সাধারণ মানুষের ধর্মীয় ভাবাবেগকে গুরুত্ব দিয়ে রাজ্য সরকারের তরফে একের পর এক উদ্যোগ সামনে আসছে।২০১৮ সালে পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের আদলে দিঘাতেও জগন্নাথ মন্দির গড়ে তোলার ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর সেই দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে আগামী বুধবার অর্থাৎ অক্ষয় তৃতীয়ার শুভ দিনে খুলে যাচ্ছে দিঘায় নব নির্মিত জগন্নাথ মন্দিরের দরজা। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরে উদ্বোধন হবে উদ্বোধন হবে জগন্নাথ মন্দির। আগামী ২৯ ও ৩০ এপ্রিল দিঘায় মূল অনুষ্ঠান আয়োজিত হবে।
স্বাভাবিকভাবেই রাজ্য সরকারের তরফে মন্দির প্রাঙ্গণ সহ আশেপাশের এলাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে আটোসাটো করতে জোরকদমে প্রস্তুতি চলছে। ওইদিন মুখ্যমন্ত্রী ছাড়াও সেখানে উপস্থিত থাকবেন মন্ত্রিসভার অন্যান্য সদস্যরা। নিরাপত্তা ব্যবস্থায় যেন একচুলও ফাঁক না থাকে তা নিশ্চিত করা হচ্ছে। যার কারণে এখন খুশির হাওয়া বইছে সমুদ্র সৈকতে। সব মিলিয়ে একবারে জমজমাট পরিবেশ বলা যেতে পারে। কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা বা দুর্ঘটনা এড়াতে অতিরিক্ত নজরদারির ব্যবস্থা করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: দিল্লির পথে সিউড়ি পৌরসভা! কতটা কি হবে সেটাই দেখার বিষয়
এমনিতেই বছরের অধিকাংশ সময়ে দিঘায় পর্যটকদের ভিড় লেগেই থাকে। এবছর জগন্নাথ মন্দির তৈরির পরে ভিড় যে আরও কয়েক গুণ বাড়বে তা আর বলার অপেক্ষা রাখেনা। তাই এবার রেল মুখ্যমন্ত্রীর অনুরোধে সাড়া দিয়েছে। যাত্রীদের নিরাপদে ও স্বাচ্ছন্দে যাতায়াতের জন্য বিশেষ ট্রেন চালানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে রেলের তরফে। প্রসঙ্গত রাজ্য সরকারের তরফে রেলের কাছে আবেদন করা হয়েছিল। ইতিমধ্যেই ওই আবেদন মঞ্জুর করা হয়েছে। দক্ষিণ-পূর্ব রেল ২৫ এপ্রিল থেকে আগামী ৪ মে পর্যন্ত প্রতিদিন দুটি করে বাড়তি ট্রেন চালানোর কথা ঘোষণা করেছে।
গত শুক্রবার দক্ষিণ পূর্ব রেলের তরফে এই কথা জানানো হয়েছে।স্বাভাবিকভাবেই বাড়তি ট্রেন চলাচলের ফলে রেলের আয়ও মন্দ কিছু হবেনা। মোটা অংকের টাকা আয় হবে রেলের। কারণ ইতিমধ্যেই নব নির্মিত জগন্নাথ মন্দির দেখতে ভিড় জমাচ্ছেন পর্যটকরা। আর এই জগন্নাথধামের উদ্বোধনের পর পর্যটক সংখ্যা লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়বে। মিষ্টির দোকান খোলা হবে। বাংলার মিষ্টির কদর কতটা তা তুলে ধরতে দোকানগুলিতে পাওয়া যাবে বাংলার মিষ্টি। অক্ষয় তৃতীয়ার দিন অর্থাৎ উদ্বোধনের দিন এলাকার পুরোহিতদের সংবর্ধনা জানানো হবে। অন্যদিকে, বাড়তি দুটি ট্রেনের মধ্যে একটি হাওড়া থেকে দিঘার উদ্দেশ্যে রওনা দেবে এবং অন্যটি পাঁশকুড়া থেকে দিঘার মধ্যে চলাচল করবে।
দক্ষিণ-পূর্ব রেলের সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, একটি ট্রেন হাওড়া স্টেশন থেকে দুপুর ১টা ১০ মিনিটে রওনা দেবে। এটি দিঘা গিয়ে পৌঁছবে বিকেল ৫টা ৩৫ মিনিটে। ওইখান থেকে একই দিনে সন্ধ্যে ৬টায় রওনা দিয়ে হাওড়ায় ট্রেন ফিরবে রাত ১০টা ৩৫ মিনিটে। অন্যদিকে, পাঁশকুড়া স্টেশন থেকে আর একটি ট্রেন ভোর পৌঁনে ৫টায় রওনা দেবে। এটি সকাল ৭টা ২৫ মিনিটে দিঘা এসে পৌঁছবে। সেখান থেকে একইদিনে সকাল ৭টা ৩৫ মিনিটে ট্রেন দিঘা থেকে রওনা দিয়ে সকাল ১০টা ২০ মিনিটে ফিরে আসবে পাঁশকুড়া স্টেশনে। পর্যটকদের নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে রাজ্য সরকার ও রেলের এই যৌথ উদ্যোগকে সত্যি সাধুবাদ জানানোর মতোই।