Rail News: ঝড়ের গতিতে ছুটবে ট্রেন! এবার পুরুলিয়া-কোটশিলা ডবল লাইন

সময়ের পরিবর্তনের সাথে সাথে ভারতীয় রেল ব্যবস্থার দ্রুত উন্নতিকরণ ঘটতে দেখা যাচ্ছে। বাদ যায়নি রেল লাইন সম্প্রসারণের কাজও। আর এবার আরও এক কাজ সমাপ্ত হল। গোটা তিনদিনের প্রি নন ইন্টারলকিং এবং নন ইন্টারলকিং কাজের পরে শেষমেশ জুড়ে গিয়েছে পুরুলিয়া-কোটশিলা ডবল লাইনটি। আর মাত্র কয়েক দিনের অপেক্ষা। আর তারপরেই ৩৭ কিমি ডবল লাইনে ট্রেন স্বাভাবিকভাবে তার যাত্রা শুরু করবে। যাত্রীদের জন্য রয়েছে আরও এক সুখবর। যাত্রীদের উপহার দিতে নতুন দুটি প্ল্যাটফর্ম গড়ে উঠছে পুরুলিয়া স্টেশনে। ৬১৫ মিটার দীর্ঘ এই নতুন দুটি প্ল্যাটফর্মে স্টপ দিতে পারবে এক্সপ্রেস ট্রেন। পুরুলিয়া-কোটশিলা ডবল লাইন জুড়ে যাওয়ার ফলে টাটা, বোকারো, ধানবাদের সঙ্গে কলকাতার যোগাযোগ ব্যবস্থা আরও উন্নততর হবে বলে মনে করা হচ্ছে।

মূলত এই রেলপথ ঝাড়খণ্ডের জামশেদপুরের সঙ্গে বোকারো-ধানবাদ শিল্পাঞ্চলের সংযোগ অত্যন্ত দ্রুত করতে পারে। অন্যদিকে ব্যস্ততম রেল স্টেশন হাওড়ার সঙ্গে রাঁচির সংযোগও রেলের এই শাখার মাধ্যমে সর্বদাই দ্রুত হওয়া সম্ভব। আবার দেখতে গেলে সমানভাবে রাঁচির সঙ্গে পুরুলিয়া হয়ে আসানসোল, দুর্গাপুর বাদেও উত্তরবঙ্গের সঙ্গে সংযোগের অন্যতম দ্রুত পথ কিন্তু এটি। ইতিমধ্যেই রাঁচি-পুরুলিয়া- হাওড়া বন্দে ভারত সমেত রাঁচি-পুরুলিয়া-হাওড়া ইন্টারসিটি এক্সপ্রেস রোজ এই রুটে চলাচল করে। এছাড়াও চলাচল করে অসংখ্য পণ্যবাহী গাড়ি।

আরও পড়ুন: Sadhguru: ফুলেফেঁপে উঠবে ধনসম্পদ! রোজ নিয়মিত এই সময়ের মধ্যে ঘুম থেকে উঠুন! কী বলছেন সদগুরু?

ডবল লাইনের অনুমোদন পাওয়ার পর ২০২১ সাল থেকে নির্মাণকাজ হাতে নেয় কর্তৃপক্ষ।ধীর গতিতে কাজ চলতে থাকে। যদিও গত বছর থেকে কাজ দ্রুততার সঙ্গে চালাচ্ছিল তারা। শেষমেশ সুখবর এসে কড়া নাড়লো দরজায়। গত শনিবার নতুন ডবল লাইন পুরুলিয়া স্টেশনের ইয়ার্ডের কাছে সংযুক্ত করা হয়। সেদিন পুরুলিয়া স্টেশনে নন ইন্টারলকিং ছিল। রেল সূত্রে খবর, লাইন সংযুক্তিকরণ বাদেও, ডবল লাইনে ট্রেন নিয়ে যাওয়ার জন্য সিগন্যালিংয়ের প্রয়োজনীয় কাজও সমাপ্ত হয়েছে। ওভারহেড তারও জুড়তে হয়েছে।

এই রুটের কথা স্মরণ করে পুরুলিয়ার বাসিন্দা তথা দক্ষিণ-পূর্ব রেলের অবসরপ্রাপ্ত স্টেশন ম্যানেজার অচিন্ত্যময় বন্দ্যোপাধ্যায় এর তরফে জানানো হয়েছে, প্রথমদিকে পুরুলিয়া-কোটশিলা ন্যারোগেজ ছিল। ১৯০৭ সাল নাগাদ পুরুলিয়া থেকে রাঁচি ন্যারোগেজ রেলপথ স্থাপন করা হয়। পরবর্তী সময়ে বোকারো-কোটশিলা থেকে রাঁচি ব্রডগেজ হয়ে গেলেও এই রেলপথ ন্যারোগেজই রয়ে গিয়েছিল। অবশ্য ১৯৯২ সালের দিকে দীর্ঘ সময়ব্যাপী আন্দোলনের শেষে এটি ব্রডগেজে পরিণত হয়।

এই রুটে ট্রেনের ব্যাপক চাহিদা থাকলেও সিঙ্গল লাইনের জন্য এই রুটে ট্রেন সংখ্যা বাড়ানোর কোনো উপায় ছিল না। তবে এবার আর চিন্তা নেই। অবসান হয়েছে সেই অপেক্ষার। দক্ষিণ–পূর্ব রেলওয়ে ইউজার্স অর্গানাইজেশনের সহ সম্পাদক দেবু চক্রবর্তীর কথায়, ‘রেলের পরিকাঠামো বাড়ানোর অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ। তিনি আশাবাদী আদ্রা ডিভিশন গুডস ট্রেনের সঙ্গে যাত্রীবাহী ট্রেন বাড়ানোর দিকেও সমান গুরুত্ব দেবে। যদিও রেল পরিষেবার দিক থেকে পুরুলিয়া, বাঁকুড়ার মতো জেলাগুলি এখনও ভীষণভাবে পিছিয়ে রয়েছে।’ আদ্রার ডিআরএম সুমিত নারুলার কথায়, ‘মার্চ মাসের শেষের দিকেই সিআর ইনস্পেকশন করা হতে পারে। তারই চেষ্টা চলছে। পুরুলিয়ায় নতুন প্ল্যাটফর্ম এর পাশাপাশি ইয়ার্ডের কাজও কিছু মাসের মধ্যে সমাপ্ত হবে। এতে সঠিক সময়ে ট্রেন চলাচলেরও উন্নতি হবে।’