Monsoon Update: এবছর বর্ষার আগমন হবে নির্ধারিত সময়ের আগেই! গরমের অস্বস্তিতে স্বস্তির খবর শোনালো আবহাওয়া দফতর

এপ্রিলের মধ্য সপ্তাহেই তাপমাত্রার পারদ যে হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে, তাতে করে সামনের মাসগুলির জন্য উদ্বেগ বাড়ছে দেশের মানুষের মধ্যে। ইতিমধ্যেই মৌসুম ভবন জানিয়েছেন, চলতি বছর অন্য বছরের তুলনায় তাপপ্রবাহের পরিস্থিতি বেশি দিন স্থায়ী হবে। আর এই আবহেই স্বস্তির খবর শোনালো আবহাওয়া দফতর। এবছর দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমী বায়ু দেশের বুকে প্রবেশ করতে পারে নির্ধারিত সময়ের তুলনায় কিছুটা আগেই এমনটাই জানান দিচ্ছে আবহাওয়া দফতর। একইসাথে স্বাভাবিকের তুলনায় অধিক বৃষ্টিপাতে দেশের বিভিন্ন জায়গা ভিজতে পারে বলে সম্ভাবনার খবর শুনিয়েছে ভারতীয় আবহাওয়া দফতর। চলতি বছর দেশে দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমী বায়ু অন্য বছরের তুলনায় কিছুদিন আগে প্রবেশ করতে পারে।

অন্যদিকে জুন মাস থেকে সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত বর্ষা কালে স্বাভাবিকের তুলনায় অধিক বৃষ্টিপাত হতে পারে এমনটাই ইঙ্গিত দিচ্ছে ভারতীয় আবহাওয়া দফতর। যার ফল স্বরূপ দেশের কৃষি, জলসম্পদ এবং সমগ্র আর্থিক কাজে তাৎপর্যপূর্ণ প্রভাব পড়তে পারে বলেই আশা করা হচ্ছে। আবহাওয়া দফতর যে অংক কষেছে তা থেকেই স্পষ্ট, ১৯৭১-২০২০ সালের বেশি দিন স্থায়ী গড় ৮৭ সেমি বৃষ্টিকে ভিত্তি করে এ বছরের বর্ষার বৃষ্টিপাত ১০৫% হতে পারে, যার সম্ভাব্য ত্রুটিমার্জনা ±৫%। অর্থাৎ, দেশের বেশিরভাগ এলাকাই স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি বৃষ্টিতে ভিজতে পারে।

আরও পড়ুন: ভিডিও কলে এক ট্রাভেল এজেন্ট অন্য ট্রাভেল এজেন্টকে শোনাচ্ছেন কাশ্মীরের বর্তমান পরিস্থিতি

পূর্বাভাস অনুযায়ী – ৩৩% সম্ভাবনা রয়েছে স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি বৃষ্টিপাতের, – ৩০% সম্ভাবনা স্বাভাবিক বৃষ্টিপাতের, – ২৬% সম্ভাবনা অতি বৃষ্টিপাতের। পাশাপাশি, মাত্র ২% সম্ভাবনা রয়েছে দুর্বল বৃষ্টিপাতের এবং ৯% সম্ভাবনা স্বাভাবিকের নীচে বৃষ্টিপাতের। আইএমডি এর মহাপরিচালক ডঃ এম মোহাপাত্র এর তরফে জানা গিয়েছে, “যেহেতু দুর্বল ও স্বল্প বৃষ্টিপাতের যৌথ সম্ভাবনা মাত্র ১১%, তাই প্রায় নিশ্চিতভাবে চলতি বছর দুর্বল বর্ষার সম্ভাবনাকে উড়িয়ে দেওয়া যেতে পারে।”

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রকের সচিব ডঃ এম রবিশঙ্করন জানিয়েছেন, দেশের বেশ কিছু জায়গা এই তালিকায় নেই যেমন লাদাখ, বিহার, তামিলনাড়ু এবং উত্তর-পূর্ব ভারত। এই জায়গা গুলি বাদে দেশের অধিকাংশ জায়গা বেশি বৃষ্টিপাতে ভিজতে পারে বলে সম্ভাবনার কথা জানানো হয়েছে। চলতি বছর বর্ষার ক্ষেত্রে বহু জলবায়ু বৈজ্ঞানিক ভাবে ইতিবাচক পরিস্থিতি তৈরি করেছে – ENSO (El Niño Southern Oscillation) নিরপেক্ষ অবস্থানে রয়েছে, এর অর্থ প্রশান্ত মহাসাগরের উপরিভাগের জল খুব গরম নয়, খুব ঠান্ডাও নয় যা বর্ষার পক্ষে বেশ ভাল লক্ষণ।

অপরদিকে, Indian Ocean Dipole (IOD) এরও নিরপেক্ষ থাকার সম্ভাবনা করা হচ্ছে যা ভারত মহাসাগরের পশ্চিম ও পূর্ব ভাগের তাপমাত্রার পার্থক্যকে চিহ্নিত করে। এটি বর্ষার স্বাভাবিক প্রবাহ বজায় রাখতে সাহায্য করে। রাজস্থানে তীব্র গরম এবং ধারাবাহিক হিটওয়েভ এর সতর্কতা‌ ঘোষণা করা হয়েছিল। ঝুনঝুনু, বিকানের, জয়সলমীর, জোধপুর, শ্রীগঙ্গানগরের এইসব জেলাগুলিতে ১৫-১৮ এপ্রিল পর্যন্ত তিনদিন ব্যাপী হলুদ এবং কমলা সতর্কতা জারি ছিল। এই গরম বর্ষার জন্য ইতিবাচক পরিস্থিতির আহ্বান জানায়, কারণ গরম যত বাড়বে, মৌসুমী বায়ুর টান ততই তীব্র হয়।

এবছর আবহাওয়া পরিস্থিতি যদি অনুকূল থাকে সেক্ষেত্রে বর্ষা ১২-১৫ জুনের মধ্যেই দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় প্রবেশ করতে পারে বলে পূর্বাভাস।দেশের অর্থনীতি কৃষির ওপরেই নির্ভরশীল। দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমী বায়ুর সময়ে দেশে ৭৫%-এর অধিক বার্ষিক বৃষ্টিপাত হয়। ধান, গম, ডালসহ নানান ফসল ফুলেফেপে ওঠা, জলাধার পুনরায় পূর্ন হওয়া, খনিজ ও বিদ্যুৎ উৎপাদনের উপর এই বর্ষা নির্ভরশীল। তাই স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি বৃষ্টিপাত হলে চলতি বছরের বর্ষাই হবে খাদ্য উৎপাদন সহ সমগ্র অর্থনীতির ভরসা।