ব্ল্যাক ফাঙ্গাসকে মহামারি ঘোষণা করলো রাজ্য, মানতে হবে বিধিনিষেধ

নিজস্ব প্রতিবেদন : কথায় আছে একে রামে রক্ষা নেই আবার সুগ্রীব দোসর। ঠিক তেমনি অবস্থা হয়েছে আমাদের দেশের। করোনা পরিস্থিতিতে দেশ তথা রাজ্যের যখন ভয়াবহ অবস্থা তখনই আচমকা আরেকটি রোগ আছড়ে পড়লো। করোনা ভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউয়ে রাজ্যের জেরবার অবস্থার মধ্যেই মিউকরমাইকোসিস রোগের সন্ধান পাওয়া গিয়েছিল।

দেশের প্রতিটি রাজ্যেই এই রোগ অল্প অল্প করে থাবা বসাতে শুরু করেছে, পশ্চিমবঙ্গও তার ব্যতিক্রম নয়। ইতিমধ্যেই রাজ্যের কয়েকটি জেলায় মিউকরমাইকোসিস রোগে আক্রান্ত কতগুলি রোগীর সন্ধান মিলেছে। হরিদেবপুরে এক মহিলার এই রোগের কারণে মৃত্যু অবধি হয়েছে।

ভারতের মধ্যে রাজস্থানেই প্রথম মিউকরমাইকোসিসকে মহামারী হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছিল। তারপর অন্ধপ্রদেশ, পাঞ্জাব সহ কতগুলি রাজ্য এই রোগকে মহামারী হিসেবে চিহ্নিত করে। রাজস্থান, অন্ধ্রপ্রদেশের পথে হেঁটে এবার রাজ্য‌ও এই রোগকে মহামারী হিসেবে চিহ্নিত করলো।

গত ১ লা মে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক থেকে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করে মিউকরমাইকোসিসকে মহামারী আইনের অন্তর্ভুক্ত করা হয়। সেই সময় অন্যান্য রাজ্যগুলিও যাতে এই রোগটিকে মহামারী হিসেবে চিহ্নিত করে তার পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল কেন্দ্র সরকারের তরফ থেকে। সম্প্রতি কেন্দ্রের সেই সুপারিশ মেনেই করোনার পর এবার মিউকরমাইকোসিসকেও ‘নোটিফায়েবল ডিজিজ’ বলে মহামারী আইনের অন্তর্ভুক্ত করল রাজ্য প্রশাসন। এই প্রসঙ্গে রাজ্যের স্বাস্থ্য দপ্তরের প্রধান সচিব নারায়ন স্বরূপ নিগম একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করেছেন।

রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তরের তরফ থেকে প্রকাশিত সেই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে যে, “কলকাতা সহ রাজ্যের যে কোন জেলায় মিউকর মাইকোসিস রোগে আক্রান্ত কোন রোগীর খোঁজ পাওয়ার সাথে সাথেই জেলা স্বাস্থ্য আধিকারিক বা প্রশাসনের সামনে পুরো বিষয়টি আনতে হবে। বাধ্যতামূলকভাবে সব সরকারী ও বেসরকারী হাসপাতালের চিকিৎসককে এই নিয়ম মানতে হবে। যে এলাকায় রোগীর খোঁজ পাওয়া গিয়েছে তা যেমন জেলা স্বাস্থ্য আধিকারিককে জানাতে হবে তেমনি রোগীর পরিচয় এবং রোগীর উপর কী ধরনের চিকিৎসা করা হচ্ছে তাও জানাতে হবে।”

এখন‌ও পর্যন্ত রাজ্যে এই রোগে আক্রান্তের সংখ্যা হিসেবে ১৫ জনের কথা বলা হয়েছে এবং হরিদেবপুরের মহিলার মৃত্যুর কথা উল্লেখের পাশাপাশি এই মহামারী আটকাতে কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে তার কথাও উল্লেখ আছে ওই বিজ্ঞপ্তিতে।

[aaroporuntag]
ইতিমধ্যেই এই রোগ প্রতিরোধ করার জন্য বিশেষজ্ঞ কমিটি গড়ে তোলা হয়েছে। এছাড়া এসএসকেএম, উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ সহ কয়েকটি সরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এই রোগ নির্ণয় করার চিকিৎসা ও গবেষণার জন্য উৎকর্ষ কেন্দ্র গড়ে তোলা হবে বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে।