কৃষি আইন প্রত্যাহারে লাভের থেকে ক্ষতি বেশি বিরোধীদের, রইলো ৫টি কারণ

নিজস্ব প্রতিবেদন : এক বছরের বেশি সময় ধরে লাগাতার আন্দোলন করে জয় হাসিল করেছে কৃষকরা। গুরু নানকের জন্মদিনে প্রধানমন্ত্রীর নরেন্দ্র মোদি (Narendra Modi) কৃষকদের কাছে ক্ষমা চেয়ে সংসদে সংখ্যার বলে পাস করা তিনটি কৃষি আইন (Farm Law) বাতিল করার আশ্বাস দেন। আপাতদৃষ্টিতে কেন্দ্রের এই পদক্ষেপ পিছু হটা মনে করা হলেও কৃষকরা অবশ্য সতর্ক।

১) এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে বিরোধীরা সবচেয়ে বেশি উচ্ছ্বসিত। রাজনৈতিক মহলের একাংশের বিশ্লেষণ, বিরোধীরা এমন ভাব করছে যেন তাদের আন্দোলনের জেরেই কেন্দ্র পিছু হটতে বাধ্য হয়েছে। এই জয় যেন তাদেরই। কিন্তু এমনটা নয়। একটু ভেবে দেখলেই স্পষ্ট হয়ে যায়, এই জয় কেবলমাত্র কৃষকদের। যে কারণে এই পদক্ষেপের পর বিরোধীদের উচ্ছ্বসিত না হয়ে শিক্ষা নেওয়া উচিত, বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক মহলের একাংশ। এই কৃষি আইন বাতিলের জন্য যেভাবে আত্মত্যাগ করেছেন কৃষকরা তার বিন্দুমাত্র করে নি কোনো বিরোধীদল।

২) কৃষকরা তাদের এই আন্দোলনে কখনোই রাজনৈতিক রঙ লাগতে দেয়নি। কেবলমাত্র বাইরে থেকে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সমর্থনটুকু এসেছে। বাকি সর্বক্ষেত্রে তারা আন্দোলনে স্বতন্ত্রতা বজায় রেখেছিলেন। তাদের এই আন্দোলনকে রাজনৈতিক স্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য কোন রাজনৈতিক দল হাইজ্যাক করতে পারেনি। সেই দিক থেকে দেখলে বিরোধীরা কখনোই এই আন্দোলনের শরিক হতে পারেনি।

৩) বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতারা কৃষি আইনের বিরোধিতা করেনি এমনটা নয়। তারা এর বিরোধিতা করার জন্য সংসদ অচল করেছেন। কিন্তু তাতে কি কোন লাভ হয়েছে? আসল লাভটা কিন্তু এসেছে গণ আন্দোলনের মধ্য দিয়েই। কৃষকরা যদি রাস্তায় নেমে আন্দোলন না করতেন তাহলে এই জয় কখনোই আসতো না বলে মনে করছেন রাজনৈতিক মহলের বিশেষজ্ঞরা। ফলে এই জায়গায় বিরোধীদের বোঝা উচিত সংসদীয় ব্যবস্থাকে অচল না করে গণ আন্দোলনের মধ্য দিয়ে দাবি-দাওয়া আদায় করা সবচেয়ে বড় উপায়।

৪) কৃষি আইন প্রত্যাহারের পরিপ্রেক্ষিতে আসন্ন উত্তরপ্রদেশ সহ অন্যান্য রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনে বিরোধীরা যদি ভেবে নেন তারা অনেকটাই মাইলেজ পেয়ে গেলেন তাহলে তারা ভুল করছেন। কারণ এই কৃষি আইন লাগু করার পরিপ্রেক্ষিতে কেন্দ্র ইতিমধ্যেই যা হারানোর হারিয়েছে। নতুন করে তাদের হারানোর আর কিছু নেই। আর যখন তারা এই আইন প্রত্যাহার করার মত এত বড় সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তখন ভাবতে হবে এর পিছনে সুদূরপ্রসারি কোনো পরিকল্পনা আছে।

৫) এই কৃষি আইন প্রত্যাহার করার ফলে বিরোধীদের সবচেয়ে বড় অস্ত্র ভোঁতা হয়ে গেল। কারণ এই কৃষি আইনকে ভর করেই বিরোধীরা বারংবার কেন্দ্রের বিজেপির বিরুদ্ধে আন্দোলনে নেমেছে। এখন সেই কৃষি আইনই প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেওয়ার কারণে বিরোধীরা তাদের আন্দোলনের বড় অস্ত্র হারালেন। সুতরাং এই আইন প্রত্যাহারে লাভের থেকে ক্ষতি বেশি বিরোধীদেরই।