যা ভাবেননি তার থেকেও বেশি কারনামা করে দেখিয়েছে চন্দ্রযান-৩, এতদিনে সামনে আনলো ইসরো

নিজস্ব প্রতিবেদন : পৃথিবী থেকে পাড়ি দেওয়ার পর চাঁদের মাটিতে ২৩ আগস্ট চন্দ্রযান-৩ (Chandrayaan 3) এর ল্যান্ডার বিক্রম (Lander Vikram) অবতরণ করে। অবতরণের পর রোভার প্রজ্ঞান (Rover Pragyan) এবং বিক্রম দুজনে একের পর এক পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালায়। সেই সকল পরীক্ষা-নিরীক্ষা থেকে যা তথ্য উঠে আসে সব ইসরোকে (ISRO) প্রেরণ করে তারা চাঁদের মাটিতে অন্ধকার নামলে স্লিপ মোডে চলে যায়।

পরবর্তীতে তাদের জেগে ওঠা নিয়ে ইসরোর বিজ্ঞানীদের পাশাপাশি আপামর ভারতবাসীরা অনেক আশায় ছিলেন। কিন্তু তা সফল না হওয়ায় অনেকেই আশাহত হন। তবে তাদের জেগে ওঠার ক্ষেত্রে যে বিফলতা আসে তা নিয়ে একেবারেই চিন্তিত নন ইসরোর বিজ্ঞানীরা। কেননা যে পরিকল্পনা নিয়ে চাঁদের মাটিতে তাদের পাঠানো হয়েছিল তার থেকেও বেশি কাজ বিক্রম এবং প্রজ্ঞান সেরে ফেলেছে। এমনকি তারা এমন এক কারনামা দেখিয়েছে যা একেবারেই অপরিকল্পিত ছিল এবং সেই কারনামার ফলে আগামী দিনে কি কি পরিকল্পনা গ্রহণ করা যেতে পারে সেই সম্পর্কে অবশেষে ইসরোর তরফ থেকে সোশ্যাল মিডিয়ায় জানানো হয়েছে।

৩ অক্টোবর এই বিষয়ে মুখ খুলেছেন ইসরোর চিফ এস সোমনাথ। তিনি মূলত আগামী দিনে কি পরিকল্পনা রয়েছে তা নিয়ে জানিয়েছেন। এই পরিকল্পনা হলো আগামী দিনে চন্দ্রপৃষ্ঠ থেকে নমুনা সংগ্রহ করে পৃথিবীতে ফেরত আনা। ইসরো এই যে পরিকল্পনা গ্রহণ করছে তা সত্যিই কঠিন চ্যালেঞ্জ। তবে এই কঠিন চ্যালেঞ্জ নেওয়ার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় ভূমিকা পালন করেছে চন্দ্রযান-৩ এর ল্যান্ডার বিক্রম। তার অপরিকল্পিত কারনামার জন্যই ইসরো আজ এমন পরিকল্পনা গ্রহণ করতে সাহস পাচ্ছে।

কি এমন দেখিয়েছে ল্যান্ডার বিক্রম আর যার জন্য আজ ইসরো এত বড় চ্যালেঞ্জ নিতে প্রস্তুত? এই বিষয়টি সামনে এনেছেন চন্দ্রযান-৩ এর প্রজেক্ট ডিরেক্টর পি ভিরামুথুভেল। তিনি জানিয়েছেন, অপরিকল্পিত যে কারনামার কথা বলা হচ্ছে তা হল ল্যান্ডার বিক্রমের হপ এক্সপেরিমেন্ট। এই কাজ করে মিশনের থেকেও বড় গুরুত্বপূর্ণ কাজ করে ফেলেছে বিক্রম। আর এই এক্সপেরিমেন্ট সফল হওয়ার কারণেই ইসরো চাঁদ থেকে নমুনা সংগ্রহ করে পৃথিবীতে আনার পরিকল্পনা গ্রহণ করছে।

হপ এক্সপেরিমেন্ট হলো ল্যান্ডারের সঙ্গে থাকা ইঞ্জিনকে পুনরায় চালু করা এবং তারপর ল্যান্ডারকে পুনরায় ৪০ সেন্টিমিটার উঁচুতে ওড়ানো এবং লাফ দিয়ে আগের অবস্থান থেকে ৩০ থেকে ৪০ সেন্টিমিটার দূরে পুনরায় ল্যান্ডিং করা। এই পরীক্ষায় বিক্রম সফল হওয়ার ফলে চাঁদে পাঠানো মহাকাশযান পুনরায় চালু করে পৃথিবীতে ফিরিয়ে আনার স্বপ্ন দেখছে ইসরো এবং সেই রকমই পরিকল্পনা গ্রহণ করছে।