অবশেষে নীরবতা ভাঙলেন, নন্দীগ্রাম নিয়ে কলম ধরলেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য

নিজস্ব প্রতিবেদন : একুশের বিধানসভা নির্বাচনে যখন সকলের পাখির চোখ হয়ে দাঁড়িয়েছে নন্দীগ্রাম, যেখানে সম্মুখ সমরে তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং একসময়ের তৃণমূলের একনিষ্ঠ সঙ্গী বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী। আর এই দুজন তাবড় তাবড় নেতা নেত্রীর বিরুদ্ধে ময়দানে যুবনেত্রী সংযুক্ত মোর্চার মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়। আর যখন এই নন্দীগ্রাম সকলের কাছে পাখির চোখ হয়ে উঠেছে সেই সময় দীর্ঘ নীরবতা ভাঙলেন রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য।

দীর্ঘ লেখনীতে অবশ্যই ১৪ বছর আগেকার ঘটনা ফুটে উঠেছে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের কলমে। পাশাপাশি বামফ্রন্টের লক্ষ্য কি ছিল, আগামী দিনে কি রয়েছে তাও ফুটে উঠেছে এই লেখনীতে। বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য শুরুতেই লিখেছেন, “বামফ্রন্ট সরকারের সময় থেকেই যে অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ভাবনা আমরা রাজ্যের মানুষকে বলার চেষ্টা করেছি তা হলাে কৃষি আমাদের ভিত, শিল্প আমাদের ভবিষ্যত। আমরা সেই পথ ধরেই এগিয়েছি।”

এর পরেই তার লেখনীতে দুঃখ প্রকাশ ধরা পড়েছে। লিখেছেন, “দুর্ভাগ্যবশত বর্তমান সরকারের হাতে গত দশ বছরে সেই কৃষিতে আমরা পিছিয়ে পড়েছি। উল্লেখযোগ্য কোন শিল্প আসেনি গত একদশকে। নন্দীগ্রাম ও সিঙ্গুরে এখন শশ্মানের নীরবতা। সেসময়ের কুটিল চিত্রনাট্যের চক্রান্তকারীরা আজ দুভাগে বিভক্ত হয়ে পরস্পরের বিরুদ্ধে কাদা ছোড়াছুড়ি করছে।”

বুদ্ধবাবু লিখেছেন, “কর্মসংস্থানের সুযােগ হারিয়েছেন বাংলার যুব সমাজ। সরকারি ক্ষেত্রে কোনাে নিয়ােগ নেই। বাংলার মেধা ও কর্মদক্ষতা যা আমাদের সম্পদ, তা আমাদের রাজ্য ছেড়ে ভিন রাজ্যে চলে যেতে বাধ্য হচ্ছে। গত এক দশকে পশ্চিমবঙ্গ সবদিক দিয়েই পিছিয়ে পড়ছে। যুকদের কাজের স্বপ্ন চুরমার হয়ে গেছে, শিক্ষাঙ্গন কলুষিত, স্বাস্থ্যপরিষেবা গরীব মানুষের নাগালের বাইরে, কার্যত ভেঙে পড়েছে।” এখানেই শেষ নয় এর পাশাপাশি বর্তমান তৃণমূল সরকার এবং বিজেপি সরকারের একাধিক প্রসঙ্গ তুলে ক্ষুরধার লেখনীর মধ্যে দিয়ে তাদের তুলোধোনা করেছেন।

[aaroporuntag]
প্রসঙ্গত, ১৪ বছর আগে ২০০৭ সালের ১৪ মার্চ নন্দীগ্রামে গুলিচালনার ঘটনায় যে ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছিল তার পরিপ্রেক্ষিতে তৎকালীন বিরোধী নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সে সময় বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের নেতৃত্বে বাম সরকারের উপর সমস্ত দোষ চাপিয়ে ছিলেন। কিন্তু গত পরশু রেয়াপাড়ার সভা থেকে তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে এই গুলি চালনার ঘটনায় সব দোষ চাপাতে দেখা গেল তার মূল প্রতিদ্বন্দ্বী বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী এবং তার বাবা শিশির অধিকারীর উপর। আর এই মন্তব্যকে হাতিয়ার করেই মাঠে নামে বামফ্রন্ট এবং শেষমেষ কলম ধরলেন তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য।