Puri Jagannath Mandir: পুরীর মন্দিরে অ-হিন্দু থেকে বিদেশিরা ঢুকতে পান না, কেন এমন রীতি

Entry to Puri Jagannath Mandir is prohibited from non-Hindus to foreigners: হিন্দু সম্প্রদায়ের মন্দিরগুলির মধ্যে অন্যতম মন্দির হলো পুরীর জগন্নাথ মন্দির (Puri Jagannath Mandir)। যেখানে ভগবান বিষ্ণুর অন্যতম রূপ জগন্নাথকে উৎসর্গ করা হয়েছে। তবে শুধু জগন্নাথ নয়, এখানে জগন্নাথ দেবের পাশাপাশি বড় ভাই বলরাম এবং বোন সুভদ্রাকেও পূজা করা হয়। মন্দিরে জগন্নাথ দেবের পূজা যেমন নিখুঁতভাবে করা হয় তেমনি তীর্থযাত্রীদের প্রবেশের ক্ষেত্রেও এখানে রয়েছে বেশ কড়াকড়ি। শুধুমাত্র হিন্দু ভক্তরাই অনুমতি পায় এই মন্দিরে প্রবেশের। কোনো মুসলিম সম্প্রদায় বা বিদেশীরা এই মন্দিরে ঢুকতে পারে না। প্রধান দরজায় থাকে কড়া নিরাপত্তার ব্যবস্থা। এই নিয়ম চলে আসছে যুগ যুগ ধরে। কিন্তু কেন এমন নিয়ম তৈরি করা হয়েছে? আসল কারণ জানেন কি?

এই নিয়ম বর্তমানে তৈরি করা নিয়ম নয়। ১২ শতাব্দীর ঐতিহ্যবাহী মন্দিরে প্রবেশের এই নিয়ম চলে আসছে বছরের পর বছর ধরে। যা মেনে চলেছেন জগন্নাথ মন্দিরের (Puri Jagannath Mandir) সেবায়েত থেকে শুরু করে গবেষক ও মন্দিরের সাথে যুক্ত অন্যান্য ব্যক্তিরা। মন্দিরের সিংহদুয়ারে সাইনবোর্ডে লেখা রয়েছে মন্দিরে প্রবেশের অনুমতি পাবে কেবলমাত্র হিন্দু ভক্তরা। প্রবেশ নিষিদ্ধ অ-হিন্দুসহ বিদেশীদের।

শুনলে অবাক হবেন মন্দিরে মুসলিম ও বিদেশীদের প্রবেশ নিষিদ্ধ থাকলেও বছরে একবার তারা জগন্নাথ দেবের দর্শন করার সুযোগ পান। রথযাত্রার সময় মুসলিম ও বিদেশীরা জগন্নাথ দেবের দর্শনের অনুমতি পান। সেই সময় জগন্নাথধাম থেকে জগন্নাথ দেবের মাসির বাড়ি গুন্ডিচা মন্দিরে নিয়ে যাওয়া হয় জগন্নাথ, বলরাম ও সুভদ্রা দেবীকে। আর সেই রথযাত্রার দিনই মাসির বাড়ি যাওয়ার সময় ভক্তদের ঢল নামে রাস্তায়। সেই সময়ই হিন্দু ভক্তদের সাথে সেই দলে মিশে যায় মুসলিম সহ বিদেশীরা। তবে অন্য কোন সময় মন্দিরে প্রবেশের অনুমতি পান না অ-হিন্দুরা।

আরও পড়ুন 👉 Travel Spot: দীঘা, পুরির ঘ্যানঘ্যানে অতীত! এবার সঙ্গীকে নিয়ে ঘুরে আসুন এই নিরিবিলি মনোরম জায়গা থেকে

শুধু তাই না, ১৯৮৪ সালে সেই সময় প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন সময়ে জগন্নাথ মন্দিরে প্রবেশে বাধা দেওয়া হয় ইন্দিরা গান্ধীকে। কারণ তিনি অ-হিন্দুকে বিবাহ করেছিলেন। সেই নিয়ে তৎকালীন সময়ে প্রচুর শোরগোল হয়েছিল। মন্দিরের কাছেই এক লাইব্রেরী থেকে জগন্নাথ দেবকে প্রার্থনা করে চলে যান ইন্দিরা গান্ধী। অপরদিকে ২০০৫ সালে থাইল্যান্ডের রাজকুমারী মহা শ্রীনির্ধন উড়িষ্যা সফরে এলে তাকেও মন্দিরে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি। ঠিক তার পরের বছর ২০০৬ সালে জগন্নাথ দর্শনে আসেন সুইস নাগরিক এলিজাবেথ জিগলারকে। তিনিও মন্দিরে প্রবেশের অনুমতি পাননি। প্রবেশ না করলেও তিনি মুক্ত হস্তে ১ কোটি ৭৮ লক্ষ টাকা দান করেন জগন্নাথধামে।

জগন্নাথ মন্দিরে (Puri Jagannath Mandir) প্রবেশ নিয়ে কট্টর নিয়ম পালন করা হলেও মন্দির পক্ষ থেকে কখনোই এর নির্দিষ্ট কারণ জানানো হয়নি। তবে ঐতিহাসিকদের মতে পূর্বে একসময় অ-হিন্দু অর্থাৎ মুসলিম সম্প্রদায় জগন্নাথ মন্দির আক্রমণ করে হামলা চালায়। সেই কারণেই হয়তো মন্দিরের সেবায়তরা জগন্নাথধামে অ-হিন্দুদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করেন। আবার কিছু বিশেষজ্ঞদের মতে, মন্দির তৈরীর সময় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল জগন্নাথধামে অ-হিন্দুদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা থাকবে। যা আজও মেনে চলেছে জগন্নাথ ধামের কর্তৃপক্ষরা।