণী পুজো হয় না।

গোরক্ষনাথ বা বারুণী পুজো প্রতিবছর আয়োজিত হয়ে থাকে চৈত্র মাসের অমাবস্যার দিন। কথিত আছে, যদি কারো চর্মরোগ হয় তাহলে দ্বারকা নদীতে স্নান করে গোরক্ষনাথের কাছে ডিম মানত করলেই চর্মরোগ সেড়ে যায়। আর রোগ সেড়ে যাওয়ার পর ডিম দেওয়ার ক্ষেত্রেও রয়েছে আলাদা নিয়ম। স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, চর্মরোগ সেড়ে গেলে পরের বছর দ্বিগুণ সংখ্যক ডিম দিতে হয়। পুজোর দিন এখানে ডিমের স্তূপ তৈরি হয়।

পুজোর দিন দূরদূরান্ত থেকে মানুষেরা এখানে আছেন পুজো দিতে এবং তাদের মানব অনুযায়ী নিজের নিজের মতো করে গোরক্ষনাথকে ডিম উৎসর্গ করেন। পুজোর পাশাপাশি এখানে একটি গ্রামীণ মেলার আয়োজন করা হয়।